জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কোভিডে সাংবাদিকদের মৃত্যু-র খতিয়ান কে রাখে? কোভিড যোদ্ধা হিসেবে যখন ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীসহ একগুচ্ছ পেশাকে সামনের সিড়িতে রাখা হচ্ছিল তখনও সাংবাদিকদের কথা কেউ ভাবেইনি। কিন্তু দিনের পর দিন নিজের, পরিবারের জীবনকে সংশয়ে রেখে যাঁর যাঁর সংস্থার জন্য খবর সংগ্রহ করে গিয়েছে। কেউ ছুটেছেন হাসপাতালে, তো কেউ শ্মশানে, তখন কি তাঁরা ভেবেছিলেন নিজেকেও একদিন পৌঁছে যেতে হবে এই হাসপাতাল তার পর শ্মশানে। সম্প্রতি অনেক রাজ্যই সাংবাদিকদের করোনা যোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁদের দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করছে। তার মধ্যে অন্যতম পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু ততদিনে যে অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। টিকা না নিয়ে দিনের পর দিন কাজ করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন কত সাংবাদিক।
দিল্লির পারসেপশন স্টাডিজ একটি সমীক্ষা করেছে সাংবাদিকদের কোভিডে মৃত্যু নিয়ে। আর তা থেকে যে পরীসংখ্যান উঠে এসেছে তা আঁৎকে ওঠার মতো। এই পরীসংখ্যান বলছে, এপ্রিল ২০২০ থেকে ১৬ মে ২০২১ পর্যন্ত নথীভুক্ত হয়েচে ২৩৮ জন সাংবাদিকের কোভিডে মৃত্যুর কথা। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য এই সংখ্যাটা ৩০০-র বেশি। এই সংস্থার তথ্যতেই দেখা যাচ্ছে এমন ৮২ জন সাংবাদিকের মৃত্যুর কারণ আজও নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
সব থেকে বেশি সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে তেলেঙ্গানা ও উত্তরপ্রদেশে। তেলেঙ্গানায় মৃত্যু হয়েছে ৩০ জন সাংবাদিকের আ উত্তরপ্রদেশে সংখ্যাটা ৩৭। তার পরেই স্থান পেয়েছে দিল্লি। ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে দিল্লিতে। মহারাষ্ট্রে ২৪, ওড়িশায় ২৬, মধ্যপ্রদেশে ১৯ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে।
Meanwhile, this list of journalists who have died from Covid across India now stands at 232.https://t.co/0dXT9iWwEp via @NWM_India https://t.co/cQtXomq7m9
— Raju Narisetti (@raju) May 9, 2021
সেই তালিকায় রয়েছেন আজ তকের অ্যাঙ্কর সাংবাদিক রোহিত সারদানা ও জি ২৪ ঘণ্টার এডিটর অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। রয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরির ছেলে আশিস ইয়েচুরি। গত বছর আমরা হারিয়েছিলাম ফটো জার্নালিস্ট রনি রায়কে। তিনিও রয়েছেন এই সমীক্ষার তালিকায়। এ এক ভয়ঙ্কর পরিসংখ্যান।
বয়সের নিরিখে সব থেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। এর কারণ যদিও খুবই স্পষ্ট। এই বয়সের জার্নালিস্টরা সিনিয়র হওয়ার পাশাপাশি ইয়ংও। খবর বোঝার পাশাপাশি দৌঁড়োদৌঁড়ি করার ক্ষমতাটাও বেশি। তাই ৩১ শতাংশ মৃত্যু এই বয়সের সাংবাদিকদেরই হয়েছে। এর পর ১৫ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে ৩১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে। ১৯ শতাংশ মৃত্যু হয়েছে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ২৪ শতাংশ ৬১ থেকে ৭০ এবং ৯ শতাংশ ৭১ ও তার থেকে বেশি বয়সীদের মধ্যে।
তবে এবার সময় এসেছে সাংবাদিকদের জীবনকে বাঁচানোর। ইতিমধ্যেই কলকাতায় প্রেস ক্লাবে প্রতিদিন সাংবাদিকদের টিকাকরণ চলছে। কর্ণাটকেও সাংবাদিকদের কোভিড যোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আশা করাই যায় আর আমরা আমাদের সাংবাদিক বন্ধুদের কোভিড আক্রান্ত হয়ে শেষ হয়ে যেতে দেখব না।
(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)