জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ইরফান হাবিব বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ। তাঁর প্রাজ্ঞতা নিয়ে কোথাও কোনও প্রশ্ন নেই। সেই তিনি এ বার দেশের বিভিন্ন জায়গার নাম পরিবর্তন নিয়ে মুখ খুললেন। ফৈজাবাদ থেকে আমদাবাদ, হায়দেরাবাদ থেকে আগ্রা— সব কিছু নিয়েই প্রশ্ন তুললেন তিনি। তবে, মোক্ষম প্রশ্নটি তিনি তুলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের পদবী নিয়ে।
আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইরফান হাবিব এমেরিটাস প্রফেসর। বয়স প্রায় ৮৭। এ দিন তিনি একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, মুন্সি, মজুমদার, শাহ— এই শব্দগুলি সংস্কৃত থেকে আসেনি। এগুলি সবই ফার্সি শব্দ। এর পরেই অমিত শাহের নাম করে তাঁর প্রস্তাব, ‘‘আগে তো নিজেদের নাম পাল্টানো উচিত। তার পর জায়গার নাম।’’
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সৌজন্যে সে রাজ্যে একের পর এক জায়গার নাম পাল্টানোর প্রস্তাব তিনি দিয়েছেন। তার কয়েকটি ইতিমধ্যে কার্যকরও হয়ে গিয়েছে। যেমন, মোগলসরাইয়ের নাম দীনদয়াল উপাধ্যায়। ফৈজাবাদের নাম অযোধ্যা। ইলাহাবাদের নাম প্রয়াগরাজ। এর পর তালিকায় রয়েছে আগ্রার নাম। উত্তরপ্রদেশের দেখাদেখি গুজরাত জানিয়েছে, আমদাবাদের নাম পাল্টে রাখা হবে কর্ণাবতী। তেলঙ্গানার এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, ভোটে জিতে তারা হায়দেরাবাদের নাম পাল্টে রাখবে ভাগ্যনগর। কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, এই সব জায়গার নামের সঙ্গে মুসলমান শাসকদের যোগ রয়েছে। সেই কারণেই নাম পাল্টে ফেলার প্রস্তাব।
চেনা শহরেরও নাম এ বার পাল্টে যাচ্ছে। কী হবে?
আর ঠিক সেখানেই প্রশ্নটা তুলছেন ইরফান হাবিব, যুক্তি সহকারে। তাঁর দাবি, ইলাহাবাদের কাছে যেখানে তিন নদীর সঙ্গম হয়েছে, সেই জায়গার নাম প্রয়াগ। ইলাহাবাদের নাম কখনও প্রয়াগ চিল না। আকবরের আমল থেকে ওই জায়গার নাম শোনা যায়। ঠিক একই রকম ভাবে আমদাবাদের সঙ্গে কর্ণাবতীর কোনও যোগ নেই। আহমদ শাহের নাম থেকেই আমদাবাদ। কর্ণাবতী পাশের শহর। আগ্রার ক্ষেত্রেও ওই জায়গার নাম সিকন্দর লোদীদের সময় অর্থাৎ ১৫ শতক থেকে পাওয়া যায়। তার আগে জায়গাটি দোয়াব অর্থাৎ গঙ্গা এবং যমুনার মাঝের জায়গা হিসাবেই পরিচিত ছিল।
এ সবের পরেই ইরফান হাবিব বলেন, শহর বা জায়গার নাম পাল্টানোর আগে নেতাদের নিজেদের নাম বদলানো প্রয়োজন। শাহ শব্দটি ফার্সি থেকে এসেছে। ওই ইতিহাসবিদের দাবি, গুজরাত শব্দটিও ফার্সি গুয়াজারত্র থেকে এসেছে। তাই তাঁর পরামর্শ, আগে বিজেপি নেতারা নিজেদের নাম পাল্টাক। তার পর জায়গার নাম পাল্টানো যাবে।