বন্ধ লোকাল ট্রেন, মেট্রো ৫০ শতাংশ, কোভিড সামলাতে ময়দানে মমতা

মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: বন্ধ লোকাল ট্রেন, মুখ্যমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নিয়েই কোভিড সামলাতে নেমে পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবন থেকে সরাসরি চলে গেলেন নবান্নতে। সেখানেই তাঁকে দেওয়া হল গার্ড অব অনার। তার পরই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি সামলাতে দীর্ঘ আলোচনা চলে। সেখান থেকেই কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। পুরোপুরি লকডাউনের পথে এখনই হাঁটছে না রাজ্য বলে জানিয়ে দিলেন তিনি। তবে যে নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল তা আবার দখলে আনল রাজ্য সরকার। নেওয়া হল বেশ কিছু সিদ্ধান্ত। সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি দিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সবার আগে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল লোকাল ট্রেন। হাওড়া ও শিয়া‌লদহ শাখায় প্রচুর রেলকর্মী করোনায় আক্রান্ত। তার পর ট্রেন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে যা দাঁড়াল লোকাল ট্রেনের ভিড় আরও অনেকটা বেড়ে গেল। যার ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর প্রবণতাও স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে গিয়েছি‌ল। সেকারণে বৃহস্পতিবার থেকেই লোকাল ট্রেন পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হল। অন্য দিকে মেট্রো রেল চলবে ৫০ শতাংশ।

সরকারি অফিসের পাশাপাশি  প্রাইভেট সেক্টরকেও ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে কোনও অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি লোক থাকতে পারবেন না। তার জন্যও আগাম অনুমতি নিতে হবে। বন্ধ করা হল শপিং মল, সুইমিং পুলসহ একগুচ্ছ জায়গা। সরকারি বাহন চলবে ৫০ শতাংশ। এদিকে বাজার খোলা রাখার বিষয়ে কিছুটা সময়ের পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমে ছিল সকাল ৭-১০টা এবং বিকেল ৩-৫টা পর্যন্ত খোলা। এদিন জানানো হল সকালের সময় না বদল হলেও বিকেলের সময় বদলে ৫-৭ করা হয়েছে।

রাজ্যের বাইরে থেকে এলে বিমানে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ ফল জরুরি। তবে চলবে র‍্যানডম পরীক্ষা। কেউ পজেটিভ হলে তাঁকে ১৪ দিনের কোয়রান্টিন করা হবে। যার দায়িত্ব থাকবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের। রাজ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। মাস্ক ছাড়া কেউ রাস্তায় বেরলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খোলা থাকবে অনলাইন শপিং ব্যবস্থা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যে অনেক ভ্যাকসিন প্রয়োজন তার কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না কেন্দ্র থেকে। এদিনের চিঠিতে সেই কথা আরও একবার জানানো হয়েছে। বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি থেকে অক্সিজেন এনে ব্যবহার করা হচ্ছে কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে। বাড়ানো হয়েছে হাসপাতাল বেডের সংখ্যা।

এদিকে, রাজ্যে যে হিংসা ছড়াচ্ছে তা নিয়েও কড়া পদক্ষেপের কথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শক্ত হাতেই তার মোকাবিলা করা হবে বলে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ সেই দিকে নজর রাখছে। সেখানে বেশ কিছু রদবদলও করা হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন যা যা পরিবর্তন করেছিল তাঁদের অনেককেই সেই পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন পদও পেয়েছেন কেউ কেউ।

মুখ্যমন্ত্রীত্বের হ্যাটট্রিক করে করোনা ও সন্ত্রাস রোখার পথে প্রথম পদক্ষেপ নিয়ে ফেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)