রবিবারের মিটিংয়ে শেষ পর্যন্ত কী হল, কবে হবে ISL

ISL

২০২৫-২৬ মরসুমের আগে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL) এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং ফর্ম্যাট সংক্রান্ত উদ্বেগ লিগটিকে আরও বিপদে ফেলে দিয়েছে। সে বিষয়ে স্পষ্টতা না আসা পর্যন্ত লিগ শুরু করা মুশকিল। রবিবার আইএসএল ক্লাব এবং সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন বৈঠকে এই বিভেদ স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যেখানে জামশেদপুর এফসি মরসুমে অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিলেও ওড়িশা এফসি প্রকাশ্যে লিগ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছে।

লিগের চূড়ান্ত কাঠামো যেমনই হোক না কেন, জামশেদপুরই একমাত্র ক্লাব হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে, ওড়িশা ফেডারেশনকে জানিয়েছে যে, কোনও বাণিজ্যিক অংশীদার ছাড়াই যদি লিগের জন্য অতিরিক্ত খরচ চাপানো হয়, তবে তারা এই মরসুমে খেলার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। শীর্ষ স্তরের সব ক্লাব এবং ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল এম সত্যনারায়ণসহ চার সদস্যের একটি এআইএফএফ প্যানেলের মধ্যে আলোচনার সময় এই বিপরীতমুখী অবস্থানগুলো তুলে ধরা হয়।


বৈঠকের একটি প্রধান সিদ্ধান্ত ছিল ঐতিহ্যবাহী হোম-অ্যান্ড-অ্যাওয়ে ফরম্যাট থেকে বেরিয়ে আসা। বেশ কয়েকটি স্টেডিয়াম প্রায় নয় মাস ধরে অব্যবহৃত থাকায় এবং সেগুলো প্রস্তুত করার জন্য সীমিত সময় থাকায়, লিগটি এখন দু’টি বা তিনটি কেন্দ্রীয় ভেন্যুতে আয়োজিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এআইএফএফ-এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে লিগ শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিল, তবে চূড়ান্ত তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি।

বৈঠকে আলোচিত প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল:

মরসুমের ফর্ম্যাট: একটি কেন্দ্রীভূত মডেল, যা কনফারেন্স-ভিত্তিক হতে পারে অথবা একটি সিঙ্গেল-লেগ লিগ যেখানে প্রতিটি দল একে অপরের সঙ্গে একবার খেলবে।

ম্যাচের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ: প্রস্তাবিত ফর্ম্যাটে দলগুলো মাত্র ১৫টি ম্যাচ খেলবে, যা মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য এএফসি-র বাধ্যতামূলক ২৪ ম্যাচের প্রয়োজনীয়তার চেয়ে অনেক কম।

এএফসি-র কাছে ছাড়ের অনুরোধ: ক্লাবগুলো ব্যতিক্রমী পরিস্থিতির কারণে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) কাছ থেকে এককালীন ছাড়ের জন্য এআইএফএফ-কে অনুরোধ করেছে।

খরচ ভাগাভাগির মডেল: মোট পরিচালন ব্যয় ৩৫-৪০ কোটি টাকা অনুমান করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি ক্লাবকে সম্ভাব্য ২.৫ কোটি টাকা করে অবদান রাখতে হতে পারে।

আর্থিক চাপ একটি প্রধান উদ্বেগ হিসেবে রয়ে গিয়েছে। ক্লাব প্রতিনিধিরা সতর্ক করেছেন যে, যদি এক বা দু’টি দলও সরে দাঁড়ায়, তবে বাকি ক্লাবগুলোকে খরচের একটি বড় অংশ বহন করতে বাধ্য হতে হবে, যা অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তকে আরও জটিল করে তুলবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তহবিল দেওয়ার আগে মালিকরা কঠোর ব্যয় নিয়ন্ত্রণের জন্য চাপ দিচ্ছেন।

বৈঠকে ওড়িশা এফসি-র অবস্থান ছিল সবচেয়ে জোরালো বিবৃতিগুলোর মধ্যে অন্যতম। যে ক্লাবটি সুপার কাপেও অংশ নেয়নি, তারা এআইএফএফ-কে জানিয়েছে যে, দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যিক নিশ্চয়তা ছাড়া বিনিয়োগ করতে বাধ্য হলে তারা আইএসএল থেকে সরে দাঁড়াবে। ভবিষ্যতে, ফেডারেশন এএফসি থেকে মতামত পাওয়ার পর ক্লাবগুলোকে হালনাগাদ তথ্য জানানোর পরিকল্পনা করছে। সম্ভাব্য আয়োজক স্থান, ভারতের এএফসি প্রতিযোগিতার কোটা এবং ২০২৬-২৭ মরসুম থেকে লিগের দীর্ঘমেয়াদী রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা করা হবে। এআইএফএফ এবং আইএসএল ক্লাবগুলোর মধ্যে একটি সরাসরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে বেতনসীমা, পরিচালন ব্যয় এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ সুরক্ষা আলোচ্যসূচির প্রধান বিষয় হিসেবে থাকবে।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবর

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle