জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: একশো মিনিটেরও বেশি হায়দরাবাদ এফসি-কে কোণঠাসা করে রেখে দেয় এটিকে মোহনবাগান (ISL 8 HFC vs ATKMB)। এর চেয়ে দাপুটে পারফরম্যান্স সারা লিগে তারা আর কখনও দেখাতে পেরেছে কি না সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু এ বারের হিরো আইএসএল ফাইনালে উঠতে এই ম্যাচে যা প্রয়োজন ছিল তাদের, সেই তিন গোলের ব্যবধানে জয় পাওয়া আর হল না। ফলে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হল গতবারের রানার্স আপ এটিকে মোহনবাগানকে। অথচ বুধবার বাম্বোলিমে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে অন্তত চার গোলে জিতে রবিবার ফাইনালে দুর্ধর্ষ এক বাংলা-কেরালা দ্বৈরথে নামতে পারত তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১-০-য় জেতে। মোট গোলের বিচারে (৩-২) প্রথম বার হিরো আইএসএলের ফাইনালে উঠল হায়দরাবাদ এফসি। সৌজন্যে শনিবার প্রথম লেগে তাদের ৩-১ জয়।
এ দিন গতবারের রানার্স আপ দলের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান হায়দরাবাদ এফসি-র ৩২ বছর বয়সি গোলকিপার লক্ষ্মীকান্ত কাট্টিমণি, যিনি একাই ছ-ছ’টি অবধারিত গোল সেভ করে এটিকে মোহনবাগানের ফাইনালে ওঠার রাস্তা বন্ধ করে দেন। সারা ম্যাচে আটটি শট গোলে রাখেন কলকাতার দলের ফুটবালাররা। কিন্তু একটির বেশি গোল পাননি তাঁরা। পেতে পারতেন অন্তত তিন-চারটি। যে সমস্ত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন লিস্টন কোলাসো, রয় কৃষ্ণা, হুগো বুমৌস, জনি কাউকোরা, তা তাঁদের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত। ১৩টি কর্নার পেয়েও সেগুলি বিফলে যায়। সারা ম্যাচে বিপক্ষের বক্সে ৩২টি ক্রস গেলেও মাত্র একটি কাজে লাগে তাদের।
বহু চেষ্টার পরে ৭৯ মিনিটে লিস্টনের ক্রস থেকে গোল পান রয় কৃষ্ণা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর একটি গোল করতে পারলে ম্যাচটাকে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যেতে পারতেন তাঁরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাও পারেনি স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দোর দল। হায়দরাবাদ এফসি-র খেলা দেখে এ দিন মনে হয়, তাঁরা বিপক্ষকে ঠেকিয়ে রাখার উদ্দেশ্য নিয়েই নেমেছিল। এই কাজটা করতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেয়ে যান হুয়ানান-রা। গোয়া থেকে উঠে আসা গোলকিপার কাট্টিমনি একাই রুখে না দাঁড়ালে তাদের প্রথম হিরো আইএসএল ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন হয়তো ভেঙে চুরমার হয়ে যেত। তাই ম্যাচের নায়কের পুরস্কারও পান তিনিই।
এ দিন চোটের জন্য নির্ভারযোগ্য স্প্যানিশ ডিফেন্ডার তিরিকে স্কোয়াডে রাখতে পারেনি এটিকে মোহনবাগান। তাতে অবশ্য খুব একটা সমস্যায় পড়েনি তারা। তিন ব্যাকে খেলা শুরু করে তারা। আক্রমণাত্মক ফুটবলের পরিকল্পনা নিয়ে ৩-৫-২-এ দল সাজান কোচ হুয়ান ফেরান্দো। আক্রমণে সবার সামনে রয় কৃষ্ণার সঙ্গে ছিলেন কিয়ান নাসিরি। বুমৌস, লিস্টন, কার্ল, প্রবীরদের রাখা হয় মাঝমাঠে।
অন্য দিক, চার ব্যাকে খেলা শুরু করে হায়দরাবাদ। কিন্তু খেলা যত এগোতে থাকে, ততই নিজেদের গোলের সামনেই বেশির ভাগ হায়দরাবাদি ফুটবলারকে দেখা যায়। বার্থোলোমিউ ওগবেচে ও হাভিয়ে সিভেরিওকে সামনে রেখে ৪-২-৩-১-এ দল সাজান হায়দরাবাদের কোচ মানুয়েল মার্কেজ। কিন্তু এ দিন দুই স্ট্রাইকারকে কার্যত অকেজো করে রাখেন প্রীতম কোটালরা।
৬৯ মিনিটের মাথায় ঝিঙ্গনকে তুলে মনবীর সিংকে নামান ফেরান্দো। আক্রমণে লোক বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই তিনি হয়তো এই সিদ্ধান্ত নেন এবং এর জেরে ৭৯ মিনিটের মাথায় ম্যাচের প্রথম গোলটি আসে। হায়দরাবাদ ডিফেন্সে নিম দোরজির জায়গায় আশিস রাই নামেন। তিনি মাঠে নেমে সেট হওয়ার আগেই গোলটি দিয়ে দেন রয় কৃষ্ণাকে, যার অর্ধেক কৃতিত্ব নিতেই পারেন লিস্টন কোলাসো। বাঁ দিক থেকে দূরের পোস্টে ভাসানো ক্রস দেন তিনি। এই ক্রস গিয়ে পড়ে অরক্ষিত রয়ের পায়ে এবং তিনি এ বার আর ভুল করেননি।
এটিকে মোহনবাগান দল: অমরিন্দর সিং (গোল), প্রীতম কোটাল (অধি), সন্দেশ ঝিঙ্গন (মনবীর সিং), শুভাশিস বোস, প্রবীর দাস, হুগো বুমৌস, কার্ল ম্যাকহিউ (ডেভিড উইলিয়ামস), জনি কাউকো, লিস্টন কোলাসো, রয় কৃষ্ণা, কিয়ান নাসিরি (আশুতোষ মেহতা)।
তথ্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)