দাউদ ইব্রাহিমের ঠিকানা পাকিস্তান, কবুল করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টি ইসলামাবাদের

দাউদ ইব্রাহিমের ঠিকানা পাকিস্তানদাউদ ইব্রাহিম

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: দাউদ ইব্রাহিমের ঠিকানা পাকিস্তান, এ কথা কবুল করার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিষয়টা অস্বীকার করল ইসলামাবাদ। করাচির অভিজাত এলাকা ক্লিফটনে সৌদি মসজিদের কাছে ‘হোয়াইট হাউস’ নামে একটি বাড়িকেই দাউদের ঠিকানা হিসেবে চিহ্নিত করেছে পাক প্রশাসন— শনিবার পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়। করাচির ডিফেন্স হাউসিং অথরিটির ৩০ নম্বর রাস্তায় ৩৭ নম্বর বাড়ি এবং নুরবাদের পাহাড়ি অঞ্চলে প্রাসাদোপম বাড়ির মালিকও দাউদ, সে কথাও ওই খবরে প্রকাশ করা হয়। পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে এ খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই সর্বত্র হইচই পড়ে যায়। কিন্তু রবিবার ইসলামাবাদ জানিয়ে দিল, দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানে রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে যে খবর ছড়িয়েছে তা ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর।

ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) ২০১৮ সালে পাকিস্তানকে ধূসর দেশের তালিকায় রাখে। ইসলামাবাদকে বলা হয়, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে নিষ্ক্রিয় করার প্রশ্নে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা ২০২০ সালের গোড়ায় জানাতে হবে। সেই ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না-হলে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। করোনা আবহে সেই সময়সীমা কিছু দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। তবে সেই সময়সীমাও শেষের মুখে।

এফএটিএফ-এর কালো তালিকাভুক্ত হলে বহু আন্তর্জাতিক অনুদান পাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে পাকিস্তানের। সেই সম্ভাবনা এড়াতেই ব্যক্তি ও সংগঠন মিলিয়ে মোট ৮৮টি নাম এফএটিএফ-কে জানিয়ে পাকিস্তান দাবি করেছে, এদের আর্থিক লেনদেনে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত ১৮ অগস্ট পাক সরকার একটি নির্দেশিকায় বলেছে, দাউদ ছাড়াও জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদ, জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহার এবং আল-কায়দার উপরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এদের গতিবিধির উপরে কড়া নজর রাখা হয়েছে। কড়াকড়ি বেড়েছে পাক তালিবানের উপরেও।

এখান থেকেই জানা যায় দাউদের পাকিস্তানে থাকার কথা। দাউদ ইব্রাহিমের ঠিকানা পাকিস্তান, সেই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই উল্টো সুর গাইতে শুরু করে ইসলামাবাদ। রবিবার সকালে রেডিয়ো পাকিস্তানের টুইটে লেখা হয়, তালিকাভুক্ত কিছু মানুষ পাকিস্তানে রয়েছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম যে দাবি করছে, পাক বিদেশ মন্ত্রক তা খারিজ করে দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের একটি বিবৃতিও নিজেদের টুইটার হ্যান্ডলে প্রকাশ করে তারা।

সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় বর্তমানে তালিবান, আইসিল (দয়েশ) এবং আলকায়দার যে সমস্ত সদস্যের নাম রয়েছে এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ যাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, গত ১৮ অগস্ট বিদেশ মন্ত্রকের তরফে তাদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। এটা রুটিন প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে দীর্ঘ দিন ধরেই এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে আসছে বিদেশ মন্ত্রক। ২০১৯ সালে শেষ বার এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল।

এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরকার নতুন ধরনের নিষেধাজ্ঞামূলক পদক্ষেপ করতে যাচ্ছে বলে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, যা বাস্তবসম্মত নয়। ওই বিজ্ঞপ্তি দেখে কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আবার দাবি করছে, পাকিস্তান নাকি মেনে নিয়েছে তালিকাভুক্ত কিছু ব্যক্তি (দাউদ ইব্রাহিম) তাদের দেশে রয়েছে, যা ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিমূলক।’’

পাকিস্তান অবশ্য এত দিন দাউদের করাচি-বাসের কথা জোরের সঙ্গেই অস্বীকার করেছে। কিন্তু তালিকায় দাউদের নাম থাকলেও, তার করাচি এবং নুরবাদের বাড়ির ঠিকানা কেন প্রকাশ করা হল তার কোনও ব্যাখ্যা ইসলামাবাদের তরফে দেওয়া হয়নি।

(বিদেশের আরও খবরের জন্য এখানে ক্লিক করুন)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)