রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি জল ছাড়ার কারণেই, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী-মুখ্যসচিবের

রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি জল ছাড়ার কারণেই তৈরি হয়েছে। শুক্রবার এমন অভিযোগই করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একা মুখ্যমন্ত্রী নন, এ দিন বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে একই অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।

এ দিন সকালে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর নিশানায় ছিল কেন্দ্র। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) রাজ্যকে না জানিয়েই জল ছেড়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘‘না জানিয়ে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া অপরাধ। এ জন্যই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ তিনি তাঁর পুরনো তত্ত্ব ‘ম্যানমেড বন্যা’র তত্ত্বও এ দিন তুলে ধরেছেন। মমতা বলেন, ‘‘কত বার বলেছি না বলে জল ছাড়বেন না। বলতে বলতে হতাশ হয়ে যাচ্ছি। না জানিয়ে রাত ৩টের সময় যদি জল ছেড়ে দেয়, তা হলে তো মানুষ ঘুমন্ত অবস্থাতেই ভেসে যাবে। এটা পাপ। এটা অপরাধ। আগে থেকে জানলে তো আমরা মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারি।’’

রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে একই সুরে অভিযোগ করেন। তিনি জানান, ঝাড়খণ্ড থেকে রাত ৩টে নাগাদ ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টায় আরও বাড়িয়ে এক লক্ষ ৪৫ হাজার কিউসেক করা হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয়েছে বহু এলাকা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাও নামাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, দু’মাসের মধ্যে দু’টি বড় বড় বন্যা পরিস্থিতির মুখে পড়েছে রাজ্য। এই অবস্থায় রাজ্য বন্যা সামলাতে সব রকম পদক্ষেপ করছে। এক একটি জেলার পরিস্থিতি দেখার দায়িত্ব রাজ্যের এক এক জন মন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।

একটানা বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের এখাধিক জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বেড়েছে নদীগুলির জলস্তরও। এর মধ্যে মাইথন, পাঞ্চেত, ডিভিসি জলাধার থেকে জল ছাড়ার নদীগুলি ফুলে ফেঁপে উঠেছে। প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং বাঁকুড়ায়। মুখ্যসচিব দাবি, বন্যায় রাজ্যের ২২ লক্ষের বেশি মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন। দামোদর, দ্বারকেশ্বর, রূপনারায়নের জল বিপদ সীমার অনেক উপর দিয়ে বইছে। আসানসোলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। নানুরও পুরোপুরি জলমগ্ন। তবে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার মূল্যায়ন জল নামার পরেই করা যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)