স্বাস্থ্য বিপ্লব শেষ, মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ৭ দিন পর কাজে যোগ জুনিয়র ডাক্তারদের

স্বাস্থ্য বিপ্লব শেষনবান্নে বৈঠক চলছে তখন।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: স্বাস্থ্য বিপ্লব শেষ, ৭ দিনের মাথায় আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তাঁরা কাজে যোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তার পর আন্দোলনের সূচনাস্থল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে এসে তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন। আর সেই ঘোষণার মাধ্যমেই ইতি টানা হল তাঁদের আন্দোলনে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁরাই গিয়ে দেখা করবেন বলে রবিবার জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বৈঠক কোথায় হবে, তার দায়িত্ব তাঁরা মমতা উপরেই ছেড়ে দিয়েছিলেন। শেষে স্থির হয়, নবান্নর ১৪ তলার সভাকক্ষেই বৈঠক হবে সোমবার বিকেল তিনটেয়। কিন্তু, সেই বৈঠক সংবাদমাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করার দাবি তোলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। না হলে বৈঠকে যোগ দেবেন না বলেও জানিয়ে দেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে অরাজি থাকলেও পরে লাইভ সম্প্রচারে সম্মতি দেয় নবান্ন। এর পর এ দিন বিকেলে সরকারি বাসে করে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ৩১ জন প্রতিনিধিকে নবান্নে নিয়ে যাওয়া হয়। সাড়ে তিনটের মধ্যেই জুনিয়র ডাক্তারদের ওই প্রতিনিধি দল নবান্নে পৌঁছে যায়।

বিকেল চারটে নাগাদ বৈঠক শুরু হয়। জুনিয়র ডাক্তারদের ৩১ জন প্রতিনিধি, দুই প্রবীণ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় ও অভিজিৎ চৌধুরী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ওই বৈঠকে ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মলয় দে, স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাস্থ্যসচিব রাজীব সিন্‌হা, ডিজি বীরেন্দ্র, কলকাতা পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)। সরাসরি সম্প্রচার হয় সেই বৈঠকের।

আরও পড়তে…
মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি হতে জুনিয়র ডাক্তাররাই এ বার নবান্ন যাচ্ছেন

ওই বৈঠকের শুরুতেই অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য নামে এক প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘বাধ্য হয়ে, অনিচ্ছা সত্ত্বেও আন্দোলনে যেতে হয়েছে। সাধারণ মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু আমরা নিরূপায়। কাজে ফিরতে চাই। নির্ভয়ে কাজ করতে চাই। হামলাকারীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। আপনার উপর প্রবল আস্থা রয়েছে।’’ এর পর একে একে প্রায় প্রত্যেকেই কর্মক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে শোনান। জুনিয়র ডাক্তারদের নানা ধরনের অভিজ্ঞতাও ওই বৈঠকে শেয়ার করেন তাঁরা। দেন বিভিন্ন প্রস্তাবও। মুখ্যমন্ত্রী গোটাটাই ধৈর্য ধরে শোনেন। পরামর্শ দেন। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এই সব ক্ষেত্রে সরকারের কাছে কী কী প্রত্যাশা সে সম্পর্কে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ও পরামর্শ শোনেন মুখ্যমন্ত্রী।

ঘণ্টা দেড়েকের বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের ওই প্রতিনিধি দলের উদ্দেশে বলেন, ‘‘লক্ষ্মী ছেলেরা আমার। কাজে যোগ দাও।’’ জুনিয়র ডাক্তাররাও প্রতিশ্রুতি দেন, তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। তবে সেটা নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে গিয়েই ঘোষণা করবেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ওই প্রতিনিধি দল সেই বাসে করেই ফেরে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে বাকি সতীর্থদের সঙ্গে দেখা করে জিবি বৈঠকে বসে। তার পর মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)