দিল্লি দূষণ: বাতাসের গুণগত মান সঙ্কটজনক, করুণ ও ভয়ানক, মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের

দিল্লি দূষণদিল্লি দূষণের এমন ছবিই দেখা গিয়েছিল গত বছর।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: দিল্লি দূষণ নিয়ে ফের কড়া মনোভাব দেখাল দেশের শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মান রীতিমতো সঙ্কটজনক। শুধু তাই নয়, রাজধানীর বাতাসে দূষণের পরিমাণ এত যে, তাকে করুণ এবং ভয়ানক বলেও এ দিন মন্তব্য করেছে বিচারপতি মদন বি লোকুরের ডিভিশন বেঞ্চ।

গত বছর ঠিক দীপাবলির সময়ে ভয়ানক দূষণের শিকার হয়েছিল রাজধানী। দূষণের কারণে দৃশ্যমানতা এতটাই নীচে নেমে যায় যে, গোটা রাজধানী কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এমনিতেই প্রচুর গাড়ি চলাচল করে দিল্লিতে। সেই ধোঁয়ায় বাতাস দূষিত হয়।  পাশাপাশি দীপাবলির সময়ে প্রচুর বাজি পোড়ানোর ফলেও বাতাস দূষিত হয়েছিল। একই সঙ্গে সদ্য ফসল কাটার পর জমিতে খড় পোড়ানো হয়েছিল রাজধানী সংলগ্ন চাষভূমিতে। সব মিলিয়ে দিল্লির আকাশ মাঝদুপুরেও প্রায় অন্ধাকারাচ্ছন্ন ছিল।

এ বার তাই দীপাবলির আগে থেকেই সতর্ক প্রশাসন। এ দিন সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, যে সমস্ত গাড়ি পরিবেশ দফতরের দূষণ সংক্রান্ত নিয়ম মেনে দিল্লির রাস্তায় চলছে না, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, ১০ বছরের বেশি বয়সী ডিজেলচালিত এবং ১৫ বছর বয়সী পেট্রোলচালিত গাড়ি চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি পরিবহণ দফতরকে। ওই সমস্ত গাড়ির নম্বর ওয়েবসাইট এবং সংবাদপত্রে প্রকাশ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে আরও ভাল করে ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সাধারণ মানুষ যাতে পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ খুব দ্রুত সেখানে করতে পারে, সে দিকেও খেয়াল রাখার কথা বলা হয়েছে নির্দেশে। পাশাপাশি তাদের একটি মোবাইল নির্ভর অ্যাপ তৈরি করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

ভেঙে পড়া সেই বিমানের পাইলট দিল্লির বাসিন্দা

শীর্ষ আদালতে বিচারপতি মদন বি লোকুরের বেঞ্চ এ দিন একটি পর্যবেক্ষণের কথা বলেছে। সেখানে সরকারি কৌঁসুলির উদ্দেশে বিচারপতিদের প্রশ্ন, ‘সংবাদপত্রে নিত্যদিনই লেখা হয়, সকাল-সন্ধ্যা হাঁটুন। কিন্তু, আপনি যদি পুরনো দিল্লি রেলস্টেশনে সন্ধ্যাবেলা হাঁটতে যান, তা হলে দেখবেন সাইকেল রিকশায় কত মানুষ যাতায়াত করছেন। বেঁচে থাকার জন্য, জীবিকা নির্বাহের জন্য তাঁদের বাইরে কাজ করতে যেতে হয়। হাজার হাজার মানুষকে বেঁচে থাকতে হয় বাইরে কাজ করে। তাঁদের কী বলবেন আপনি? যাঁরা বাইরে কাজ করেন, তাঁদের কি এই দূষণের মধ্যে কাজ করতে করতে মরে যেতে বলবেন?’

পুরনো গাড়ি ছাড়াও শীর্ষ আদালত এ দিন আতশবাজি এবং শব্দ বাজি নিয়েও আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। উৎসবের এই মরসুমে দূষণের একটা বড় কারণ এই সব বাজি। সুপ্রিম কোর্ট এ দিন নির্দেশ দিয়েছে গ্রিন সার্টিফিকেশন ছাড়া কোনও বাজি বিক্রি করা যাবে না। কিন্তু, এই সবুজ ছাড়পত্র নিয়ে পুলিশ বা বাজি বিক্রেতারা প্রায় কিছুই জানেন না বলে অভিযোগ।