জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ইংল্যান্ডে আসন্ন নেক্সট জেন কাপে (Next Gen Cup) ভারতের দুই ক্লাবের যুব দল খেলার সুযোগ পাওয়ায় খুশি বেঙ্গালুরু এফসি ও ভারতের জাতীয় দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। এই দুই দলের মধ্যে তাঁর ক্লাব দল বেঙ্গালুরু এফসি-ও রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি-র যুব ফুটবলাররাও। চলতি মাসেরই শেষ দিকে এই দুই দল ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবগুলির যুব দলগুলির বিরুদ্ধে মাঠে নামার সুযোগ পাবে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আয়োজকেরা ও হিরো আইএসএলের আয়োজক ফুটবল স্পোর্টস ডেভলপমেন্ট লিমিটেড বা এফএসডিএলের যৌথ উদ্যোগে এই টুর্নামেন্ট হতে চলেছে।
দেশের যুব ফুটবলারদের ইংল্যান্ডের মাটিতে খেলার এমন সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে সুনীল ছেত্রী হিরো আইএসএল মিডিয়া টিমকে বলেন, “আমাদের দেশের ছেলেরা এই সুযোগ পাওয়ায় আমি খুশি। এই টুর্নামেন্টে আমাদের কোচেরাও বুঝে নিতে পারবেন, যে ছেলেরা আমাদের বিভিন্ন ক্লাবের প্রথম দলের দরজায় কড়া নাড়ছে, তারা ঠিক কেমন”।
একই সঙ্গে তাঁর আফসোস, “এ রকম সুযোগ আমার ছোটবেলায় কখনও আসেনি। আমি খুশি যে, প্রিমিয়ার লিগ ও এফএসডিএল হাত মিলিয়ে এ রকম একটা টুর্নামেন্ট করছে। নেক্সট জেন কাপ আমাদের দেশের তরুণদের সামনে ইংল্যান্ডের সেরা ক্লাব দলগুলির যুব দলগুলির বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ এনে দিচ্ছে”।
গত মে মাসে রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগের প্রথম মরশুমে সেরার শিরোপা জেতে বেঙ্গালুরু এফসি। এই খেতাবের সুবাদেই নেক্সট জেন কাপে অংশগ্রহণ করবে তারা। তাদের সঙ্গে এই লিগের রানার্স আপ কেরালা ব্লাস্টার্সও ইংল্যান্ডে এই টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
লিগের সেরা দুই ক্লাব ইংল্যান্ডে প্রিমিয়ার লিগে খেলা একাধিক ক্লাবের যুব দলের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাবে। অর্থাৎ প্রিমিয়ার লিগে যে দলগুলি দাপিয়ে বেড়ায়, তাদের অ্যাকাডেমি দলগুলির বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাবেন ভারতের এই উঠতি ফুটবলাররা। দেশে ফিরে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে মাঠে এই অমূল্য অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে তাঁদের।
হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অংশগ্রহনকারী সাতটি ক্লাব এই প্রতিযোগিতায় একে অপরের মুখোমুখি হয়। গোয়ায় এই লিগে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ইয়ং চ্যাম্পস্ও। ২০০১-এর ১ জানুয়ারি বা তার পরে যাঁদের জন্ম হয়েছে, সেই ফুটবলাররা ভারতের এই যুব লিগে অংশ নেন। তবে প্রতি দলে পাঁচজন করে এমন ফুটবলারকেও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়, যাঁদের জন্ম ১৯৯৯-এর ১ জানুয়ারি বা তার পরে। প্রথম এগারোয় এ রকম তিনজন ফুটবলার রাখার নিয়ম ছিল। কোনও দলে কোনও বিদেশি ফুটবলারকে রাখা হয়নি।
দেশের কিশোর, তরুণ, উঠতি ফুটবলারদের জন্য এ বছর থেকে শুরু হওয়া এই লিগ প্রসঙ্গে সুনীল আগে বলেছিলেন, “দেশের কিশোর-তরুণ ফুটবলাররা অনেকেই নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ পায় না। তাদের মধ্যে অনেকে একটা সুযোগ পেলেই তাকে ভরপুর কাজে লাগিয়ে প্রতিভার প্রমাণ দেয়। রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগ তাদের জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা। অনেকেই ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দলে থাকলেও সুযোগ পায় না। তাদের জন্যই এটা একেবারে আদর্শ মঞ্চ”।
ভারতীয় দলের কিংবদন্তি স্ট্রাইকার, যিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে বর্তমান সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় রয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসির পরেই, তিনি রোশন সিং নাওরেমের মতো তরুণ ভারতীয় ফুটবলারের উদাহরণ দিয়ে দেশের যুব ফুটবল সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, “রোশন সিংয়ের মতো উদাহরণ সামনে থাকলে দেশের তরুণ ফুটবলারদের উজ্জীবিত করা অনেক সহজ হয়ে যায়। রোশন এক বছর আগে কোথায় ছিল আর আজ কোথায় আছে দেখুন। অ্যাকাডেমি থেকে উঠে এসে ক্লাব দল, তার পরে এখন ভারতীয় দলে। ও একসময় এই তরুণ ফুটবলারদের মধ্যেই ছিল। কিন্তু নিজের জীবন সম্পুর্ণ পাল্টে ফেলে। এ ভাবেই কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে তুলে আনতে হয়”।
হিরো আইএসএল চলাকালীন প্রতি ক্লাবকে তাদের যুব ফুটবলের উন্নতির জন্য যথেষ্ট সাহায্য করে রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন। এই উদ্যোগ ভারতকে আগামী কয়েক বছরে ফুটবলের অন্যতম সেরা শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার পিছনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা সফল হলে ভারতীয় ফুটবল এমন এক জায়গায় পৌঁছে যেতে পারবে, যেখানে এর আগে কখনও পৌঁছনো যায়নি।
(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google