জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হিমাচলের ঢাকা হিমবাহ থেকে উদ্ধার ৫০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়ায় সেনা বিমানের ধ্বাংসাবশেষসহ এক সেনার দেহ। পেম্বাকেও নিশ্চই একদিন এ ভাবেই খুঁজে পাওয়া যাবে। কয়েকদিন আগেই ক্রিভাসে তলিয়ে গিয়েছেন পেম্বা শেরপা। অনেক খুঁজেও তাঁর খোঁজ মেলেনি। কোনও অতলে হারিয় গিয়েছেন দার্জিলিংয়ের পেম্বা শেরপা। তখন পেম্বা আর পাহাড় চড়বেন না। শীতল হয়ে গিয়েছে সব। বরফের আস্তরণ থেকে বেরিয়ে আসা দেহটা তখনও চেনা যাবে। এই তো সেই পেম্বা। ঠিক যেভাবে ৫০ বছর পর উদ্ধার হল হিমাচলে ভেঙে পড়া সেনা বিমানের ধ্বংসাবশেষ, যেভাবে উদ্ধার হল সেই বিমানের এক সেনার দেহ।
১৯৬৮ সালের ১ জুলাইয়ের ঘটনা। চণ্ডীগড় থেকে ৯৮ জন সেনাকে নিয়ে লে-র উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল এই সেনা বিমান। বিমানে এই ৯৮ সেনা ছাড়াও ছিল চার জন কর্মী। যখন লে-র আকাশে পৌঁছে গিয়েছে বিমান তখনই পাইলটের কাছে নির্দেশ আসে আবহাওয়া খারাপের জন্য অবতরণ সম্ভব নয় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ফেরার পথ ধরেন চালক। সেই সময় রোহটাং পাসের উপর দিয়ে ওড়ার সময় হঠাৎ ছিন্ন হয়ে যায় সব সম্পর্ক। সমুদ্র তল থেকে ৬ হাজার ২০০ মিটার উপর দিয়ে যাচ্ছিল বিমানটি।
পাহাড়েই হারিয়ে গেলেন পেম্বা শেরপা
হঠাৎই উধাও হয়ে যাওয়া সেই বিমানের খোঁজ চলে প্রায় একমাস। কিন্তু কোনও কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তখন তাতে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপের কথাও ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু দীর্ঘ তদন্তের পর না পাওয়া যাওয়ায় বিমানটিকে নিরুদ্দেশ ঘোষণ করে দেওয়া হয়। তার ঠিক ৩৫ বছর পর ২০০৩ সালে হিমাচলের সাউথ ঢাকা হিমবাহে প্রথম সেই বিমান ধ্বংসের চিহ্ণ পাওয়া যায়। হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের একটি দল হিমাচলের ঢাকা হিমবাহে ট্রেকিং করার সময় একটি মৃতদেহ দেখতে পায়। পরে তাঁকে হারিয়ে যাওয়া সেনা বিমানের সদস্য বেলিরাম বলে চিহ্ণিত করা হয়।
Himachal Pradesh: During a cleanliness drive organised by Indian Mountaineering Foundation, a body of one of the victims of 1968 Indian Air Force plane crash was found along with some parts of the aircraft at the Dhaka glacier base camp on July 1. pic.twitter.com/VXLdKLpO6r
— ANI (@ANI) July 21, 2018
২০০৭ সালে আরও চার জনের দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। এবং বিমান দুর্ঘটনার জায়গাও চিহ্ণিত করা যায়। এত বছর পর আবার ফিরে এল সেই হারিয়ে যাওয়া বিমানের স্মৃতি। এতদিন দু’ক্ষেপে যে দেহ উদ্ধার হয়েছিল তাতে বিমানের কোনও ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়নি। এ বার সেটা পাওয়া গেল। এএন-১২-বিএল-৫৩৪ এয়ারফোর্স বিমানের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পেল এক ট্রেকিং দল। সঙ্গে মিলল সেই বিমানের আরও এক যাত্রীর দেহ।
গত ১ জুলাই হিমাচল প্রদেশের ঢাকা গ্লেসিয়ার পরিষ্কারের আয়োজন করেছিল ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশন। তখনই ১৯৬৮র সেই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত আরও একজনের দেহ খুঁজে পায় তারা। সঙ্গে পাওয়া বিমানের কিছু ধ্ববংসাবশেষ যা এতদিন পাওয়া যায়নি। জানা গিয়েছিল সেই বিমানে চার জন কর্মী ছাড়া ছিলেন ৯৮জন সেনা জওয়ান। তার মধ্যে এই ৫০ বছরে পাওয়া গেল মাত্র ছ’জনের দেহ। এরকম ভাবেই একদিন হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে পেম্বাকেও। ততদিন বরফ ঢাকা হিমালয়ের কোলে নিশ্চিন্ত ঘুম পেম্বা শেরপার। যে ভাবে আজও ঘুমিয়ে সেই বিমানে বাকিরা।