জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সম্ভবত তাঁর দায়িত্বে থাকা দলের শেষ ম্যাচের পরে এসসি ইস্টবেঙ্গলের অন্তর্বর্তী কোচ Renedy Singh মনে করেন গত তিন ম্যাচে একটা ব্যাপারই স্পষ্ট হয়েছে যে, দল একসঙ্গে লড়াই করলে সব কিছুই সম্ভব। তবে সারা ম্যাচে এত লড়াইয়ের পরে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হারটা তাঁর কাছে খুবই দুঃখের। ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রেনেডি যা বললেন, তা তুলে দেওয়া হল।
শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হার, তাও সেট পিসে। কতটা হতাশাজনক?
ম্যাচের একেবারে শেষে ৮৮ মিনিটে গোল খেয়ে হার খুবই দুঃখজনক। তবু বলব, দলের ছেলেরা যে ভাবে ওয়ার্ক এথিক মেনে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, সে জন্য ওদের নিয়ে আমি গর্বিত। ওদের এই কমিটমেন্ট পরের ম্যাচগুলোতেও একই রকম থাকে, তা হলে দলের উন্নতিই হবে।
আপনার কি মনে হয় এই ফল ঠিকই আছে?
হ্যাঁ, এই ফল ঠিকই আছে। বেঙ্গালুরু ও মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে গত দুটো ম্যাচ খুবই কঠিন ছিল। মুম্বই দারুন আক্রমণাত্মক দল। জামশেদপুরেও কয়েকজন দুর্দান্ত ফুটবলার রয়েছে। কিন্তু কোনও বিদেশি ছাড়াই শুধু ভারতীয় ছেলেরা যে রকম শুরু করেছিল, যে ভাবে লড়াই করল এবং রক্ষণে, এমনকী আক্রমণেও শেপ বজায় রাখল, তা দেখাটা খুবই গর্বের।
ভারতীয়দের নিয়ে গড়া দল সফল হতে পারল না, এই ব্যাপারটাকে আপনি কী ভাবে দেখছেন?
নিজেদের ওপর বিশ্বাস রয়েছে আমাদের। সবাই দেখেছে ম্যাচটা। ভারতীয় খেলোয়াড়রা যে ভাবে লড়াই করল, তা অসাধারণ। আদিলের চোট পেয়ে বেরিয়ে আসাটা খুবই দুঃখজনক। তবে মাঠে যারা ছিল, তারাই নিজেদের প্রমাণ করে দিয়েছে। আমরা জানি যে ভাল বিদেশি ফুটবলারদের বিরুদ্ধে খেলছি আমরা। তা সত্ত্বেও আমরা ওদের বিরুদ্ধে দল হিসেবে লড়েছি। এটা বজায় রাখতে হবে। আমরা ভারতীয়রা নিজেদের ওপর আস্থা রাখব যে আমরা ভাল খেলব। শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হেরেছি ঠিকই। তবে এ ভাবেই লড়াই করতে হবে আমাদের।
কোচ হিসেবে এটা আপনার তৃতীয় ম্যাচ। দুটো ড্র ও একটি হারের পরে কী শিখলেন?
প্রথম ম্যাচে আমরা শুরুতে গোল দিয়ে ড্র করি। দ্বিতীয় ম্যাচে ও রকম দুর্দান্ত একটা আক্রমণাত্মক দলের বিরুদ্ধে মাত্র একজন বিদেশি নিয়েও কী লড়াইটাই না করেছি আমরা। এই তিনটে ম্যাচে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়েছে, দেশি হোক বা বিদেশি, আমাদের দল হিসেবে লড়াই করতে হবে। যদি একত্র থেকে লড়তে পারি, তা হলে সব কিছুই সম্ভব।
‘এসসি ইস্টবেঙ্গলকে অবশ্যই কৃতিত্ব দেব’
অন্য দিকে, জামশেদপুর এফসি-র কোচ আওয়েন কোইল মনে করেন, এসসি ইস্টবেঙ্গল এই ম্যাচে নয়, অনেক আগেই প্রমাণ করেছে, প্রতিপক্ষ হিসেবে কতটা কঠিন হয়ে উঠতে পারে তারা। ম্যাচের পরে তিনি সাংবাদিকদের যা বললেন, তার নির্বাচিত অংশ তুলে দেওয়া হল এখানে।
ইশানের শেষ মুহূর্তের গোলে আরও একটি জয় (টানা দ্বিতীয়)। কী বলবেন?
অসাধারণ গোল, অসাধারণ গোল করেছে ইশান। আরও উন্নতি করবে ও। ওকে শুরুর এগারোতে রাখার চেষ্টা করব। প্রথম এগারোতে ও ছিলও। কিন্তু ছোটখাটো চোটের জন্য সেটা আর সম্ভব হয়নি। গোলের আগে ও আরও দুটো সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ও একজন সহজাত ফিনিশার। ওকে যদি ঠিকমতো তৈরি করা যায়, তা হলে দুর্দান্ত একজন নাম্বার নাইন তৈরি হতে পারে।
এসসি ইস্টবেঙ্গল এতক্ষণ ধরে আপনাদের আটকে রাখায় আপনাদের কাজটা কি বেশ কঠিন হয়ে উঠেছিল?
ওরা সত্যিই যথেষ্ট লড়াই করেছে। মাত্র একজন বিদেশি নামাতে পেরেছে ওরা। যখন ওদের চিমা ছিল, তখন ওরা শেষ পাঁচটা ম্যাচের মধ্যে চারটেতে ড্র করে। কেরালা, মুম্বই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরুর মতো দলকে আটকে দেয়। একমাত্র হারে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে। ওরা দেখিয়ে দিয়েছে, প্রতিপক্ষ হিসেবে ওরা কতটা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। কেউ বলতে পারবে না যে আজকের ম্যাচে আমরা সহজেই চার-পাঁচটা গোল করতে পারতাম। ভাল সেভ, ভাল ডিফেন্স সবই করেছে ওরা। ওদের সবচেয়ে ব্যাপার হল, ৯০-৯৫ মিনিট ধরে ধৈর্য্য ধরে খেলে ওরা এবং হতাশও হয় না। ওদের কৃতিত্ব অবশ্যই আছে। তবে আজ জামশেদপুর ওদের চেয়ে ভাল খেলেছে।
আপনারা এখন লিগ টেবলের শীর্ষে। নিশ্চয়ই উপভোগ করছেন ব্যাপারটা?
অবশ্যই। সবাই শীর্ষে উঠতে চায়। তবে ১১ নয়, ২০ ম্যাচের পরে শীর্ষে থাকাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা টেবলের যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের যথাসম্ভব বেশি পয়েন্ট অর্জন করতে হবে। আর অযথা পয়েন্ট খোয়ানো চলবে না। আমরা জানি আমরা সেরা দল হয়ে উঠতে পারি।
প্রায় রোজই টেবলের শীর্ষস্থানে দলের নাম পরিবর্তন হচ্ছে। এই নিয়ে কী বলবেন?
এর অর্থ এ বারের লিগে অনেক ভাল ভাল দল রয়েছে এবং প্রত্যেকেই যথেষ্ট লড়াকু। আমরা চাই ইন্ডিয়ান সুপার লিগ আরও বেড়ে উঠুক, ভাল হোক। ভারতীয় ফুটবলাররাও যথেষ্ট ভাল খেলছে এই লিগে। লিগ যে আরও উন্নত হয়ে উঠছে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই।
(লেখা ও তথ্য আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)