অচেনা বাইকচালককে এতগুলো টাকা দিয়ে এ ভাবে পাশে দাঁড়ালেন এই পুলিশকর্মী!

অচেনা মানুষের পাশে এ ভাবে দাঁড়ানো যায়?অচেনা মানুষের পাশে এ ভাবে দাঁড়ানো যায়?

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: অচেনা মানুষের পাশে এ ভাবে দাঁড়ানো যায়? গোটা দেশ জুড়ে যেখানে পুলিশের ভূমিকা অনবরত সমালোচিত হয়, সেখানে দাঁড়িয়ে এই প্রশ্নটা তুলে দিয়েছেন এ রাজ্যেরই এক পুলিশ কর্মী অমল কর্মকার। যাঁর সৌজন্যে ওই পুলিশ কর্মীর প্রশংসিত ভূমিকা সামনে এসেছে, তিনি এক অচেনা বাইকচালক, নাম কামনাশিস সমাদ্দার। তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।

গত বুধবারের ঘটনা। বাইক নিয়ে অফিসের কাজে হুগলির ব্যান্ডেলে যাচ্ছিলেন একটি বেসরকারি সংস্থার সিনিয়র মার্কেটিং এগজিকিউটিভ কামনাশিস। কিন্তু, দক্ষিণেশ্বরে গঙ্গার ব্রিজ পেরোতেই সিগন্যালে পুলিশ তাঁর বাইক আটকায়। নিয়ম মতো বাইকের কাগজপত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখতে চান কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। পকেট হাতড়ে নিজের মানিপার্স না পেয়ে কামনাশিস বুঝতে পারেন, কোনও ভাবে সেটি নিয়ে বেরোতে ভুলে গিয়েছেন। ওর ভিতরেই টাকাপয়সা থেকে শুরু করে বাইকের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স সবই ছিল। ভুলের কথা অফিসারকে বুঝিয়ে বলেন কামনাশিস। এর পর বাড়িতে ফোন করে ওই সব কাগজপত্রের ছবি হোয়াটসঅ্যাপ করতে বলেন তিনি। সে সব এলে, তা দেখে সন্তুষ্ট হন অমল কর্মকার নামে ওই অফিসার।

ঘটনা এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু, তা হতে দে‌ননি ওই পুলিশ অফিসার। কামনাশিসের কাছে কোনও টাকাপয়সা নেই বলে, তিনি নিজের পকেট থেকে দুটো দুশো এবং একটি একশো টাকার নোট বার করে তাঁর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘এই টাকাটা রাখুন। অনেক দূরে যাবেন। পথে কত সমস্যাই তো হতে পারে। আমার নাম অমল কর্মকার। বালি থানায় কর্মরত। মন চাইলে থানাতে এসে টাকাটা সুযোগ মতো দিয়ে যাবেন। না দিলেও আপত্তি নেই।’’

সিবিআই বনাম সিবিআই: ছুটিতে গেলেন দুই কর্তা, আপাতত অধিকর্তা নাগার্জুন রাও

প্রথমে কামনাশিস ওই টাকা নিতে রাজি হননি। পুলিশ অফিসারকে জানান, তিনি খালি পকেটে আর অফিসের কাজে যাবেন না। বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। টাকা লাগবে না। তখন ওই অফিসার তাঁকে বলেন, ‘‘টাকা নেই বলে অফিসের কাজ বাতিল করে দেবেন! বাড়ি ফিরতে হবে না। টাকাটা নিন।’’ এর পর আর কোনও কথাই বলতে পারেননি কমনাশিস। তিনি টাকাটা নেন অমল কর্মকারের কাছ থেকে। সেই সময় এএসআই অমল কর্মকার তাঁকে পরামর্শ দেন, ‘‘বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে এ বার থেকে গাড়ির কাগজপত্রগুলো মনে করে সঙ্গে নেবেন।’’

কিন্তু, বিস্ময় তাঁর কাটেনি এখনও। গোটা ঘটনাটির কথা তিনি নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন। সেই লেখা এখন বাইরাল। কামনাশিস প্রথমে ভেবেছিলেন পুলিশ বলে ঘুষের টাকা গছিয়ে দিচ্ছেন ওই পুলিশ কর্মী। তাই নিতে চাননি। পরে ভেবেছেন, হয়তো জাল টাকা। কিন্তু, কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁর ভুল ভাঙে বলে ফেসবুকে দাবি করেছেন ওই যুবক। থানায় গিয়ে পুলিশের টাকা ফিরিয়ে দিয়ে আসবেন তিনি।

এক জন পুলিশ কর্মীর এমন মানবিক মুখের কথা প্রকাশ্যে আসতেই সকলে অমল কর্মকারের প্রশংসা করছেন। এমন পুলিশ কর্মীও দেশে আছেন? বিস্ময় কাটছে না কারওরই!

এই সেই পোস্ট। যেখানে গোটা গল্পটার কথা লিখেছেন তিনি। সেই কাহিনি পড়তে এখানে ক্লিক করুন