অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নোবেল, জগৎসভায় ফের শ্রেষ্ঠ আসনে বাঙালি

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নোবেলঅভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নোবেল

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নোবেল তুলে দিলেন সুইডেনের রাজা ষোড়শ কার্ল গুস্তাফ। স্টকহল‌্মের মঙ্গলবারের এই সন্ধে বাঙালিকে ফের জগৎসভার শ্রেষ্ঠ আসনে বসিয়ে দিল। অভিজিৎও উড়িয়ে দিলেন বাঙালিয়ানার জয়ধ্বজা।

ঘিয়ে রঙা ধুতি-পাঞ্জাবি, পাড়ে জড়ির কাজ, উপরে গলাবন্ধ কালো কোর্ট— খাঁটি বাঙালি পোশাকে এ দিন নোবেল পুরস্কারগ্রহণের মঞ্চে দেখা গেল অভিজিৎকে। আর পাশে বসে সবুজ শাড়ি-লাল ব্লাউজে বাঙালিয়ানাকে সারা ক্ষণ সঙ্গত করে গেলেন তাঁর স্ত্রী এস্থার দুফলো— তিনিও এ বার অভিজিতের সঙ্গেই অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন। সুইডেনের মঞ্চে বাঙালিয়ানাকে গোটা বিশ্বের সামনে উদ্ভাসিত করেই জগৎসভার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার হাতে তুলে নিলেন অভিজিৎ-এস্থার।


আরও খবর পেতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

বছর আটেক আগে অভিজিৎ-এস্থার একটি বই লিখেছিলেন। ‘পুয়োর ইকনমিকস’ নামে সেই বইটিতে ছিল নানান দেশের গরিব মানুষদের গল্প। গরিবদের অভাব, সমস্যা, সংকট, ক্ষুধা, কর্মহীনতা, অপুষ্টি, অসুখবিসুখ, শিক্ষার অভাব… কী ভাবে তাঁরা বাঁচেন, লড়াই করেন, সেই বাঁচার লড়াইটাকে, আসলে বাঁচা-নামক-লড়াইটাকে কী ভাবে একটু এগিয়ে দেওয়া যায়, তারই নানা কাহিনি, সমীক্ষা, বিশ্লেষণ নিয়েই ছিল সেই বই। দুনিয়া-জোড়া দারিদ্রের মোকাবিলায় কী করণীয়, সে বিষয়ে নতুন করে ভাবছিলেন তখন অভিজিৎ-এস্থার এবং তাঁদের সহমর্মীরা।

NOBEL 2019

অভিজিৎ, এস্থার এবং মাইকেল ক্রেমার।

সে দিনের সেই বইয়ে আজকের নোবেল স্বীকৃতির বীজটা ছিল। দরিদ্র মানুষের জীবনযাপনের একটা নিজস্ব অর্থনীতি আছে। খুব মূল্যবান, সমৃদ্ধ অর্থনীতি। তা থেকেই গ্রহণ করা যায় গ্রহণ করতে হবে অত্যন্ত মূল্যবান শিক্ষা, তার পর, সেই শিক্ষা মনে রেখে অর্থশাস্ত্রের ধারণাগুলিকে সদ্ব্যবহার করে খুঁজতে হবে দারিদ্রের সঙ্গে লড়াইয়ের পথ। সে কথাই গত কয়েক দশক ধরে বুঝে এসেছেন অভিজিৎ-এস্থার। লিখেওছেন সে কথা। কাজও করেছেন শুধুমাত্র এই বিষয় নিয়েই। স্টকহল‌্মের সন্ধে আজ তাঁদের সেই ‘পুয়োর ইকনমিকস’কেই স্বীকৃতি দিল। অভিজিৎ-দুফলোর হাতে তুলে দেওয়া হল অর্থানীতির নোবেল।

নোবেল পুরস্কার প্রদানের ভিডিও…

এ দিন ভারতীয় সময় রাত ন’টা নাগাদ অভিজিৎ-এস্থারের হাতে পুরস্কার তুলে দেয় সুইডিশ নোবেল কমিটি। গৌরবময় সেই মুহূর্তে স্টকহল্‌মের অনুষ্ঠানগৃহে হাজির ছিলেন অভিজিতের মা নির্মলা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভাই অনিরুদ্ধ। অভিজিৎদের কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে নোবেল কমিটির তরফে বলা হয়— গত দু’দশকে বিশ্ব জুড়ে জীবনযাপনের  উন্নতি হয়েছে। তবে, রয়ে গিয়েছে বহু বাধাও। আজও বহু শিশু স্কুলছুট হয়ে যায় উন্নয়নশীল দেশগুলিতে। বহু শিশু মারা যাচ্ছে এমন রোগে যা, সহজেই প্রতিকার সম্ভব। আজও বহু কৃষক জৈব সার ব্যবহার করতে পারেন না যা তাঁদের পক্ষেই লাভজনক হতে পারত।  অভিজিৎরা এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজেছেন পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে। দারিদ্রের চরিত্রসন্ধান করেছেন ব্যক্তি হিসেবে দরিদ্রদের বিভিন্নতার কথা মাথায় রেখে।

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়: নোবেল পেয়ে অর্থনীতিতে ফের বিশ্বজয়ী বাঙালি

 

একটা পথ নয়, অনেক পথ রয়েছে হয়তো। এবং সে সব পথের শেষ কোথায়, জানা নেই, জানা যায় বলেও অভিজিৎরা বিশ্বাস করেন না। তাই নোবেলপ্রাপ্তির পরেও সে অনুসন্ধান চলতেই থাকবে।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)