মায়ের কোল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ল ছোট্ট রাজদীপ, আর ফেরা হল না বাড়ি

মায়ের কোল থেকে রাস্তায়

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: মায়ের কোল থেকে রাস্তায় পরে গেল ছেলেটি। মায়ের সঙ্গে আনন্দ করেই বাজার করতে বেরিয়েছিল ছোট্ট ছেলেটি। বয়স মাত্র দেড় বছর। মায়ের সঙ্গেই অটোতে উঠেছিল। প্রথমে কোলে থাকলেও পরে মায়ের কোল থেকে নেমে সামনে দাড়ায় ছোট্ট ছেলেটি। হাতে তখন চিপসের প্যাকেটেই তার নজর। হঠাৎই একটা বাঁকে অটো থেকে বাইরে ছিটকে গেল রাজদীপ। তার পরই সব শেষ আর বাড়ি ফেরা হল না পরিবারের আদরের ছেলেটির।

মঙ্গলবার ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল বরাহনগর। টবিন রোড-প্রমোদনগর রুটের অটোতে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে উঠেছিলেন রিঙ্কি সর্দার। ছেলেকে নিয়েই গিয়েছিলেন বাজার করতে বরাহনগরের বঙ্গলক্ষী মোরের বাজারে। অটো ধরেছিলেন বাড়ি ফেরার জন্য। বাড়ির কাছে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিলেন। কিন্তু ফিরতে হল একা ছেলের নিথর দেহ নিয়ে।

ঘটনাটি ঘটে অক্ষয়কুমার মুখার্জি রোডের বিবেক মোরে। নোয়াপাড়া বীরেশ্বরনগরের বাসিন্দা রিঙ্কি সর্দার হাত ভর্তি বাজারের ব্যাগ নিয়েই অটোতে উঠেছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর সহযাত্রীরা। সেই অবস্থায় মায়ের কোলেই বসেছিল ছেলে। কিন্তু বিবেক মোরের সামনে কাছাকাছি যখন পৌঁছয় তখন কোল থেকে নেমে সামনে দাড়ায় রাজদীপ। হয়তো আলগা হয়ে গিয়েছিল রিঙ্কির হাত। চলন্ত অটোতে টাল সামলাতে পারেনি ছেলে। ছিটকে যায় মায়ের কাছ থেকে। অভিযোগ উঠছে অটোর দৌরাত্ম নিয়ে। প্রশ্ন উঠছে অটোর অনিয়ন্ত্রিত চলাচল নিয়েও। কিন্তু এক্ষেত্রে কতটা অটোর ভূমিকা ছিল সেটাও প্রশ্ন। হয়ত শক্ত করে ধরা থাকলে এমনটা হত না। যা হাতে জিনিস থাকার জন্য পারেননি রিঙ্কি।

মারা গেলেন ডিএমকে সুপ্রিমো এম করুণানিধি

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি ওখান দিয়েই যাচ্ছিলেন। তাঁর চোখের সামনেই ঘটে ঘটনা। আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে দেখেন রাস্তায় পড়ে রয়েছে বাচ্চাটি। অটোটি একটু এগিয়েই দাড়িয়ে পড়েছে। বাচ্চাটির তখনও প্রাণ ছিল। এমনটা হয়ে যাবে প্রত্যক্ষদর্শীরা কেউ ভাবেননি। কারণ পড়ে গিয়ে কাঁদছিল বাচ্চাটি। স্থানীয় লোকেরাই বাচ্চাটিকে হাসপাতালে পাঠায়। বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিতে নিতেই মৃত্যু হল রাজদীপের। নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে ডাক্তাররা। হাসপাতাল জানিয়েছে বাইরে থেকে শিশুটির শরীরে কোনও আঘাত ছিল না। কিন্তু মাথায় রক্তক্ষরণ ও মেরুদন্ডে আঘাতই মৃত্যুর কারণ বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা কেউই অটোর গতি নিয়ে কোনও অভিযোগ তোলেননি। বা সেই অটো যে যাত্রীরা ছিলেন তাঁরাও অটোর কোনও দোষ দেখছেন না। কারণ ওই ঘিঞ্জি ও অলিগলির রাস্তায় খুব জোড়ে অটো চালানো সম্ভব নয়। যে কারণে অটোর বেপরোয়া গতিকে কোনও ভাবেই এই দুর্ঘটনার জন্য অভিযুক্ত করা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন ওই অটোরই যাত্রী। আসলে ওই ছোট্ট বাচ্চার হাত ধরা ছিল না। তাই বাঁকের মুখে টাল সামলাতে পারেনি রাজদীপ। যদিও রাজদীপের মায়ের দাবি আচমকা ব্রেক কষায় এই দুর্ঘটনা। অটোচালকের বিরুদ্ধে ২৭৯ ও ৩০৪এ ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। যেখানে রয়েছে বেপরোয়া অটো চালানো এবং গাফিলতির জন্য মত্যু। অটো চালক ভোলা দত্তকে আত্মসমর্পন করার নির্দেশ দিয়েছে বরাহনগর থানা