প্রয়াত অঞ্জন মিত্র, শেষ হয়ে গেল মোহনবাগান ক্লাবের একটা যুগ

প্রয়াত অঞ্জন মিত্রশেষ বারের মতো মোহনবাগান ক্লাব ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন অঞ্জন মিত্র।

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: প্রয়াত অঞ্জন মিত্র, শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিব। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন অঞ্জন মিত্র। সেই অসুস্থতা নেই সচিবের দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু ক্লাবের রাজনৈতিক টানাপড়েনে তাকে করতে বাধ্য করা হয়। শেষ নির্বাচনে অনেক যন্ত্রণা নিয়েই নিজের জমা দেওয়া মনোনয়ণপত্র তুলে নিয়েছিলেন তিনি।প্রায় দু’যুগ মোহনবাগান ক্লাবের সচিবের দায়িত্ব সামলানো পর বিদায়টা সুখকর হয়নি তার।

অসুস্থতা বাড়ায় বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে ছিলেন অঞ্জন মিত্র। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার ভোররাতে মারা যান তিনি। তার পরিবারে রয়েছেন তার স্ত্রী। এ ছাড়া একমাত্র মেয়ে সোহিনী মিত্র চৌবে ও জামাই প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবে।

আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

শুক্রবার হাসপাতাল থেকে অঞ্জন মিত্রর মরদেহ প্রথমে তার ট্যাংরার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ক্লাব তাঁবুতে। সেখানেই তাকে সকলে শ্রদ্ধা জানান। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার ক্লাবের পতাকা ও ফুল দিয়ে প্রতিপক্ষ ক্লাবের প্রাক্তন কর তাকে সম্মান জানান। এরপর ক্লাব থেকে তার দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেওড়াতলা মহাশ্মশান। সেখানেই শেষকৃত্য হয় তার। এই পুরো যাত্রায় সঙ্গে ছিলেন মোহনবাগান ক্লাবের বর্তমান দুই কর্তা দেবাশিস দত্ত ও সৃঞ্জয় বসু। ক্লাব থেকে এই দু’জনের কাঁধে চেপেই বেরলেন।
অঞ্জন মিত্র সম্পর্কে দেবাশিস দত্ত বলেন, “তার বাবা-মায়ের পর তার জীবনে অঞ্জন মিত্র ছিলেন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ।” যদিও শেষ বেলায় তার প্রতি খুব একটা নেয় করতে পারেননি বর্তমান কর্তারা।

তবে অঞ্জন মিত্রর মৃত্যুতে আবার সাময়িক সময়ের জন্য হলেও একমঞ্চে সুষ্ঠুভাবে হাজির হয়েছিলেন সবপক্ষের সব কর্তারা। যেখানে শেষ হয়ে গেল মোহনবাগান ক্লাবের একটা যুগের। ক্লাব তবু থেকেই চিরবিদায় নিলেন অঞ্জন মিত্র।

যে টুটু অঞ্জন জুটি নিয়ে নতুন করে পথচলা শুরু করেছিল মোহনবাগান ক্লাব তা আগেই খুব বিশ্রীভাবে ভেঙে গিয়েছিল। যাদের বন্ধুত্ব একসময় ময়দানের মুখে মুখে ঘুরত তাদেরই শত্রুতা চলে এসেছিল সকলের সামনে। ক্লাবের মঞ্চে সর্বসমক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা হয়েছিল দুই বন্ধুর। সেদিনও চুপ করে মঞ্চে বসে দেখেছিলেন ভেঙে যাওয়া বন্ধুত্বের রূপ। অনেক কষ্ট নিয়ে ব্যক্তিগত মহলে বলেছিলেন, “টুটু আমার প্রিয় বন্ধু ছিল আর দেবাশিসকে হাত ধরে আমি এই ক্লাবে নিয়ে এসেছিলাম।” বলেছিলেন, “বলতে কষ্ট হয় তবুও সত্যিটা তো মেনে নিতেই হবে।” আর ক্লাবে যাননি। শেষবারের মতো সেই ক্লাব থেকেই পাড়ি দিলেন অজানার উদ্দেশ্যে।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)