ভালো কাজের কোনও বিকল্প হয় না। আবার ভালো কাজ করতে হলে পতে হয় অনেক সমালোচনার মুখেও। তবে সব বাধাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যে বা যাঁরা এগিয়ে যেতে পারেন তাঁরাই সাফল্য পায়। এটাও এমন একটা অভিনব উদ্যোগের সাফল হওয়ার শুরুর প্রথম পদক্ষেপ বলা যেতে পারে। মাত্র বছর দেড়েক আগের কথা। এমন একটি জায়গায় এমন একটি জিনিস তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন কয়েকজন মিলে যা এখানে অতীতে ভাবা হয়নি। হ্যাঁ, একদল ক্রীড়া সাংবাদিকদের ক্লাব, কলকাতা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাব। যাঁদের প্রতিটা দিন কাটে খেলার সঙ্গে। তাঁরাই একদিন পরিকল্পনা করলেন, খেলার দুনিয়ার স্মৃতিকে যদি ধরে রাখা যায় চার দেওয়ালের মধ্যে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাব (সিএসজেসি)-এর এই স্বপ্নকে বাস্তবের রূপ দিতে পাশে দাঁড়িয়ে পড়ল আমার ট্রি গ্রুপ। শুরু হয়ে গেল প্রস্তুতি। আর সেই প্রস্তুতির প্রথম ধাপে সোমবার পা রাখল “Sports Museum And Library”।
এখানেও একটা টুইস্ট আছে। খবরের দুনিয়া, বিশেষ করে খেলার দুনিয়া যতই শহর কেন্দ্রিক হোক না কেন, এই ক্রীড়া সংগ্রহশালা কিন্তু গড়ে উঠেছে কলকাতা শহর থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের তীরে। মন্দারমণি মানেই কলকাতার মানুষদের কাছে উইক এন্ড ডেস্টিনেশন। সমুদ্রের পাড় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা হাইপ্রোফাইল সব রেসর্ট এক কথায় শান্তির ঠিকানা। আর তেমনই এক রেসর্টে গেলে এখন দেখা। যবে এই স্পোর্টস মিউজিয়াম। আমার ট্রি গ্রুপ এং কলকাতা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে মন্দারমণিতে গড়ে উঠেছে এই মিউজিয়াম।
প্রায় দেড় বছর আগে এই রেসর্টে ঢোকার মুখেই ভিত্তিপ্রস্থ স্থাপন করে গিয়েছিলেন প্যারালিম্পিয়ান দীপা মালিক। সেবার হুইল চেয়ারে বসেই সিএসজেসির পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ মাতিয়ে গিয়েছিলেন এই মহিলা ক্রীড়াবিদ। আর এদিন আরও দুই মহিলা ক্রীড়াবিদ প্রাক্তন অ্যাথলিট জ্যোতির্ময়ী শিকদার ও প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ শান্তি মল্লিকের হাতেই উদ্বোধন হয়ে গেল সেই মিউজিয়ামের। সঙ্গো যোগ দিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লবের বর্তমান ফুটবলার শৌবিক চক্রবর্তী। ছিলেন সিএসজেসির সভাপতি সুভেন রাহা, আমার ট্রি গ্রুপের কর্ণধার প্রবীর রায়চৌধুরী ও আবীর রায়চৌধুরী। ক্রীড়াবদরা যেমন এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেন তেমনই উদ্যোক্তারা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলেন, এই কর্মযজ্ঞকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।
মিউজিয়ামের ঘরে ঢুকলে চমকে যেতে হবে। ছোট্ট জায়গায় ধরে ফেলা গিয়েছে অনেকটা গ্রীড়া বিশ্বকে। তা যে ক্রমশ বাড়বে তা নিয়েকোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে যা সম্ভার রয়েছে এই মিউজিয়ামে তাও লোভনীয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটার আন্দ্রে রাসেলের কেকেআর-এর হেলমেট, কেকেআর-এর দুই মরসুমের (২০২৩ ও ২০২৪) ক্রিকেটারদের সই করা জার্সি, মহেন্দ্র সিং ধোনির পুনে সুপার জায়ান্টের জার্সি, বীরেন্দ্র সেহবাগের সই করা টুপি, ঋদ্ধিমান সাহার সই করা গ্লাভস আরও অনেক কিছু। তবে কি শুধু ক্রিকেট? একদমই না। এই তালিকায় রযেছেন হকির সোনা জয়ী অলিম্পিয়ান গুরবক্স সিংয়ের হকি স্টিক, অলিম্পিয়ান দীপা কর্মকারের ভারতীয় জার্সি, প্রথম ভারতীয় মহিলা এভারেস্ট জয়ী বাচেন্দ্রী পালের সই করা শার্ট, ইংলিশ চ্যানেল জয়ী বুলা চৌধুরীর সই করা টুপিও রয়েছে তালিকায়।
আর পুরোটা জানতে হলে একবার সমুদ্র দেখার পাশাপাশি ঢুকে পড়তেই হবে এই মিউজিয়ামে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল চরটে পর্যন্ত সাধারণের জন্য খোলা থাকবে এই মিউজিয়াম। যেখানে ক্রীড়াপ্রেমীরা চোখের সামনে দেখতে পাবেন তাঁর পছন্দের ক্রীড়াবিদদের ব্যবহার করা জিনিস। যার সঙ্গে জরিয়ে রয়েছে অনেক লড়াই, সাফল্য, ব্যর্থতার কাহিনি। যা পরবর্তী প্রজন্মকে প্রেরণা দেবে সেটাই আশা।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google