জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে পর্যন্ত বাহরিনকে আটকে রেখেও শেষরক্ষা করতে পারল না ভারত (India vs Bahrain Match)। ৮৮ মিনিট পর্যন্ত ১-১ রাখার পরে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে বাহরিনের কাছে হারতে হল সন্দেশ ঝিঙ্গনদের। ভারতীয় সিনিয়র দলের চলতি বাহরিন সফরে জোড়া ফ্রেন্ডলির প্রথমটিতে তাদের ২-১ গোলে হারাল ফিফা ক্রমতালিকায় ৮৯ নম্বরে থাকা বাহরিন। বুধবার রাতে মানামার শেখ আলি বিন মোহামেদ স্টেডিয়ামে গুরপ্রীত সিং সান্ধুর পেনাল্টি সেভ এবং রাহুল ভেকে প্রথম আন্তর্জাতিক গোল পাওয়া সত্ত্বেও দলের সাফল্য এল না। ৩৭ মিনিটে গোল করে বাহরিনকে এগিয়ে দেন মোহামেদ আল হারদান। ৫৯ মিনিটে সেই গোল শোধ করেন ভারতের সিনিয়র ডিফেন্ডার রাহুল ভেকে। কিন্তু ৮৮ মিনিটের মাথায় মাহদি আল হামেইদানের গোলে জয় ছিনিয়ে নেয় বাহরিন।
এই ম্যাচে পাঁচ ভারতীয় ফুটবলার জাতীয় দলের জার্সিতে প্রথম খেলেন। প্রথম এগারোয় ছিলেন দানিশ ফারুক ও ভিপি সুহের। দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্ত হিসেবে নামেন নাওরেম রোশন সিং, অনিকেত যাদব ও আনোয়ার আলি। বাংলার চার ফুটবলারকেই এ দিন প্রথম এগারোয় রাখেন ভারতীয় দলের কোচ ইগর স্টিমাচ।
এ দিন শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে বাহরিন। ছ’মিনিটের মধ্যেই পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যায় তারা। বক্সের মধ্যে সন্দেশ ঝিঙ্গন হ্যান্ডবল করায় এই পেনাল্টি পায় তারা। কিন্তু তাদের সেই সুযোগ হাতছাড়া হয় ভারতীয় গোলকিপার ও অধিনায়ক গুরপ্রীত সিং সান্ধুর তৎপরতায়। মাহদির স্পট কিক বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকে দেন গুরপ্রীত।
তবে হিলিও সুসার দল তাতে বিন্দুমাত্র দমেনি, বরং তাদের আক্রমণের ধার আরও বাড়ে। মাহরুনের শট বারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বল বারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দেন হামেইদান। এই ঘটনার পরেই ভারতীয় দল এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলেও মনবীর সিংয়ের ব্যর্থতায় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। রহিম আলির ক্রস মনবীর গোলের সামনে থেকে হেড করলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
২৯ মিনিটের মাথায় ভারত প্রথম কর্নার পায়। সন্দেশের লং বল পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে ওঠা লিস্টন কোলাসো বিপক্ষের বক্সে একটি ক্রস দেন, যা ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভারতকে একটি কর্নার উপহার দেয় বাহরিন। যদিও সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ভারত। দু’মিনিট পরে বিপক্ষের অর্ধে ফ্রিকিক পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
বাহরিনের দাপট অবশ্য তাতে বিন্দুমাত্র কমেনি। সমানে গোল পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায় এবং ৩৭ মিনিটের মাথায় হারদানের গোলে এগিয়ে যায় তারা। মাহরুনের হাওয়ায় ভাসানো ক্রসে ভলি মেরে গোল করেন হারদান। দ্বিতীয়ার্ধে লিস্টন কোলাসোর জায়গায় নবাগত রোশন সিংকে আনেন কোচ স্টিমাচ। মাঠে নেমে প্রথম টাচেই গোলের সুযোগ পেয়ে যান রোশন। তবে রহিমের ক্রসে হাফ ভলি মারলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫৬ মিনিটের মাথায় অনিরুদ্ধ থাপা নামেন সুহেরের জায়গায়।
তিনি নামার পরেই যে কর্নার পায় ভারত, তা থেকেই গোল করে সমতা আনেন রাহুল ভেকে। রোশনের কর্নার গোলকিপারের নাগালে না থাকায় তা থেকে হেড করে বল জালে জড়িয়ে দিতে অসুবিধা হয়নি রাহুলের। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এই প্রথম গোল তাঁর।
সমতা আনার পর ভারতের খেলায় গতি বাড়ে। তবে ব্যবধান বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে বাহরিন, যা সামলাতে কার্যত হিমশিম খেয়ে যান ভারতীয়রা। ৬৫ মিনিটের মাথায় কাউন্টার অ্যাটাকে বাঁ দিকের উইং থেকে বিপক্ষের ৬ গজ বক্সের মধ্যে একটি মাপা ক্রস পেয়ে যান হামেইদান। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
৭৯ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন করেন স্টিমাচ। ইয়াসির মহম্মদ ও অনিকেত যাদবকে নামান দানিশ ও রহিমের জায়গায়। বিপক্ষকে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে ভারত। ফিফা ক্রম তালিকায় ৮৯ নম্বরে থাকা দলের বিরুদ্ধে ড্র করতে পারলেও সেটা উৎসাহব্যঞ্জক হত, এই আশায়। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি প্রীতম কোটালরা। ডান দিক থেকে উড়ে আসা কামিল আল আসওয়াদের ক্রস থেকে গোল করে পেনাল্টির সুযোগ নষ্টের প্রায়শ্চিত্ত করেন হামেইদান। ওই সময় সম্পুর্ণ অরক্ষিত ছিলেন তিনি।
আগামী শনিবার ভারতের পরবর্তী ফ্রেন্ডলি ম্যাচ বেলারুশের বিরুদ্ধে। দশ বছর পরে কোনও উয়েফা সদস্য দেশের বিরুদ্ধে মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছে ভারত। ২০১২-র ফেব্রুয়ারিতে শেষবার ভারতীয় দল উয়েফা সদস্য দেশ আজারবাইজানের বিরুদ্ধে খেলেছিল। সেই ম্যাচে আজারবাইজান ৩-০-য় জিতেছিল। ফিফা ক্রমতালিকায় বেলারুশ রয়েছে ৯৪ নম্বরে।
ভারতীয় দল: গুরপ্রীত সিং সান্ধু (গোল) (অধি), প্রীতম কোটাল (আনোয়ার আলি), রাহুল ভেকে, সন্দেশ ঝিঙ্গন, শুভাশিস বোস, মনবীর সিং, দানিশ ফারুক (ইয়াসির মহম্মদ), প্রণয় হালদার, ভিপি সুহের (অনিরুদ্ধ থাপা), লিস্টন কোলাসো (রোশন সিং), রহিম আলি (অনিকেত যাদব)।
(তথ্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)