Lionel Messi-র জন্য ১০০ কোটি কীভাবে তুলেছিল আয়োজক সংস্থা

Lionel Messi

১৩ ডিসেম্বর কলকাতায় লিওনেল মেসি (Lionel Messi)-র অনুষ্ঠানের বিশৃঙ্খলার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া মূল আয়োজক শতদ্রু দত্ত তদন্তকারীদের জানিয়েছেন যে, সল্টলেক স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকার সময় ফুটবল তারকাকে “স্পর্শ করা বা জড়িয়ে ধরায় তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন” এবং সেকারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই তিনি সেখান থেকে চলে যান, শনিবার এসআইটি-র একটি সূত্র এই কথা জানিয়েছে। স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের (এসআইটি) কর্মকর্তাদের দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের সময় দত্ত বলেন, মেসিকে “পিছনে স্পর্শ করা বা জড়িয়ে ধরাটা তিনি পছন্দ করেননি” এবং এই উদ্বেগের কথা ফুটবলারের সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা বিদেশি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছিলেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, “ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বারবার জনসমক্ষে ঘোষণা করা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। মেসিকে যেভাবে ঘিরে ধরা হয়েছিল এবং জড়িয়ে ধরা হয়েছিল, তা বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারের কাছে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ছিল,” শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদের সময় দত্ত তদন্তকারীদের এই কথা বলেন।


অনুষ্ঠান চলাকালীন পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে মেসির খুব কাছাকাছি দেখা গিয়েছিল এবং ছবিতে দেখা যায় যে, ছবি তোলার সময় তিনি ফুটবলারের কোমর জড়িয়ে ধরে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি তাঁর প্রভাব খাটিয়ে আত্মীয়স্বজন ও ব্যক্তিগত পরিচিতদের মেসির কাছে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখে তিনি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এত বিপুল সংখ্যক মানুষ কীভাবে মাঠের ভেতরে প্রবেশাধিকার পেল, তা নিয়েও তদন্ত করছে পুলিশ।

শতদ্রু দত্ত আরও দাবি করেছেন যে, প্রাথমিকভাবে মাত্র ১৫০টি গ্রাউন্ড পাস ইস্যু করা হয়েছিল, কিন্তু একজন “খুব প্রভাবশালী ব্যক্তি” স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর পর সেই সংখ্যা তিনগুণ করা হয় এবং তিনি “তাকে প্রভাবিত করেন”। পুলিশ খতিয়ে দেখছে যে, এই ব্যক্তিউ বর্ধিত প্রবেশাধিকার ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতার জন্য সরাসরি দায়ী ছিল কিনা।

পিটিআই-কে ওই কর্মকর্তা বলেন, “গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত আরও দাবি করেছেন যে, ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর পরেই মেসির অনুষ্ঠানের সমস্ত ফ্লো-চার্ট এলোমেলো হয়ে যায় এবং তিনি তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি।”

দত্ত মেসির ভারত সফর সম্পর্কিত আর্থিক বিবরণও প্রকাশ করেছেন।

তিনি তদন্তকারীদের বলেছেন, “এই সফরের জন্য লিওনেল মেসিকে ৮৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল, আর ১১ কোটি টাকা ভারতীয় সরকারকে কর হিসেবে দেওয়া হয়েছিল,” সব মিলিয়ে মোট ব্যয় ১০০ কোটি টাকা বলে তিনি জানান। সূত্র জানিয়েছে, এই অর্থের ৩০ শতাংশ স্পনসরদের কাছ থেকে এবং বাকি ৩০ শতাংশ টিকিট বিক্রি থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল।

এদিকে, এসআইটি-র কর্মকর্তারা দত্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ কোটি টাকার অর্থ খুঁজে পেয়েছেন বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, শুক্রবার দত্তের বাড়িতে তল্লাশির পর এসআইটি-র গোয়েন্দারা বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন।

তিনি জানান, শতদ্রু দত্ত দাবি করেছেন যে তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ তিনি কলকাতা ও হায়দরাবাদে মেসি অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রি এবং স্পনসরদের কাছ থেকে পেয়েছেন। এই তথ্যগুলোও যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

সল্টলেক স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানটি দেখার জন্য হাজার হাজার দর্শক উচ্চমূল্যের টিকিট কিনেছিলেন, কিন্তু মাঠে মেসির চারপাশে বিপুল সংখ্যক লোক ভিড় করায় অনুষ্ঠানটি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। এর ফলে গ্যালারি থেকে মেসিকে প্রায় দেখাই যাচ্ছিল না এবং ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, যাদের মধ্যে কেউ কেউ পরে স্টেডিয়ামের কিছু অংশ ভাঙচুর করে।

সল্টলেক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির অনুষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনা তদন্তের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিনিয়র আইপিএস কর্মকর্তা পীযূষ পান্ডে, জাভেদ শামীম, সুপ্রতীম সরকার এবং মুরলিধরকে নিয়ে একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করেছে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এসআইটি এই ঘটনায় নিরাপত্তার ত্রুটি, প্রবেশাধিকার লঙ্ঘন এবং আয়োজক ও কর্মকর্তাদের ভূমিকাও তদন্ত করছে।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবর

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle