জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: নিজামের শহর থেকেও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে এটিকে মোহনবাগানকে। মঙ্গলবার গতবারের চ্যাম্পিয়ন হায়দরাবাদ এফসি ঘরের মাঠে তাদের ১-০ গোলে হারিয়ে দু’নম্বরে থাকা নিশ্চিত করে ফেলল। অর্থাৎ তারা সরাসরি সেমিফাইনালে খেলবে। প্রথম দু’টি জায়গা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পরে এ বার বাকি চারটি জায়গার জন্য লড়াই আরও কঠিন হয়ে গেল। এই ম্যাচ হেরে সেরা ছয়ে থাকার দৌঁড়ে নিজেদের অবস্থান আরও কঠিন করে ফেলল সবুজ-মেরুন বাহিনী। এই নিয়ে টানা তিনটি ম্যাচ জয়হীন থাকল তারা।
এ দিন ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ গোলশূন্য থাকার পর ৭৯তম মিনিটে মাঠে নামা নাইজেরীয় তারকা বার্থোলোমিউ ওগবেচের দূরপাল্লার শটের গোলে জয় ছিনিয়ে নেয় হায়দরাবাদ এফসি। ১৮ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট পেয়ে দুই নম্বর জায়গাটা পাকা করে ফেলে তারা। এই মরসুমে আর কোনও দল এই সংখ্যাটা ছুঁতে পারবে না। বাকি চারটি জায়গার জন্য দাবিদার পাঁচটি দল।
পরের দুই ম্যাচে কেরালা ব্লাস্টার্স ও ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে হারাতে না পারলে প্রথম ছয়ে থাকা বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে সবুজ-মেরুন শিবিরের পক্ষে। এ দিন হুগো বুমৌস, কার্ল ম্যাকহিউ ও শুভাশিস বোসের অনুপস্থিতিই কাল হয়ে দাঁড়ায় এটিকে মোহনবাগানের। মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসোদের সুযোগ নষ্টের প্রদর্শনী এদিনও দেখা গিয়েছে।
বুমৌসের সঙ্গে ম্যাকহিউ এটিকে মোহনবাগানের চোট-তালিকায় যোগ দেওয়ায় এ দিন দুই নবনিযুক্ত বিদেশি ফেদরিকো গায়েগো ও স্লাভকো দামিয়ানোভিচকে একসঙ্গে খেলতে দেখা যায়। কার্ড সমস্যায় শুভাশিস বোসও এ দিন খেলতে পারেননি। ফলে তিন ব্যাকে খেলা শুরু করে এটিকে মোহনবাগান। হায়দরাবাদ এফসি-র মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তিন ডিফেন্ডারে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, শুরুর দিকে তারা হুল ফোটাতে দেয়নি হায়দরাবাদ এফসি-কে।
কোনও পক্ষের গোলকিপারকেই প্রথম ৪৫ মিনিটে তেমন কড়া পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি। কয়েকটি দূরপাল্লার শটে দু’পক্ষই গোলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। সেরা সুযোগটি পান মনবীর সিং, যখন তিনি পুইতিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ দিকের উইং দিয়ে ঢুকে বক্সের মাথা থেকে গোলে শট নেন। কিন্তু তা ক্রসবারের কয়েক ইঞ্চি ওপর দিয়ে উড়ে যায়। ৩৯ মিনিটের মাথায় ফ্রি কিকে বাঁ দিকের উইং থেকে বোরহা হেরেরা প্রায় গোল সাজিয়ে দেন সতীর্থদের। হায়দরাবাদের দুই ফুটবলার বক্সের মধ্যে তখন প্রায় অরক্ষিত। আকাশ মিশ্র তাতে হাল্কা মাথা ছোঁয়ান। কিন্তু তা ব্রেন্ডন হ্যামিলের গায়ে লেগে লাইনের বাইরে চলে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল হায়দরাবাদ এফসি। বিরতির পর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই গোটা দুয়েক শট গোলে রাখে তারা। চাপে থাকা এটিকে মোহনবাগানের গ্ল্যান মার্টিন্স চোট পেয়ে বেরিয়ে যান ৬১ মিনিটের মাথায়। তাঁর জায়গায় নামেন লালরিনলিয়ানা হ্নামতে। হায়দরাবাদের দাপট কমানোর উদ্দেশ্যে মাঠে নামানো হয় কিয়ান নাসিরিকে। এই পরিবর্তনের পর থেকেই দাপট বাড়াতে শুরু করে এটিকে। ৮১ মিনিটের মাথায় মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে কিয়ান প্রতিপক্ষের বক্সের সামনে গিয়ে বাঁ দিকে কোণাকুনি পাস বাড়ান বাঁ দিক দিয়ে ওঠা পেট্রাটসকে। গোলে শট নেন অস্ট্রেলীয় তারকা। কিন্তু সোজা গোলকিপারের হাতে। এর মধ্যেই ৭৮ মিনিটের মাথায় হায়দরাবাদ শিবির থেকে মাঠে নামানো হয় তাদের নাইজেরীয় গোলমেশিন বার্থোলোমিউ ওগবেচে-কে। এবং এই পরিবর্তনই নিয়ে হায়দরাবাদের জন্য নিয়ে আসে সুখবর।
৮৬ মিনিটের মাথায় তাঁর গোলেই জয়ের দোরগোড়ায় চলে যায় গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। বোরহা হেরেরার পাস থেকে হিরো আইএসএলের তাঁর ৬১ নম্বর গোলটি করেন ওগবেচে। বাঁদিকের উইং থেকে বোরহা বল বাড়ান প্রতিপক্ষের বক্সের সামনে থাকা ওগবেচেকে। বক্সের বাইরে থেকে সোজা গোলে শট নেন নাইজেরীয় স্ট্রাইকার, যা বিশাল কয়েথের ডানদিক দিয়ে গোলে ঢুকে পড়ে (১-০)।
এটিকে মোহনবাগান দল: বিশাল কয়েথ (গোল), আশিস রাই, প্রীতম কোটাল (অধি), ব্রেন্ডান হ্যামিল, স্লাভকো দামিয়ানোভিচ, পুইতিয়া (কিয়ান নাসিরি), গ্ল্যান মার্টিন্স (লালরিনলিয়ানা হ্নামতে), ফেদরিকো গায়েগো (ফারদিন আলি মোল্লা), মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসো (রিকি সাবং), দিমিত্রিয়স পেট্রাটস ।
(লেখা ও ছবি আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google