জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বিরতিতে গোলশূন্য থাকলেও বিরতির পরে বেলারুশের কাছে তিন গোল খেল ভারত (India vs Belarus Match)। শনিবার রাতে বাহরিনের মানামায় ফ্রেন্ডলি ম্যাচে এই তিন গোলেই হারতে হল তাদের। দ্বিতীয়ার্ধে এই গোলগুলি করেন বিকাউ আর্স্টেম, আন্দ্রেই সালাভ ও হ্রামিকা ভারেলি। এই বাহরিন সফরের প্রথম ম্যাচে ৮৮ মিনিট পর্যন্ত ১-১ থাকার পরে ম্যাচের শেষ মুহূর্তের গোলে আয়োজক দেশ বাহরিনের কাছে ১-২-এ হেরেছিল ভারত। এ বার দ্বিতীয় ম্যাচেও ০-৩ হার তাদের আত্মবিশ্বাসে কী রকম প্রভাব ফেলবে, সেটাই প্রশ্ন।
দশ বছর পরে এ দিন কোনও উয়েফা সদস্য দেশের বিরুদ্ধে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিল ভারত। ২০১২-র ফেব্রুয়ারিতে শেষবার ভারতীয় দল উয়েফা সদস্য দেশ আজারবাইজানের বিরুদ্ধে খেলেছিল। সেই ম্যাচে আজারবাইজান ৩-০-য় জিতেছিল। এ দিনও ফিফা ক্রমতালিকায় ৯৪ নম্বরে থাকা বেলারুশের কাছে একই ব্যবধানে হারতে হল তাদের।
গত ম্যাচের দলে সাতটি পরিবর্তন করে এ দিন প্রথম এগারো নামান ভারতীয় দলের হেড কোচ ও ক্রোয়েশিয়ার প্রাক্তন বিশ্বকাপার ইগর স্টিমাচ। লিস্টন কোলাসো ও জিকসন সিংয়ের চোট এবং ক্লাবের (মুম্বই সিটি এফসি) হয়ে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রস্তুতিতে যোগ দিতে রাহুল ভেকে শিবির ছেড়ে চলে যাওয়ায় কিছুটা সমস্যায় পড়েন স্টিমাচ।
শুরু থেকেই বেলারুশ ঘন ঘন আক্রমণে উঠলেও ভারতের সঙ্ঘবদ্ধ ও গোছানো রক্ষণে বারবার আটকে যায় তারা। সাত মিনিটের মাথায় সিয়াজকো পাভেল ভারতের বক্সের বাইরে থেকে গোলে মাপা ফ্রি কিক নিলেও তা দুর্দান্ত ভাবে রুখে দেন ৫০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু।
ভারতীয় দল অবশ্য নিজেদের এলাকায় গুটিয়ে বসে থাকেনি। ১১ মিনিটের মাথায় অনিরুদ্ধ থাপা বিপক্ষের বক্সে মনবীর সিংয়ের উদ্দেশ্যে একটি এরিয়াল বল পাঠালেও রক্ষণের তৎপরতায় তার নাগাল পাননি এটিকে মোহনবাগানের স্ট্রাইকার। সারা অর্ধে বেলারুশের ফুটবলাররা জায়গা তৈরি করে নিয়ে আক্রমণের চেষ্টা করলেও তাঁদের সফল হতে দেননি ভারতীয় ফুটবলাররা।
লিস্টন কোলাসোর অভাব এ দিন ভাল মতোই টের পায় ভারতীয় দল। আক্রমণে কার্যত একা পড়ে যান মনবীর এবং বিপক্ষের চাপে বারবার ব্যর্থ হন তিনি। ৩৯ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে তাঁর মার্কারকে পিছনে ফেলে মাঝখান দিয়ে বিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন মনবীর। কিন্তু এ বারেও রক্ষণের পরের স্তরে গিয়ে আটকে যান তিনি। প্রথমার্ধের শেষ পাঁচ মিনিটের মধ্যে বেলারুশ একটি কর্নার ও একটি ফ্রি কিক পেলেও সেই সুযোগগুলি কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সেরিটন ফার্নান্ডেজের জায়গায় ইয়াসির মহম্মদকে নামান স্টিমাচ। কিন্তু তাতে বিশেষ কোনও লাভ হয়নি। ৪৭ মিনিটের মাথাতেই এগিয়ে যায় বেলারুশ। মাঝমাঠ থেকে আসা বল পেয়ে তা নিয়ে কিছুটা এগিয়ে সোজা গোলে জোরালো ভলি মারেন বিকাউ আর্স্টেম (১-০)।
এই গোল খাওয়ার পরে ৬০ মিনিটের মাথায় ভিপি সুহেরকে তুলে অনিকেত যাদবকে নামান কোচ। কিন্তু তার ছ’মিনিট পরেই ফের গোল খায় ভারত। গত ম্যাচে যিনি দলের একমাত্র গোলে অ্যাসিস্ট করেছিলেন, সেই রোশন সিং মাঝমাঠে বলের দখল হারন। সেই বল নিয়ে মাঝখান দিয়ে বিপক্ষের বক্সের দিকে এগোন ইবন ম্যাক্স। গোলের সামনে গিয়ে তাঁর ডানদিকে থাকা আন্দ্রেই সালাভিকে বল বাড়ালে তিনি গোলে বল ঠেলতে কোনও ভুল করেননি (২-০)।
৭৫ মিনিটের মাথায় সালাভি আরও একটি গোল হয়তো পেয়ে যেতেন, যদি না ঠিক সময়ে ইন্টারসেপ্ট করতেন সন্দেশ ঝিঙ্গন। এর জেরে কর্নার পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি বেলারুশ। এর পরে আরও গুরুত্বপূর্ণ দুটি ট্যাকল করেন সন্দেশ, যা তিনি না করলে হয়তো ভারত এ দিন আরও বেশি গোল খেত।
৮৩ মিনিটের মাথায় অনিরুদ্ধ থাপার ক্রস মনবীর ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে হয়তো ব্যবধান কমাতে পারতেন। কিন্তু এ বারেও তিনি অসফল হন। রোশনকে তুলে চিঙলেনসানা সিংকে নামান কোচ। আরও গোল যাতে না খেতে হয়, সে জন্যই হয়তো এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু তাঁর সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করে বেলারুশ। এ বার ইয়াব্লনস্কির পাস থেকে অনায়াসে গোল করে দেন হ্রামিকা ভারেলি। সতীর্থর পাসে এতটাই দ্রুত প্রতিক্রিয়া হয় ভারেলির যে, গুরপ্রীতের কিছু করারই ছিল না।
ভারতীয় দল: গুরপ্রীত সিং সান্ধু (গোল) (অধি), সেরিটন ফার্নান্ডেজ (ইয়াসির মহম্মদ), আনোয়ার আলি, সন্দেশ ঝিঙ্গন, আকাশ মিশ্র, হরমিপাম রুইভা (প্রীতম কোটাল), অনিরুদ্ধ থাপা, ভিপি সুহের (অনিকেত যাদব), ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ (দানিশ ফারুক), রোশন সিং (চিঙলেনসানা সিং), মনবীর সিং।
(তথ্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)