Indian Cricket-এর বন্ধুত্বের ব্যাটন এবার নতুন প্রজন্মের হাতে

Indian Cricket

ভারতীয় ক্রিকেটে (Indian Cricket) এক অদ্ভুত সমাপতন। কী নিবির এক বন্ধুত্ব। কী গভীর টান। মাঝে তাতে ছেদ পড়লেও তা দীর্ঘস্থায়ী হল না। তাঁদের শেষের সিদ্ধান্ত যে এভাবে মিলে মিশে একাকার হয়ে যাবে তা হয়তো তাঁরা নিজেরাও ভাবেননি কিছুদিন আগে পর্যন্ত। আমরা এর আগে অবসর দেখেছি, বেশ ঘটা করে। সচিন তেন্ডুলকরের অবসর ম্যাচ নিশ্চই ম‌নে আছে সবার। অতটা না হলেও, আগাম ঘোষণা করে, একটা অবসর ম্যাচ খেলে সতীর্থদের থেকে গার্ড অফ অনার নিয়েই শেষ করেছেন ভারতের তারকা ক্রিকেটাররা। এই সবটাই বদলে দিয়েছিলেন এমএস ধোনি। হঠাৎ করেই সব অবসর ঘোষণা করেছিলেন তিনি। আর সেই ক্যাপ্টেন কুলের দেখানো পথেই হাঁটলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিও।

বেশিদিন আগের কথা নয়। ২০২৩ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে ট্রফি হাতছাড়া হয়েছিল রোহিতের ভারতের। তার পরের প্রতিটি মুহূর্ত,যন্ত্রণায় ভেঙে পড়া থমথমে মুখগুলো, কান্না, আবেগের ছবিগুলো আজও খুব তাজা। সেই ব্যর্থতার, কষ্টের মুহূর্ত যেন আবার দুই বন্ধুকে পাশাপাশি নিয়ে এসেছিল অনেকদিন পর। প্রায় একই সঙ্গে কেরিয়ার শুরু করায় বন্ধুত্বটাও জমাট বেধেছিল দারুণভাবে। কিন্তু কিছু ব্যক্তিগত কারণের প্রভাব পড়ে তাঁদের বন্ধুত্বে। ধিরে ধিরে সময় গড়িয়েছে। একটা গান মনে পড়ছে, ওপেন টি বায়োস্কোপ সিনেমার। ‘বন্ধু চল’। সেখানে একটা লাইন ছিল, ‘খেলবো আজ ওই ঘাসে, তোর টিমে তোর পাশে’। যতই দুরত্ব তৈরি হোক না কেন, পাশাপাশি থাকতে থাকতে নিজেদের নতুন করে আবিষ্কার করা যায় এভাবেই। ঘুঁচে যায় দুরত্ব।


যতই কথা বন্ধ থাক, পাশাপাশি খেলা, দিনের পর দিন দলের জন্য এক সঙ্গে থাকাটা বুঝিয়ে দিয়েছিল বিরাট, রোহিত একে অপরের থেকে আলাদা নয়। টি২০ বিশ্বকাপ ফাইনালের সন্ধ্যেটা সেই সব বাধা ভেঙে বেরিয়ে এসেছিলেন দুই বন্ধু। দুই তারকা। শিশুর মতো এক সঙ্গে ভাঙড়া নেচেছিলেন, পুরো দলকে সেই নাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিরাট, রোহিত। ভারতের একটাই পতাকা একসঙ্গে গায়ে জড়িয়ে নিয়েছিলেন দু’জনে। ২০২৩-এর সেই রাত দেখেছিল যন্ত্রণার চোখের জল, আর ২০২৪-এর আরও একটি রাত দেখল উচ্ছ্বাসের বাধ ভাঙা চোখের জল। একে অপরকে কতবার যে জড়িয়ে ধরলেন। তার পর এক এক করে দু’জনেই জানিয়ে দিলেন, আর নয়। এই সাফল্যের সঙ্গেই দাড়ি টানতে চান টি২০ ক্রিকেটে। ব্যাটন তুলে দিতে চান নতুন প্রজন্মের হাতে।

টি২০ ক্রিকেট থেকে অবসরের এখনও একবছর পূর্ণ হয়নি, তার আগেই টেস্ট ক্রিকেটকেও বিদায় জানালেন দু’জনে। প্রথমে রোহিত, তার কিছুদিন পর বিরাট। এর নেপথ্যে কী আছে তা নিয়ে ভাবলে হয়তো অনেক কিছুই উঠে আসবে। অনেক হিসেব, অনেক অসম্মান বা শুধুই নিজের মনের কথা শুনে সরে দাঁড়ানো। পরের প্রজন্মের জন্য জায়গা করে দেওয়া। যা কিছু হতে পারে। সত্যিটা হল, আর টেস্ট ক্রিকেট খেলবেন না সেই দু’টি মানুষ যারা টি২০ ক্রিকেটের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও টেস্ট ক্রিকেটকেই প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তাঁদের দু’জনেরই আরও একটু সম্মান প্রাপ্য ছিল না কি? তবে তাঁরা নিজেরাই হয়তো সেই অবসর ঘিরে অতি নাটকীয় মুহূর্তগুলো চাননি। কারণ একজন পারফর্মারের জন্য তো মাঠটাই শেষ কথা। সেটাই যখন থাকবে না তখন বিদায়ী উৎসবের কী মানে। পারফর্ম করে যে পুরস্কার এসেছে এতগুলো বছরে সেটাই সাজানো থাক ঘরের শো-কেসে। আর বাকিটা থাক তাঁদের ভক্তদের মনে।

ভালো থেকো রোহিত, ভালো থেকো বিরাট। এই অবসর আসলে বিদায়ের নয়, এই অবসর নতুন প্রজন্মের হাতে ব্যাটন তুলে দেওয়ার।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle