হতাশ হাবাস, দুই ম্যাচ পরে জয়ে ফিরেও চিন্তায় রাখছে আক্রমণ

ATK Mohun Bagan

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হতাশ হাবাস জিতেও। শেষ মুহূর্তের গোলে দুই ম্যাচ পরে জয়ে ফিরলেও আক্রমণ নিয়ে চিন্তা থেকেই গেল এটিকে মোহনবাগান কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের। তাঁর মতে, এখনও আক্রমণে অনেক উন্নতি করতে হবে তাঁর দলকে। সবুজ-মেরুন শিবিরের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার রয় কৃষ্ণার গোল না পাওয়া নিয়ে যে এখনও চিন্তিত নন তিনি, তাও এ দিন ম্যাচের পরে জানিয়ে দিলেন হাবাস। তবে এ দিনের ম্যাচে পাওয়া এডু গার্সিয়ার চোট নিয়ে তিনি বেশ চিন্তায়।

ফতোরদা স্টেডিয়ামে চেন্নাইন এফসি-কে ১-০ গোলে হারানোর পরে বৃহস্পতিবার রাতে স্প্যানিশ কোচ ভার্চুয়াল বৈঠকে সাংবাদিকদের বললেন, “আজও আমাদের আক্রমণ বিভাগ সে রকম ভাল খেলতে পারেনি। গোল পেয়েছি বটে, গোলের সুযোগও পেয়েছিলাম। তবে এখনও আক্রমণে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। প্র্যাকটিসে আমরা রোজই সেই চেষ্টা করি। কিন্ত অনুশীলনের জন্য তো বেশি সময় পাচ্ছি না। প্রতি দু-তিন দিন অন্তর ম্যাচ থাকছে। তাই ভুলগুলো শোধরানোর সময় ঠিকমতো পাচ্ছি না। তবে এটা পরিষ্কার যে, আমাদের অ্যাটাক ঠিক হচ্ছে না”।

ফতোরদা স্টেডিায়ামে এ দিন সারা ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করেও এটিকে মোহনবাগান নির্ধারিত সময়ে গোল পায়নি। একাধিক সুযোগ তৈরি করেও বারবার ব্যর্থ হন রয় কৃষ্ণা, এডু গার্সিয়া, হাভিয়ে হার্নান্ডেজরা। শেষে পরিবর্ত হিসেবে নামা ডেভিড উইলিয়ামসের ওই হেডই বহু আকাঙ্খিত গোলটি এনে দেয় তাঁদের। দলের খেলায় খুশি হলেও উচ্ছ্বসিত নন হিরো আইএসএলের সবচেয়ে সফল কোচ। তাঁর মন্তব্য, “আমরা আজ দুর্দান্ত ফুটবল না খেললেও কার্যকরী ফুটবল খেলেছি। ভাল খেলে তিন পয়েন্ট জিতেছি। আইএসএলে লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য এই তিন পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের কাছে”।

রয় কৃষ্ণার গোলখরা প্রসঙ্গে তাঁকে সমর্থন করেই কোচ বলেন, “যে কোনও দলেরই ভাল খেলোয়াড়দের খারাপ সময় যায়। তারা আবার নিজেদের ছন্দে ফিরেও আসে। তারাও তো মানুষ, যন্ত্র নয়। ঠিক ফর্মে ফিরবে”। ছয় ম্যাচে মাত্র একটি গোল পেয়েছেন রয়। এ দিন শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া লাগছিল তাঁকে। প্রথমার্ধে তিনি দু’বার কাছাকাছি এসেও গোলের দরজা খুলতে ব্যর্থ হন। দু’বারই সঠিক জায়গায় বল পাননি তিনি। একবার হেডে গোল করার সুযোগ পেয়েও ঠিকমতো বলে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি।

বহুআকাঙ্খিত গোলটি আসে সেই সেটপিস মুভ থেকেই। স্টপেজ টাইমে হাভিয়ে হার্নান্ডেজের কর্নার কিকে হেড করে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ডেভিড উইলিয়ামস। নিখুঁত ভাবে বলটা বক্সের মাঝখানে একেবারে ডেভিডের মাথায় রেখেছিলেন হাভি। এই সুযোগ দুর্দান্ত ভাবে কাজে লাগিয়ে নেন অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকার।

সেট পিস মুভ থেকেই তাঁদের বেশির ভাগ গোল হওয়া প্রসঙ্গে হাবাস বলেন, “মরশুমের শুরু থেকে আমরা সেট পিস অনুশীলনের ওপর বেশি জোর দিই। এটা ভাল যে, যেটা করতে চেয়েছিলাম আমরা, সেটা পারছি। আমার মনে হয় আমরা ঠিক রাস্তাতেই এগোচ্ছি। এটাই বজায় রাখতে হবে”।

যাঁর গোলে দুই ম্যাচ পরে জয়ে ফিরল এটিকে মোহনবাগান, সেই ডেভিড উইলিয়ামসকে এ দিন ৬৭ মিনিটের মাথায় নামানো হয় হাভিয়ে হার্নান্ডেজের জায়গায়। কেন তাঁকে এত পরে নামানো হল, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, “ডেভিডকে পরের দিকে নামাই। কারণ, ওর চেয়ে হাভির বেশিক্ষণ মাঠে থাকা জরুরি ছিল। বিদেশিদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতে চাই আমি। সবাইকে তো শুরু থেকে নামিয়ে খেলানো সম্ভব নয়”।

সাফল্যের মাঝেও এডু গার্সিয়ার চোট নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে হাবাসের। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “চোটটা কতটা গুরুতর, তা ঠিক জানি না। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখছে। এডু আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। দেখা যাক, চোট কতটা গুরুতর। পরের ম্যাচের (২৬ জানুয়ারি) আগে তো কয়েকটা দিন সময় পাব”।

অন্যদিকে, চেন্নাইন এফসি-র হতাশ কোচ কসাবা লাজলোর মতে, সারা ম্যাচে তাঁর দল ভাল ফুটবল খেললেও শেষ মুহূর্তের কর্নারটিই তাঁদের শেষ করে দিল। ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা ভাল ফুটবল খেলেছি। খেলাটা নিয়ন্ত্রণে আনারও চেষ্টা করেছিলাম। ফিটনেস নিয়েও কোনও সমস্যা ছিল না। নিশ্চিত ছিলাম, ম্যাচে যদি কোনও গোল হয়, তা হলে সেটা আমরাই করব। কিন্তু এক মিনিটে সব শেষ হয়ে গেল। একটা কর্নারেই সব কিছু ধ্বংস হয়ে গেল। আমরা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করে দিলাম। সত্যিই বলছি, এমন হার খুবই বেদনাদায়ক। তবু আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে, সামনের দিকে তাকিয়ে এগোতে হবে। খুব খারাপ একটা রাত কাটবে আমাদের ড্রেসিংরুমে”।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)