মাধ্যমিকে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরের সৌগত দাশ, পেল ৬৯৪

মাধ্যমিকে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরের সৌগত দাশমাধ্যমিকে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরের সৌগত দাশ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মাধ্যমিকে প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরের সৌগত দাশ । ভগবানপুর থানার প্রত্যন্ত গ্রাম ইলাসপুরের ছেলে সৌগত দাশ এ বছর মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে। ৭০০-র মধ্যে ৬৯৪ নম্বর পেয়েছে সে। ছোট থেকেই জেদি এবং মেধাবী সৌগত পড়াশোনায় বরাবর বাকিদের থেকে এগিয়ে। এমনটাই জানিয়েছেন তার বাবা ভরতকুমার দাশ। ছেলের স্কুল মহম্মদপুর দেশপ্রাণ বিদ্যালয়েই অঙ্কের শিক্ষক তিনি। আর সৌগতর মা শ্রাবণী জানা দাশ স্বাস্থ্যকর্মী। সৌগতের দাদা সৌরভ দাশ ওড়িশায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন।

সৌগতের প্রাপ্ত নম্বর— ইংরেজিতে ৯৯, বাংলায় ৯৭, অঙ্কে ১০০, জীবনবিজ্ঞানে ১০০, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯৯ ও ভূগোলে ১০০। বিজ্ঞানের বিষয়গুলিই তার বেশি পছন্দের। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় সৌগত। অজ গাঁয়ের মানুষ যাতে চিকিৎসা পরিষেবাটুকু পায়, সে জন্যই তার এই লক্ষ্য। সৌগত বলছে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়।

পাল্টে গেল কিলোগ্রাম, তবে পরিমাণে বদল হবে না

সৌগতের সাফল্যের মূল মন্ত্র ছিল নিবিড় মনোযোগ এবং খুঁটিয়ে বই পড়া। স্বভাবে লাজুক কৃতী ছাত্র জানাল, দিনে গড়ে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পড়াশোনা করত সে। সিলেবাসের বাইরে একাধিক রেফারেন্স বই পড়ত। পড়ার পাশাপাশি লেখার দিকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছে। পাঁচজন গৃহশিক্ষক ছিল সৌগতের। বাবার কাছে অঙ্ক করেছে সে।

কৃতী ছাত্রের নেশা হল ছবি আঁকা। পড়ার ফাঁকে অবসর পেলেই রং-পেন্সিল আর আঁকার খাতা হয়ে ওঠে তার সঙ্গী। ছবি আঁকায়  বহু পুরস্কারও পেয়েছে সৌগত। টিভি দেখাও চলে। ভাল লাগে রেসলিং দেখতে। পছন্দ মোবাইলে গেম খেলা।

সৌগতের বাবা-মা-দাদা সবাই দেশপ্রাণ স্কুলে পড়েছেন। আর সৌগতের দাদু সিতাংশুশেখর জানা ছিলেন দেশপ্রাণ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। সৌগতর বাবা গরিব পরিবারের ছেলে ভরতবাবু এক সময় বিঁড়ি বেঁধে সেই টাকায় নিজের পড়ার খরচ চালিয়েছেন। জেদের জোরেই অঙ্কের শিক্ষক হয়েছেন তিনি। ছেলেদেরও বুঝিয়েছেন, পড়াশোনা মানুষকে শক্তি জোগায়। ভরতবাবু বললেন, ‘‘সৌগতের সাফল্যে আমরা সবাই খুশি। ওকে লড়াইয়ের সাহস জুগিয়েছি। বাকি কাজটা ও নিজেই করেছে।’’

সৌগতের কৃতিত্বে শুধু পরিবার-পরিজন নয়, তার স্কুল, গ্রামের মানুষ সকলেই গর্বিত। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রঞ্জন গিরি বলেন, ‘‘সৌগত মেধা তালিকায় থাকবে সে ব্যাপারে নিশ্চিতই ছিলাম। তবে একেবারে প্রথম হওয়ায় আমরা দারুণ খুশি। ও আমাদের গর্ব।’’ আর ভরতবাবু বলছেন, ‘‘ভেড়ি-কাণ্ডে খুনের ঘটনায় যে ভাবে আমাদের এলাকার দুর্নাম ছড়িয়েছিল, সেটা হয়তো এ বার ঘুচবে।’’

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)