ইজরায়েলি বিমান হানা, গাজায় ভেঙে পড়ল একাধিক সংবাদমাধ্যমের অফিসের বহুতল

ইজরায়েলি বিমান হানাভেঙে পড়ছে সেই বহুতল যেখানে একাধিক সংবাদ মাধ্যমের অফিস ছিল। —ছবি: ভিডিও থেকে

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ইজরায়েলি বিমান হানা চলছেই গাজায়। একের পর এক বহুতল ধ্বংসের খবর আসছে প্রতিদিন। মৃ্ত্যু হচ্ছে মানুষের। গাজায় নিজের বাড়িতেও স্বস্তিতে ঘুমোতে পারছে না মানুষ। যে কোনও সময় বিমান হানায় নিশ্চিহ্ণ হয়ে যেতে পারে সব। এক জায়গা ছেড়ে অন্য জায়গা, এক বাড়ি ছেড়ে অন্য বাড়ি—কোথাও কোন‌ও নিরাপত্তা আর নেই গাজায়। প্রতিদিন সকালে পরিচিতদের মোবাইলে অন্য পরিচিতের একটাই প্রশ্ন, ‘‘তুমি কি বেঁচে আছ?’’ হ্যাঁ, ঠিক এই পরিস্থিতিতেই বেঁচে রয়েছে হাজার হাজার মানুষ। হারিয়ে গিয়েছে আরও কত।

সোমবার রাত থেকে নতুন করে শুরু হওয়া হামাস ও ইজরায়েলি সেনার লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে কম করে ১৩৯ জনের। তার মধ্যে ৩৯ জন শিশু ও ২২ জন মহিলা।  ইজরায়েলে কম করে ৮ জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে। এখনও অনেক মৃত্যু হিসেবের তালিকাতেই জায়গা করে নিতে পারেনি। তার মধ্যে শনিবার গুড়িয়ে দেওয়া হল গাজার সেই বহুতল যেখানে ছিল আন্তর্জাতিক সব সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের একাধিক অফিস। যার পর গোটা বিশ্ব স্তম্ভিত।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ধ্বংসের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ইতিমধ্যেই। ৫৮ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে দুটো বিস্ফোরণ পর পর। অনেকগুলো বহুতল এবং বাড়িসহ রীতিমতো ঘিঞ্জি একটা জায়গায় বিস্ফোরণ হচ্ছে এবং ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে পুরো এলাকা। ধোঁয়া কাটতেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ, আর তাতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে একটু বহুতল। আর সেই বিল্ডিংয়ের ছিল সব সংবাদ মাধ্যমের অফিস। দেখলেই বোঝা যাচ্ছে স্বাভাবিক সময়ে  এই এলাকা খুবই জমজমাট থাকে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) এবং আ আল জাজিরার অফিস ছিল এই বিল্ডিংয়ে। আগে থেকেই এই বিল্ডিংয়ে আক্রমণের কথা জানিয়েছিল ইজরায়েলি সেনা। যে কারণে বিমান হানার ঠিক এক ঘণ্টা আগে বিল্ডিং পুরো খালি করে দেওয়া হয়। সংবাদ মাধ্যমের অফিসের পাশাপাশি ওই ১২ তলা বাড়িতে অনেক আবাসিক পরিবারও ছিল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ধূলিস্যাৎ হয়ে যায় বাড়িটি। গাজায় নিজেদের অফিস গুড়িয়ে যাওয়ার ভিডিও প্রকাশ করেছে এপি।

এর ঠিক আগেই গাজার একটি উদ্বাস্তু শিবিরে বোম দিয়ে আক্রমণ করা হয়। জেরুজালেম এবং তার আশপাশের এলাকায় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এপি তাঁদের প্রকাশিত খবরে জানিয়েছে, গত ১৫ বছর ধরে এই বাড়িটির টপ ফ্লোরে এপির অফিস ছিল। এই বাড়ির ছাদ থেকে তারা ইজরায়েল-গাজার যুদ্ধ কভার করেছে। সেই তালিকায় রয়েছে ২০০৯ ও ২০১৪-র যুদ্ধও। সেখান থেকে ২৪ ঘণ্টা যুদ্ধের ছবি, ভিডিও রেকর্ড হতে থাকত এপির ক্যামেরায়।

এই ঘটনার পর এপির  প্রেসিডেন্ট এবং সিইও গ্যারি প্রুইত বলেন, ‘‘এতদিন গাজায় কী চলছিল গোটা বিশ্ব তা সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল ছিল না আজকের ঘটনার আগে। আমরা আতঙ্কিত এবং বিস্মিত এটা ভেবে যে ইজরায়েলি সেনা গাজায় এপির  ব্যুরো অফিস এবং অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমের অফিসকে গুড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিতে পারে।’’

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)