একুশে জুলাইয়ের সভা, রাত পোহানোর অপেক্ষায় ভিক্টোরিয়া হাউসের মঞ্চ

একুশে জুলাইয়ের সভাএকুশে জুলাইয়ের সভামঞ্চ প্রস্তুত। শুক্রবার রাতে তোলা নিজস্ব চিত্র।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: একুশে জুলাইয়ের সভা ধর্মতলার মোড়ে। তার জন্য কাতারে কাতারে মানুষ এসেছেন গোটা রাজ্য থেকে। আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শোনার অপেক্ষায় তাঁরা। রাত পোহালেই ধর্মতলামুখী হবে মানুষের ঢল। প্রস্তুত ধর্মতলার মোড়ে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনের মঞ্চ।

১৯৯৩ সালে এমনই এক একুশে জুলাই মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিল যুব কংগ্রেস। সেই অভিযানেই গুলি চালায় বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশ। মারা গিয়েছিলেন ১৩ জন। সেই শহিদদের স্মরণেই প্রত্যেক বছর এই দিনে তৃণমূল সভা করে। আগামিকাল সোমবার সেই শহিদ স্মরণে সভার ২৫ বছর পূর্তি। কাজেই এই সভার একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। পাশাপাশি আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে এটাই তৃণমূলের শেষ শহিদ স্মরণে সভা। কাজেই, সেখান থেকে লোকসভা নির্বাচন সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও যে মমতা দেবেন তা জানেন কর্মীরা।

বেশ কয়েক দিন ধরেই ধর্মতলার মোড়ের কাছে ওই মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। এ বারের মঞ্চ বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনীওয়ালা। তারও একটি কারণ রয়েছে। গত ১৬ জুলাই মেদিনীপুরে বিজেপির এক সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ চলাকালীন মূল মঞ্চের সামনে দর্শকদের জন্য তৈরি করা প্যান্ডেলের একটা বড় অংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। তাতে প্রায় ৯০ জন মানুষ জখম হয়েছিলেন। সেই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই মঞ্চ নির্মাণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন উদ্যোক্তা এবং পুলিশ-প্রশাসন।

দেখুন সভামঞ্চের ভিডিয়ো। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় আমাদের প্রতিনিধির তোলা

পাশাপাশি মাসখানেক আগে বিশ্বভারতীর সমাবর্তনের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেওয়ার সময় এক ব্যক্তি তাঁর একেবারে কাছে পৌঁছে যান। তখনই রাজ্যে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার পর আর কোনও রকমের ঝুঁকি নিতে চায় না কলকাতা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর সভা উপলক্ষে তাই প্রচুর সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এমনটা প্রতি বার লাগানো হলেও এ বার প্রথম মঞ্চের তলায় সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

আহত হয়েছিলেন মোদীর সভায়, ক্ষতিপূরণ মিলল মমতার তহবিল থেকে

তা ছাড়া মূল মঞ্চ থেকে দর্শকদের বসার জায়গা অন্যান্য বারের তুলনায় আরও আট ফুট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

একুশের জুলাইয়ের সভা

ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনের মঞ্চ। অপেক্ষা সকালের… নিজস্ব চিত্র।

সভার আগের দিন প্রায় গোটা সময়টাই ভিক্টোরিয়া হাউস চত্বরে থেকে মঞ্চের কাজের তদারকি করেছে‌ন দলের রাজ্য সম্পাদক সুব্রত বক্সী। সারা দিন কলকাতার পুলিশের কর্তা-ব্যক্তিরাও সভাস্থল বারে বারে ঘুরে দেখেছেন। সন্ধ্যায় সভাস্থলে আসেন খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং শিক্ষামন্ত্রী তথা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দেখা যায় বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও।

একুশে জুলাইয়ের সভা

সভা উপলক্ষে ফোম কেটে ফুলের সাজ। শিল্পী রাখাল দাস। সভাস্থলে তোলা নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামিকাল বেলা ১১টা থেকে অনুষ্ঠান। মমতা মঞ্চে উঠবেন বেলা ১টা নাগাদ। একুশের সভা উপলক্ষে আগামিকাল গোটা মধ্য কলকাতা-সহ বৃহত্তর কলকাতার একটা বড় অংশ কার্যত অবরুদ্ধ থাকবে। বিভিন্ন রাস্তায় যানচলাচল ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।