জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এমনিতেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা দেশ। তালিবানরা আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর থেকে প্রচুর আফগান দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। যাঁরা থেকে গিয়েছেন তাঁদেরও সমস্যার শেষ নেই। তার মধ্যেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে রীতিমতো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তানের এই বর্ডার এলাকা (Afghanistan Earthquake)। ভূমিকম্পের তাণ্ডবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আফগান-পাক সীমান্তে অবস্থিত খোস্ত শহর থেকে প্রায় ৪৪ ছিল কম্পনের কেন্দ্র। যার জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পাকতিয়া প্রদেশের বিস্তির্ণ এলাকা। ভেঙে পড়েছে বাড়ি। আর মনে করা হচ্ছে তার নিচেই চাপা পড়ে রয়েছে প্রচুর মানুষ। ইতিমধ্যেই হাজারের কাছাকাছি মানুষকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি তরফে।
২০০২ সালের পর এত বড় ভূমিকম্প হয়নি এখানে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ৫.৯। আফগানিস্তানের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বুধবার ভোরেই প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। তখন প্রায় সকলেই ঘুমিয়ে ছিল। যে কারণে পরিস্থিতি বুঝে উঠে ঘরের বাইরে বেরতে বেরতেই ভেঙে পরে একের পর এক বাড়ি। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী এই ভূমিকম্পের রেশ পাওয়া গিয়েছে পাকিস্তান ও ভারতেও। তবে ক্ষতি হয়েছে আফগানিস্তানেরই। প্রায় ৫০০ কিলোমিটার অঞ্চলকে প্রভাবিত করে এই ভূমিকম্প। তবে ক্ষতি হয়নি বাকি দুই দেশের।
সব থেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে পাকতিয়া প্রদেশেই। এমনটাই জানাচ্ছে তালিবানের বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রকের প্রধান নাসিম হাক্কানি। এমনিতেই এই এলাকার মানুষ নিতান্তই গরীব। যে কারণে পাকা বাড়ি নেই বললেই চলে। মাটি, পাথর, গাছের ডালপালা দিয়ে নিজেরাই নিজেদের আস্তানা তৈরি করেন সেখানকার মানুষ। যা খুব শক্তপোক্ত হয় না কখনওই। যে কারণে এক বড় ভূমিকম্পের ধাক্কা নেওয়া সম্ভব ছিল না সেই সব বাড়ির। যার ফলে এখন পুরোটাই মাটির স্তুপ দেখা যাচ্ছে এলাকা জুড়ে। আর মনে করা হচ্ছে ওই স্তুপের নিচে আটকে রয়েছে প্রচুর মানুষ। যাঁরা বেঁচে রয়েছে তাঁরা আর কবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে অনেকেই। এমনিতেই চরম দারিদ্রে থাকা একটি এলাকা যা তালিবান শাসনকালে প্রবলভাব এ বেড়েছে।
ভয়ঙ্কর ছবি উঠে এসেছে আফগানিস্তানের সংবাদ মাধ্যমে। গোটা এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে কম্বলে মোড়ানো মৃতদেহ। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। বেশ কিছু দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টা পাঠিয়ে উদ্ধারকাজ চালানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু আটকে থাকা মানুষের কাছে পৌঁছনোটাও কঠিন বলে মনে করছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় হেলিকপ্টার দিয়ে খাবার, জল, ওষুধ পাঠানো হচ্ছে। আসলে এই পাকতিয়া প্রদেশের অনেকটা এলাকা জুড়েই রয়েছে পাহাড়। যে কারণে পাহাড়ের গায়ে থাকা গ্রামগুলোতে পৌঁছনো বেশ মুশকিল। দুর্গম পথ। তবে, এই বিপুল পরিমাণ বিপর্যয় মোকাবিলা করার সামর্থ আদৌ তালিবানদের আছে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। যে কারণে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক সাহায্য চেয়েছে তারা।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে