জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: শনিবার ডার্বিতে তাঁর দল দাপুটে জয় পেলেও দলের খেলায় পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন এটিকে মোহনবাগান কোচ হুয়ান ফেরান্দো। শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ষাট হাজারেরও বেশি ফুটবলপ্রেমীর সামনে সারা ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে সবুজ-মেরুন বাহিনী। ৬৮ মিনিটের মাথায় সার্বিয়ান ডিফেন্ডার স্লাভকো দামিয়ানোভিচ ও ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে পেট্রাটসের সুযোগসন্ধানী গোলে ম্যাচ জিতে নেয় এটিকে মোহনবাগান।
এই জয়ের ফলে তিন নম্বরে থেকে লিগ শেষ করল এটিকে মোহনবাগান। সুতরাং, নক আউটের প্রথম ম্যাচে তাদের ঘরের মাঠে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে হবে। এই নিয়ে হিরো আইএসএলে টানা ছ’টি ডার্বিতে জয় পেল এটিকে মোহনবাগান। শনিবার রাতে ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে যা প্রতিক্রিয়া দিলেন কোচ ফেরান্দো ও দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা দিমিত্রিয়স পেট্রাটস, তার উল্লেখযোগ্য অংশ এখানে তুলে ধরা হল।
ডার্বি জয় প্রসঙ্গে
আমাদের কাছে তিন নম্বর জায়গা পাওয়াটা খুবই ঝরুরি ছিল। সেটা পেয়েছি ঠিকই। কিন্তু আমি পুরোপুরি খুশি নই। ৫০ শতাংশ সন্তুষ্ট আমি। এখন প্লে অফ নিয়ে ভাবার সময়। দল সেরা দুইয়ে থাকলে আরও খুশি হতাম। প্রথমার্ধে আমাদের ছেলেরা ভালই খেলেছে। আমি চেয়েছিলাম দ্বিতীয়ার্ধে ওরা আরও ভাল খেলুক। প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল অনেক সঙ্ঘবদ্ধ ছিল। আমাদের জায়গা খুঁজে বের করতে বেশ বেগ পেতে হয়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আমরা যখন আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠি, তখন ওদের রক্ষণ ও মাঝমাঠের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বাড়তে থাকে। মনবীর, আশিকরা অনেকটা ফাঁকা জায়গা পেয়ে যায় আক্রমণের জন্য। কিয়ানও শেষ দশ মিনিট বেশ ভাল খেলেছে।
ফুটবলে সেরা মুহূর্তে যদি জায়গা বের করে নিতে পারা যায়, তা হলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়া যায়। আজ আমরা তৃতীয় স্থানে থাকার জন্য চাপে ছিলাম। তাই আজ তিন পয়েন্টটা খুব জরুরি ছিল। এই মাসে আমরা অনেক ম্যাচ খেলেছি, সব মিলিয়ে পাঁচটা। তাই খেলোয়াড়রা অনেকে ক্লান্ত। তবে দলের ছেলেরা জানে কখন কী ভাবে খেলতে হয়। আমার কাছে স্বাভাবিক পারফরম্যান্স এটা। তবে খুব খুশি নই। বা হতাশও নই। সাধারণত যে রকম পারফরম্যান্স দেখাই আমরা, সে রকমই হয়েছে।
নক আউটের লড়াই প্রসঙ্গে
পরের ম্যাচের আগে আমরা এক সপ্তাহ সময় পাচ্ছি। নক আউটের ম্যাচ হোম-অ্যাওয়ে হলে তাতে দুরকমই সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এই ৯০ মিনিটে একটা ভুলই অনেক বড় হয়ে যেতে পারে। তাই প্লে অফে আমাদের কাজ আরও কঠিন। আরও ফোকাস করতে হবে আমাদের। ছোটখাটো ভুল করলেও চলবে না।
ঘরের মাঠে নক আউট
ঘরের মাঠে খেললে ফুটবলাররা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামতে পারে। সমর্থকদের সামনে মাঠে নামলে কঠিন সময়েও কাজটা অনেক সোজা হয়। কারণ, সমর্থকরা পাশে থাকেন। তবে ঘরের মাঠে ম্যাচ হলেও ওডিশাকে হাল্কা ভাবে নেওয়া যাবে না। কোনওরকম ঝুঁকি নেওয়াও যাবে না। আমাদের দলটা ভাল। কয়েকজন ভাল বিদেশি ফুটবলার আছে। তবে সেমিফাইনালে উঠতে গেলে প্রস্তুতিটা ঠিকঠাক হওয়া দরকার।
দামিয়ানোভিচ প্রসঙ্গে
স্লাভকো দামিয়ানোভিচ অসাধারণ এক পেশাদার ফুটবলার। খুব পরিশ্রম করে ছেলেটা। দলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে ও। দলকে সাহায্যও করছে। তবে দল সম্পর্কে ভাল করে জানা খুবই জরুরি। মরশুমের শুরুতে যখন শুরু করেছিলাম আর এখন, দুই সময়ের প্রথম এগারো দেখলে বুঝবেন, কতটা বদলে গিয়েছি আমরা। এখন আমার কাজ একই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।
ডার্বির স্মরণীয় জয় প্রসঙ্গে দিমিত্রিয়স পেট্রাটস
সব ম্যাচই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ডার্বি একটু স্পেশ্যাল। সবাই ভাল খেলেছে, পরিশ্রম করেছে। সমর্থকদের আজ রাতে সেলিব্রেশন করার সুযোগ করে দিতে পেরে ভাল লাগছে। আশা করি, সবাই খুশি হয়েছেন এবং পরের ম্যাচেও সবাই আসবেন ও আমাদের সমর্থন জানাবেন। সবাইকে দরকার আমাদের।
প্রথম ডার্বি গোল
সব কিছুই সমর্থকদের জন্য। গোল করার পরে আমি ভুল করে ইস্টবেঙ্গল গ্যালারির সামনে চলে গিয়েছিলাম। সে জন্য আমি দুঃখিত। আমাদের সমর্থকদের আরও কাছে যেতে চেয়েছিলাম তখন। আশা করি সবাই ডার্বি বেশ উপভোগ করেছেন। এই জয়ে অবদান রাখতে পেরে আমিও খুশি। আমার পরিবার ও সমর্থকদের এই গোল উৎসর্গ করলাম।
নিজের ভূমিকা নিয়ে
গোল করাটাই আমার কাজ। সব ম্যাচেই নিজের সেরাটা দিতে চাই। গোল করি বা অ্যাসিস্ট, আমার উদ্দেশ্য সব ম্যাচে এটাই থাকে। সেরাটা দিয়ে দলকে জেতাতে চাই সবসময়। এখন পর্যন্ত মরশুম ভালই কেটেছে। আর কয়েকটা ম্যাচ বাকি আছে। সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওগুলোতেও আমাদের সেরাটা দিতে হবে।
(লেখা ও ছবি আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google