রজত দে হত্যা মামলা: যাবজ্জীবন কারাদণ্ড স্ত্রী অনিন্দিতার

রজত দে হত্যা মামলা

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: রজত দে হত্যা মামলা নতুন মোড় নিয়েছিল কিছু দিন আগেই। স্ত্রী অনিন্দিতা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন স্বামী রজত দে-র খুনে। আর বুধবার তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল বারাসত আদালতের তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। অনিন্দিতার পক্ষে তাঁর আইনজীবী সাজা কমের আর্জি জানান ছোট শিশুটির কথা মনে করিয়ে। বাবাহীন তিন বছরের শিশু এ বার মাকেও হারাল।

অনিন্দিতা যে আত্মহত্যার গল্প ফেঁদেছিলেন তা অনেকাংশেই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছিল। এর পর কিছু সন্দেহজনক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় অনিন্দিতাকে আবার নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় আর সেখানেই জেরার মুখে ভেঙে পড়ে খুনের কথা স্বীকার করে নেন অনিন্দিতা। দু’জনেরর সম্পর্কও যে ভাল ছিল না সেটাও জানতে পারে পুলিশ। সঙ্গে অনিন্দিতার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং সার্চের তথ্য সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়। সঙ্গে অনিন্দিতার বয়ান বদল তো চলছিলই।

রজত ও অনিন্দিতা দু’জনেই ছিলেন আইনজীবী। নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে ২০১৮-র ২৪ নভেম্বর রজতের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। শ্বাসরোধে মৃত্যুর তথ্য উঠে এলেও পুলিশ আত্মহত্যার তথ্যে আটকে না গিয়ে খুনের তদন্তও করতে শুরু করে। সেখান থেকেই তৈরি হয় নানা সন্দেহ। এর পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর এই ঘটনার পরে রজতের স্ত্রী-সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের পরিজনেরা। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে রজতের শরীরে রহস্যজনক ক্ষতের চিহ্ন মেলে। এর পরেই তদন্তে গতি পায়।

২০১৬ সালে রজতের সঙ্গে অনিন্দিতার বিয়ে হয়। নিজেরা পছন্দ করেই বিয়ে করেছিলেন।

তার পরেই পুলিশ খুনের তদন্ত শুরু করে। আর সেই তদন্তে নেমেই পুলিশ অনিন্দিতার রহস্যজনক ভূমিকা জানতে পারে। তদন্তে জানা যায়, খুনের দিন রাতে অনিন্দিতা ফেসবুকে একটি স্টেটাস পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘ম্যারেজ ইজ আ পাবলিক টয়লেট।’’ এ ছাড়া একটি খবরের লিঙ্ক পোস্ট করেছিলেন অনিন্দিতা যেখানে একজন স্ত্রী কী ভাবে স্বামীকে মেরে রান্না করে খাইয়েছিলেন, সেই খবর ছিল। এ ছাড়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট তো ছিলই। এ ছাড়া খুনের বেশ কিছুদিন আগে সন্তান ও বাড়ির কুকুরকে বাপের বাড়িতে রেখে আসাটাও সন্দেহের তালিকায় ঢুকে পড়ে।

শুধু তাই নয়, রজতকে খুনের আগে অনিন্দিতা গুগলে সার্চ করেছিলেন, ‘লিগেচার মেটেরিয়াল’। অর্থাৎ গলায় কী কী দিয়ে ফাঁস দিয়ে খুন করা যায়, সেটাই খুঁজছিলেন। এর পর মোবাইলের চার্জার গলায় জড়িয়ে রজতকে খুন করা হয় বলে আদালতে তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হয়। এবং সেটাকে আত্মহত্যা দেখানোর জন্য গলায় চাদর জরিয়ে দেওয়া হয়।

শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়াই ধরিয়ে দিল অনিন্দিতাকে। রজত দে হত্যা মামলা-য় তিনি নিজেই এক এক করে রেখে গিয়েছিলেন সব প্রমাণ।

(বাংলার আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)