জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এয়ারফোর্স পাইলট আশিস তানওয়ার যখন বিমান এএন-৩২ নিয়ে আকাশে উড়েছিলে তখন যোরহাটের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের দায়িত্ব পালন করছিলেন তাঁরই স্ত্রী। ১২ জনকে নিয়ে ওড়ার আধঘণ্টার মধ্যে ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে সব যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যায় আশিসের বিমানের। এখনও পর্যন্ত তাঁর এবং সেই বিমানের আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। অন্ধকারে তাঁর স্ত্রী। আশিসের শেষ কথা হয়েছিল স্ত্রীর সঙ্গেই।
হরিয়ানার পালওয়ালের ফ্লাইট লেফটেন্যান্টের পরিবারে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে। “আমার ছেলে ও তার স্ত্রী সন্ধ্যা গত মাসে বাড়িতে এসেছিল, এরপর তারা সপ্তাহান্তে ছুটির দিনে থাইল্যান্ডের বেড়াতে চলে যায়। পরে আশিষ আমাদের আশ্বস্ত করে যে ও খুব শীঘ্রই ফিরে আসবে। কিন্তু চারদিন পরও ওর কোনও খবর নেই,” বললেন পাইলটের মা সরোজ তানওয়ার।
সরোজ তানওয়ার বিশ্বাস করেন যে তার ছেলে হয়তো দেশে নাও থাকতে পারে। তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত যে বিমানটি চিনে চলে গিয়েছে। কেন চিন সরকারকে ফেরৎ পাঠানোর জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে না? অনুসন্ধানের কাজ চলছে, কিন্তু আমাদের বলা হয়েছে যে খারাপ আবহাওয়ার কারণে তারা বিমান সনাক্ত করতে পারেনি।’’
এয়ার ফোর্স পরিবহন বিমানটি অরুণাচল প্রদেশের মেচুকা অ্যাডভান্স ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডে ৫০ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দেওয়ার জন্য উড়েছিল। সেদিন ১২.২৭ মিনিটে বিমানের সঙ্গে সব যোগ্যযোগ ছিন্ন হয়ে যায়।। হারিয়ে যাওয়া বিমানটি খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিমান বাহিনী। এমআই-১৭ এবং এএলএইচ হেলিকপ্টার ছাড়াও সুখোই এসইউ ৩০, এবং সি ১৩০ জেট ফাইটারকে তল্লাশীর কাজে নামানো হয়েছে।
তানওয়ারের পরিবার তাতে সন্তষ্ট নয়। পাইলটের পরিবারের তরফে তাঁর কাকা উদয়বীর সিং বলেন, “পূর্ববাংলায় চার লাখ সেনা সদস্যের দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের ছেলেকে দেখার জন্য তাদের কেন নিয়োগ করা যাবে না? তারা চীনের সীমানা পেড়নো নিয়েও ভাবুক।’’ তিনি পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।
উদয়বীর সিংয়ের মতে, আশিস তানওয়ার সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কারণ তার পরিবারে সবাই বিমান বাহিনী বা সেনাবাহিনীতেই ছিলেন। তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেন এবং পরে কানপুরের একটি বি-টেক কোর্সে যোগ দেন। কিছুদিনের জন্য বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে কাজ করার পর তিনি ডিসেম্বরে এয়ার ফোর্সে যোগ দেন। ২০১৫ সালের মে মাসে তাকে পাইলট হিসাবে কমিশন করা হয়।”
তার স্বামীর মতই সন্ধ্যা তানওয়ারও ভারতীয় বিমান বাহিনীতেই ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট।
(দেশের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)