সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী প্রয়াত, করোনার মধ্যেই দু’বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট

সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী প্রয়াতশ্যামল চক্রবর্তী

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী প্রয়াত হলেন বৃহস্পতিবার দুপুরে। পিয়ারলেস হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত শ্যামলবাবুর চিকিৎসা চলছিল। আজ দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী প্রয়াত হওয়ায় শোকপ্রকাশ করেছেন তাঁর দলের একাধিক নেতা, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী-সহ অনেকেই। যে হেতু শ্যামলবাবু করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাই তাঁর শেষকৃত্য প্রোটোকল মেনেই হবে বলে সিপিএমের তরফে জানানো হয়েছে।

গত মাসের শেষ দিকে জ্বর এবং বুকে কনজেশন নিয়ে শ্যামলবাবু ভর্তি হয়েছিলেন উল্টোডাঙার একটি নার্সিংহোমে। এর পর গত ৩০ জুলাই শ্যামলবাবুর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরের দিনই তাঁকে ইএম বাইপাসের ধারে পিয়ারলেস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে তাঁকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ৩ অগস্ট থেকে ভেন্টিলেশনেও রাখা হয়। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। কিডনির সমস্যাও ছিল। আজ সকালেও তাঁর ডায়ালিসিস হয়। এর পর দু’বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় শ্যামলবাবুর। প্রথম অ্যারেস্ট সামলে নিলেও, পরের অ্যাটাকে আর ফেরানো যায়নি সিপিএমের এই নেতাকে।


করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন

অজয় সরকার শ্যামলবাবুর চিকিৎসক। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘প্রথমে শ্যামলবাবুর নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। তার পর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ওঁর কো-মর্বিডিটিও ছিল। হাসপাতালে যখন নিয়ে আসা হয়, তখন ক্রিয়েটিনিন বেশি ছিল। তবে গত দু’দিন তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল। ভেন্টিলেশনে ছিলেন। আজ প্রথমে একটা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। কিন্তু সেটার পর সামলে নিয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় অ্যারেস্টের পর তাঁকে আর ফেরানো গেল না।’’

শ্যামলবাবুর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘‘রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী সিপিআই (এম) নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শ্যামলবাবু সিটু-র রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। রাজ্যসভার সাংসদও নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতের ক্ষতি হল। আমি শ্যামল চক্রবর্তীর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’’

লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীও শোকপ্রকাশ করেছেন শ্যামলবাবুর মৃত্যুতে। তিনি বলেন, ‘‘কমিউনিষ্ট নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর মৃত্যু আমাকে অত্যন্ত বেদনাহত করল। তিনি প্রকৃত অর্থে একজন জনদরদি শ্রমিক নেতা ছিলেন। আপাদমস্তক ভদ্র ও মধুর স্বভাবের মানুষ। তাঁর স্বজন হারানো পরিবারের সকলের জন্য সমবেদনা জানাই।’’

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, রাজ্যের বামপন্থী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন শ্যামলদা। ছাত্র আন্দোলনে যেমন ছাপ ফেলেছিলেন, তেমনই সর্বভারতীয় স্তরে শ্রমিক আন্দোলনেও প্রথম সারির নেতা ছিলেন। অসুস্থ হলেও তিনি যুক্ত ছিলেন নানা কর্মসূচির সঙ্গে। বামপন্থী আন্দোলনের অপূরনীয় ক্ষতি হল।”


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)