শেরনি নামের সঙ্গে ন্যায় করেছেন পরিচালক, এক নামেই দুই তির

শেরনি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: শেরনি নিয়ে প্রত্যাশার যে পারদ ঊর্ধ্বমুখী ছিল তা প্রথমেই ধাক্কা খেল, তবে নামের সঙ্গে ন্যায় করেছেন পরিচালক অমিত মাসুরকর। এক নামে দুটো আঙ্গিককে ধরেছেন তিনি। এক তো মহিলা ডিএফও বিদ্যা ভিনসেন্টের কঠিন লড়াই পুরুষ সমাজের সঙ্গে। আর লড়াই জঙ্গলের এক শেরনি-কে বাঁচানোর জন্য। যদিও শেষ পর্যন্ত তাতে তিনি ব্যর্থ হন। শিকারির হাতে মৃ্ত্য হয় সেই বাঘিনির। জঙ্গলের বাঘিনির লড়াই ছিল তার দুটো ছোট্ট বাচ্চাকে বাঁচানোর। শুক্রবারই অ্যামাজন প্রাইমে রিলিজ করেছেন জঙ্গলের নানা কঠিন পরিস্থিতি নিয়ে এই সিনেমা। তবে নিজের চরিত্রে বিদ্যা বালান নিজের সেরাটাই দিয়েছেন।

গ্ল্যামারের বাইরে বেরিয়ে কাজে তিনি সব সময়ই সফল। তাঁর জন্যই দেখতে হবে শেরনি সঙ্গে যদি জঙ্গল নিয়ে আগ্রহ থাকে তাঁর জন্যও এই সিনেমা বিভিন্ন জানার রাস্তা খুলে দিতে পারে।

দেশের বিভিন্ন জঙ্গলে এমনটা মাঝে মাঝেই শোনা যায়, দেখা দিয়েছে মানুষখেঁকো। জঙ্গলের আশপাশের গ্রামের মানুষদের তাঁর শিকার হতে হচ্ছে। এমনই চিরচেনা কাহিনী নিয়ে শুরু শেরনির পথ চলা। আদিবাসী গ্রামের মানুষরা তাঁদের পোষ্যদের নিয়ে জঙ্গলে যায়। সেখানেই শুরু হয় গল্প। বাঘের হামলায় মৃত্যু হয় এক গ্রামবাসীর। গ্রামবাসীদের কিছুদিন জঙ্গলে যেতে বারন করা হয়। তাহলে তাঁদের গবাদি পশুরা খাবে কী, এরকম নানান প্রশ্ন নিয়ে শুরু হয় জঙ্গল অধিকর্তা থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, পুলিশ, প্রশাসনের টানাপড়েন।

সেই বাঘিনির খোঁজ করতে গিয়ে ডিএফও বিদ্যা ভিনসেন্টের সামনে উঠতে শুরু করে একটার পর একটা পর্দা। শেষ পর্যন্ত তাঁর সামনে চলে আসে জঙ্গল নিয়ে সেরা কাজ করা মানুষ এবং বিদ্যার এক সময়ের মেন্টরের ভূমিকায় কাজ করা নীরজ কবি। তাঁর প্রতি বিদ্যার অন্ধ আস্থা ধাক্কা খাওয়ার পর চুপ করে থাকতে পারেননি তিনি। যার ফল পানিশমেন্ট পোস্টিং হয়ে যায় মিউজিয়ামে। যা শেষ সিনে দেখা যায়। ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে জরিয়ে থাকা উচ্চপদস্থ অফিসাররা কীভাবে বেআইনি কাজকে প্রশ্রয় দিয়ে জঙ্গলকে শেষ করে ফেলছে তা উঠে এসেছে এই সিনেমায়। প্রফেসর তথা ডিএনএ পরীক্ষক হিসেবে বিজয় রাজ অসাধারণ।

একটি জঙ্গলকে ঘিরে মানুষের টানাপড়েন কীভাবে বন্য প্রানীদের প্রানের শত্রু হয়ে উঠছে তা ধরা পড়েছে এই সিনেমায়। পুরো সিনেমায় প্রশংসা করতেই হবে সিনেমাটোগ্রাফিকে। পুরো জঙ্গলটাকে দারুণভাবে ফ্রেমে বেঁধেছে। সে রাতের জঙ্গল হোক, বা ভোরের বা বিকেলের। জঙ্গলের সব রূপ ধরা পড়েছে। পরিচালকের বাস্তব বোধ ধরা পড়েছে, যখন তিনি জঙ্গলের আদিবাসীদের চরিত্র হিসেবে তুলে এনেছেন। যখন মানুষের চাহিদা মেটাতে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি।

এক জঙ্গল থেকে অন্য জঙ্গলে চলে যাওয়ার রাস্তা এখন বন্ধ। মাঝে তৈরি হয়েছে হাইওয়ে থেকে আরও কত কিছু। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাস্তা, মানুষের লালসার শিকার হচ্ছে অবলাপ্রানী আর তা নিয়ে তোলপাড় হচ্ছো রাজনীতির মঞ্চ। এই সব কিছুকে এক সঙ্গে ধরতে গিয়েই হয়তো কিছুটা টানটান উত্তেজনায় খামতি হয়েছে। তবে জঙ্গল থেকে জঙ্গলে মাফিয়ারাজের দিকে আঙুল তুলে দিতে পারে এই সিনেমা। আর সেকারণেই এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতেই হবে।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)