আইএসএল ২০২০-২১, এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম নর্থইস্ট ইউনাইটেড প্রিভিউ

আইএসএল ২০২০-২১, এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম নর্থইস্ট ইউনাইটেডঅনুশীলনে এসসি ইস্টবেঙ্গল। ছবি: এসসি ইস্টবেঙ্গলের টুইটার থেকে

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: আইএসএল ২০২০-২১, এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম নর্থইস্ট ইউনাইটেড ম্যাচে কি ঘুরে দাঁড়াবে ফাউলারের ছেলেরা? একেই যথেষ্ট প্রস্তুতি নেই, তার ওপর চোট সমস্যা। সব মিলিয়ে খুব একটা ভাল অবস্থায় নেই এসসি ইস্টবেঙ্গল। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে এখন কী কী করতে হবে, সেটাই ভাবতে হচ্ছে দলের ব্রিটিশ কোচ রবি ফাউলারকে। অন্য দিকে, তিন ম্যাচে অপরাজিত নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি জায়গা করে নিয়েছে লিগ টেবলে প্রথম চারের মধ্যে। মুম্বই সিটি এফসি-কে প্রথম ম্যাচে হারানোর পরে কেরালা ব্লাস্টার্স ও এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ড্র করেছে তারা। শনিবার তিলক ময়দান স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ এসসি ইস্টবেঙ্গলের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এই ম্যাচে জয়ে ফিরে আসতে নিশ্চয়ই মরিয়া হয়ে উঠবে তারা।

প্রথম দুই ম্যাচে পাঁচ গোল খাওয়ার পর সময় চেয়েছেন রবি ফাউলার। দু’টি ম্যাচ খেলা হয়ে গেলেও কোনও ইতিবাচক ফল পাননি তিনি। দলকে জয়ের রাস্তায় নিয়ে আসতে তিনি বদ্ধপরিকর ঠিকই। কিন্তু কী ভাবে নিয়ে আসবেন, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

চোট-আঘাতের সমস্যা, প্রস্তুতির অভাব

চলতি হিরো আইএসএলে এটিকে মোহনবাগানের কাছে দুই ও মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে তিন গোল খেয়েছে রবি ফাউলারের দল। দলের সহকারী কোচ টনি গ্রান্ট ক্লাবের ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন, বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের চোট ও ফিটনেস সমস্যা নিয়ে তাঁরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। প্রথম ম্যাচে তরুণ মিডফিল্ডার লোকেন মেতেই চোট পেয়েছেন। কত দিনে মাঠে ফিরতে পারবেন জানেন না। এ ছাড়াও বিদেশি মিডফিল্ডার অ্যারন আমাদি হলোওয়েও অনুশীলনের সময় গোড়ালিতে চোট পান। তিনিও মাঠে নামার মতো অবস্থায় নেই। গত ম্যাচে চোট পেলেন ডিফেন্ডার ও অধিনায়ক ড্যানিয়েল ফক্স। তিনি কতগুলি ম্যাচ খেলতে পারবেন না, তাও এখন জানা নেই। এ ছাড়াও শিবিরের খবর, সিনিয়র ভারতীয় তারকা স্ট্রাইকার জেজে লালপেখলুয়া ৯০ মিনিট খেলার মতো অবস্থায় নেই। তাই দল গড়তে রীতিমতো হিমশিম খেতে হবে ফাউলারকে।

ফাউলারের হাতে অবশ্য এমন কয়েকজন ফুটবলার রয়েছেন, যাঁরা ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখেন। প্রথম ম্যাচে সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন গত পাঁচ মরশুম ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলে আসা কঙ্গোর তারকা মিডফিল্ডার জাক মাঘোমা এবং আইরিশ মিডফিল্ডার অ্যান্থনি পিলকিংটন। কিন্তু সতীর্থদের কাছ থেকে ঠিকমতো সহায়তা না পাওয়ায় এঁদের কেউই কার্যকরী হয়ে উঠতে পারছেন না। দলকে যতটুকু আশার আলো দেখাচ্ছেন, এঁরা দু’জনই। গোলের সুযোগ তৈরি করা থেকে গোলে শট নেওয়ার ক্ষেত্রে এই দু’জনকে তৎপর হতে দেখা যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু গত দুই ম্যাচেই বিপক্ষের দুর্ভেদ্য ডিফেন্সের দেওয়াল ভাঙতে পারেননি। মাঝমাঠ ও রক্ষণের সমর্থন না পেলে তা সহজও নয়।

লাল-হলুদ কোচ খুশি নন দলের ভারতীয় ফুটবলারদের অবস্থা দেখে। তাঁদের আরও ভাল ভাবে তৈরি করতে চান তিনি। তবে রিজার্ভ বেঞ্চে সিকে বিনীত, জেজে-দের মতো অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ডদের বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। জেজে পুরো ৯০ মিনিট খেলার মতো অবস্থায় না থাকলেও অন্তত ৫০-৫৫ মিনিটের জন্য তাঁকে নামানো যেতে পারে কি না, সেই চিন্তা করতে হবে কোচকে। সুরচন্দ্র, লুয়াং, মিতেই-দের মতো অনভিজ্ঞদের ওপর কোচ বেশি ভরসা করে ঠিক করছেন কি না, প্রশ্ন উঠছে সেই নিয়েও।

তারুণ্যে টগবগে নাস-বাহিনীর চ্যালেঞ্জ 

গতবার লিগ টেবলের নয় নম্বরে থাকা নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি এ বার তারুণ্যের ওপর ভর করেই এগিয়ে চলেছে। তাদের স্প্যানিশ কোচ জেরার নাস ও অধিনায়ক লালেংমাউইয়া— দু’জনেই হিরো আইএসএলে সর্বকনিষ্ঠ। ফাউলার যখন তাঁর দলের ভারতীয় ফুটবলারদের নিয়ে খুশি নন, তখন নাস গোয়ার বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করার পরে যথেষ্ট গর্বের সঙ্গেই বলেন, “আমার দলের প্রতিভাবান ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য আমি গর্বিত। আমাদের অধিনায়ককেই দেখুন। ও যুব ভারতীয় দলের হয়ে খেলেছে। আমি নিশ্চিত, সিনিয়র দলেও ও ডাক পাবে। ওর ওপর আমার যথেষ্ট আস্থা রয়েছে এবং সে জন্যই ওকে নেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছি”।

গতবার ভাল ফল না হওয়ায় এ বার অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার আশুতোষ মেহতা ও গুরজিন্দর কুমারকে নিয়ে আসে ক্লাব ম্যানেজমেন্ট। রয়েছেন অভিজ্ঞ বেলজিয়ান ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন লাম্বোট ও অস্ট্রেলিয়ান তরুণ ডিলান ফক্স। উরুগুয়ান মিডফিল্ডার ফেদরিকো গালেগোর চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি এই দলের আর একটা প্লাস পয়েন্ট। ২০১৮-১৯-এ তিনি দলকে সেরা চারে উঠতে সাহায্য করেছিলেন। এ বারেও সেই পারফরম্যান্সের ইঙ্গিত দিচ্ছেন তিনি। নবাগত ফরাসি মিডফিল্ডার খাসা কামারার সঙ্গ পাওয়ায় তিনি এ বার ভাল খেলবেন বলে মনে করা হচ্ছে। মূলত গ্রিক লিগে খেলে আসা এই মিডফিল্ডার এসে যাওয়ায় লালেংমাউইয়াকে অনেক আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে।

আক্রমণ বিভাগে তিনি সাহায্য করছেন গিনির ইদ্রিসা সিলা, পর্তুগীজ লুই মাচাডো ও ঘানাইয়ান কোয়েসি আপাইয়াকে। গত মরশুমে মোহনবাগানে খেলা ব্রিটো ও সুহেরও এই দলে রয়েছে। ব্রিটো নিয়মিত খেললেও সুহের এখন পর্যন্ত বাইরেই বসে আছেন।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

(খেলার জগতের আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)