ঝ্যাং ইয়েমিং বুঝিয়ে দিলেন, স্বপ্ন দেখবেন বলেই দু’চোখ পেতেছেন

ঝ্যাং ইয়েমিংঝ্যাং ইয়েমিং

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ঝ্যাং ইয়েমিং বিশ্বকে বুঝিয়ে দিলেন, চোখ খুলে স্বপ্ন দেখাটাই জীবনের আসল সত্য। ‘স্বপ্ন সেটা নয় যেটা তুমি ঘুমিয়ে দেখো। স্বপ্ন সেটা যেটা তোমায় ঘুমোতে দেয় না-‘ বলেছিলেন আব্দুল কালাম। আর সেটাকেই সত্যি করে ছাড়লেন টিকটকের সিইও ঝ্যাং ইয়েমিং। শুধু স্বপ্ন দেখার জন্য ছেড়ে দিলেন কোটি টাকার কাজ। আমরা সকলেই দিবাস্বপ্ন দেখি। কিন্তু তাকে এভাবে উপভোগ করতে ক’জন পারে। তবে এটা সত্যি স্বপ্ন সেটাই হওয়া উচিৎ যেটা তুমি জেগে দেখ। যা আরও ভাল করে করার জন্য নিজের সংস্থা থেকেই অবসর নিয়ে ফেললেন এত কম বয়সে। ২০১২-তে তিনি শুরু করেছিলেন ‘টিকটক’। তাঁর পছন্দের দুটো বিষয় বই পড়া আর দিবাস্বপ্ন দেখা। আর সেটা তিনি কাজ করতে গিয়ে করতে পারছিলেন না বলেই তিনি মনে করেন।

তবে তাঁর সম্প্রতি মনে হতে শুরু করে তিনি এই দায়িত্ব সামলানোর জন্য যথেষ্ট নন। তাঁর সেই প্রতিভা নেই। শুধু তাই নয়, তিনি একা থাকার যথেষ্ট সময় পাচ্ছে না নিজের পছন্দের কাজগুলো করার জন্য। যার মধ্যে রয়েছে পড়া আর সেই পুরনো দিবাস্বপ্ন। এক চিঠিতে তিনি তাঁর কর্মীদের সেই কথাই জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘‘সত্যিটা হল, আমার সেই সব স্কিল নেই যা একজন ভাল ম্যানেজার হয়ে উঠতে সাহায্য করে। আমার অনেকবেশি আগ্রহ সংস্থা বা বাজারের নীতি নিয়ে বিশ্লেষণ করায়। পাশাপাশি আমি খুব সামাজিক নই। একা একা কিছু করতে পছন্দ করি যেমন অনলাইন থাকা, বই পড়া, গান শোনা এবং দিবাস্বপ্ন দেখা কী কী হতে পারে সেটা নিয়ে।’’

দিবাস্বপ্ন নিয়ে বলতে গিয়ে ঝ্যাং বলেন, ‘‘আমি সেটা নিয়ে ভাবতে ভালবাসি যা এখনও সম্ভাব্য হয়ে রয়েছে। দীর্ঘ সময়ের জন্য আমি আমার অনলাইন স্ট্যাটাসে রেখেছিলাম ডেড্রিমিং। আমি ভাগাভাগি করছি না কিন্তু আমি সেই সব নিয়ে ভাবতে ভালবাসি যা হতে পারে কখনও সেটাকে মানুষ উদ্ভট কল্পনা বলে ব্যাখ্যা করেন।’’

এই মানুষটা সেদিন দিবাস্বপ্ন দেখেছিলেন বলেই বিশ্বের সেরা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছিল। যা সাধারণ মানুষ থেকে তাবড় তাবড় বিখ্যাত মানুষরাও চুটিয়ে ব্যবহার করেছেন গত লকডাউনে। ক্রিকেটার থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তাঁদের নিজেরে ভিন্ন প্রতিভাও খুঁজে পেয়েছেন এই টিকটকের মাধ্যমে।

ঝ্যাং তাঁর চিঠিতে বার বার উল্লেখ করেছেন তিনি কী কী পারেন না যা একটি সংস্থা চালাতে গেলে প্রয়োজন হয়। তার মধ্যে একটি টেকনিক্যাল বিষয়। তিনি সংস্থা ছাড়ার সময় নিজের সঙ্গে ৪৪ বিলিয়ন ডলার নিয়ে গিয়েছেন অবসরের প্রাপ্য হিসেবে। সংস্থার দায়িত্ব তিনি তুলে দিয়েছেন লিয়াং রুবোর হাতে। বাইটডান্স ও টিকটকের সহপ্রতিষ্ঠাতা এই লিয়াং।

এই বছরের শেষেই তিনি সংস্থার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে তা থেকে বেরতে কিছু সময় লাগবে। সে কারণে এই সময় টুকু ন‌েওয়া। এই মুহূর্তে রুবো সংস্থার এইচআর-এর হেড।

ঝ্যাংয়ের জন্ম হয় ১৯৮৩-র ১০ এপ্রিল। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করার পর তিনি একটি সংস্থায় ওয়েবসাইট তৈরি করার কাজ শুরু করেন। তার পরই ডাক আসে মাইক্রোসফট থেকে। ২০০৮-এ যোগ দেন বিশ্বের সব থেকে বড় সফটওয়্যার সংস্থায়। কিন্তু তাঁর মতো মানুষের পক্ষে ওই গতে বাঁধা জীবনে আটকে থাকা সম্ভব ছিল না। এক বছরেই মাইক্রোসফটকেও বিদায় জানান তিনি। এর পরই তৈরি হয় বাইটডান্স।

ঝ্যাংয়ের দিবাস্বপ্ন নতুন ফুল ফোটাবে নিশ্চিত। ২০০৯-এ চাকরী ছাড়ার পর ২০১২-তে তৈরি হয়েছিল বাইটডান্স। সবে বয়স ৩৮। হাতে এখনও অনেক সময়। এই স্বপ্ন দেখা যেতেই পারে ঝ্যাংয়ের হাত ধরে বিশ্ব আবার নতুন কিছু দেখতে পাবে অদূর ভবিষ্যতে।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)