জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ও জানতেই পারল না ভূমিকম্পে (Afghanistan Quake) ও সব খুইয়েছে। জীবন থেকে চলে গিয়েছে বাবা-মা, পরিবার। তাই এখনও হাসি হাসি মুখে কোনও এক ফটো জার্নালিস্টের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে পোজ দিচ্ছে। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত আফগানিস্তানের একাংশের ছবি এই মুহূর্তে এটিই। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গোটা একটা এলাকা। মাটির বাড়ি মাটির ঢিবিতে পরিণত হয়েছে। আর তাতে দোসর বৃষ্টি। যার জেরে বন্যা দেখা দিয়েছে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকার অনেকাংশে। কিন্তু এই ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুটির অতশত বোঝার অভ্যেস নেই। ও জানে, যখন খিদে পাবে মা এসে খাইয়ে দেবে। যখন ঘুম পাবে বাবা কোলে নিয়ে ঘুরে ঘুরে ঘুম পাড়িয়ে দেবে।
দিনের আলো যখন একটু একটু করে কমে আসবে, রাত নামবে তখন ওর খোঁজ শুরু হবে বাবা-মায়ের। ও জানে না তাঁরা আর ফিরবেন না। কাঁদতে কাঁদতে কোনও এক শেল্টারে ঘুমিয়ে পড়বে। এভাবে আসতে আসতে ওর দিন কাটবে আর ও ভুলে যাবে এই সব স্মৃতি। হ্যাঁ, অবশ্যই যদি এ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে ও দীর্ঘ আয়ু পায়। তিনদিন হয়ে গিয়েছে ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে পাকতিয়া প্রদেশের বিস্তির্ণ এলাকা। সেখানকার কিছু কিছু জায়গা এতটাই দুর্গম যে উদ্ধারকাজ চালাতেও হিমশিম খেতে হয়েছে। তার মধ্যেই ধ্বংসস্তুপের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছে এই শিশুটি। সারা গায়ে, মুখে তখনও লেগে রয়েছে মাটি। কিন্তু হাসিটি ম্লান হয়ে যায়নি।
আফগানিস্তানের এক সাংবাদিক এই ছবিটি পোস্ট করেছেন তাঁর টুইটার হ্যান্ডলে। তিনি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘‘এই ছোট্ট মেয়েটি মনে করা হচ্ছে তার পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য। স্থানীয়রা বলছেন তার পরিবারের আর কোনও সদস্যকে তাঁরা খুঁজে পাননি। তাকে দেখে মনে হচ্ছে তার বয়স ৩ বছরের আশপাশেই হবে।’’ হয়তো এই বয়স, এই না বোঝাই তাঁকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখবে। ও হাসবে আরও বেশ কিছু বছর। কারণ ওর মনেই থাকবে না কিছু। তালিবানি শাসনে বড় হবে ও। তার পরটা তো কারও জানা নেই।
This little child is probably the only remaining alive member of her family. Locals say they couldn’t find any alive member of her family. She looks like a 3 years old baby.#Afghanistan #AfghanistanEarthquake pic.twitter.com/6mJdiuvOCS
— Sayed Ziarmal Hashemi (@ziarmal1992) June 22, 2022
ভূমিকম্পের তাণ্ডবে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আফগান-পাক সীমান্তে অবস্থিত খোস্ত শহর থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরে ছিল কম্পনের কেন্দ্র। যার জেরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পাকতিয়া প্রদেশের বিস্তির্ণ এলাকা। ভেঙে পড়েছে বাড়ি। আর মনে করা হচ্ছে তার নিচেই চাপা পড়ে রয়েছে প্রচুর মানুষ। ইতিমধ্যেই হাজারের কাছাকাছি মানুষকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি তরফে। ২০০২ সালের পর এত বড় ভূমিকম্প হয়নি এখানে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৫.৯।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে