জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: অপরাধীদের সংসদ থেকে দূরে রাখতে এ বার আইনসভার কোর্টেই বল ঠেলে দিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের ক্যানসার ঠেকাতে সংসদকেই আইন প্রনয়ণের পরামর্শ দিয়েছে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ।
আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি যদি ফৌজদারী মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তিনি আর ভোটে লড়াই করতে পারেন না। কিন্তু কোনও ব্যক্তি যদি ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত হন এবং তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠিত হয়ে থাকে, তা হলেও যেন তিনি ভোটে দাঁড়াতে না পারেন। এই দাবি জানিয়ে বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়-সহ কয়েক জন শীর্ষ আদালতে আবেদন করেন। মঙ্গলবার সেই মামলার রায়ে শীর্ষ আদালত জানায়, রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের ক্যানসার ঠেকাতে আইন প্রনয়ণ করা প্রয়োজন। এবং আদালত যে হেতু আইন প্রনয়ণ করতে পারে না, তাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সেই আইন তৈরির জন্য বলটা সংসদের কোর্টেই ঠেলে দিয়েছে এ দিন।
ওই বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ছাড়াও ছিলেন বিচারপতি রোহিংটন ফলি নরিম্যান, বিচারপতি এ এম খানওয়ালিকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র। মামলার শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আদালতকে জানান, কোনও ব্যক্তিকে কোনও প্রতীকে ভোটে দাঁড়াতে না দেওয়ার অর্থ তাঁর ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া। তাঁর মতে, ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার ভোটাধিকারের মধ্যেই পড়ে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলেই তাঁকে ভোটে দাঁড়াতে বারণ করা যায় না।
নিতিন সন্দেসরা, ব্যাঙ্ক জালিয়াতিতে বিজয় মালিয়া-নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীদের দলে নতুন নাম
কিন্তু শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন এ দেশে খুবই দুঃখজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই ক্যানসার ঠেকাতে সংসদে আইন তৈরি করা প্রয়োজন। বিচারপতিরা জানিয়েছেন, সংসদে এমন আইন পাশ করা উচিত যাতে যে সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের চার্জগঠন হয়েছে তাঁদের দলীয় সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়। এর পরেই তাঁরা আশাপ্রকাশ করেন, সংসদের সদস্যেরা দুর্বৃত্তায়নের ক্যানসার আটকাতে উদ্যোগী হবেন।
আইন বদলের ভার সংসদের উপরে ছা়ড়লেও রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন ঠেকাতে কিছু নির্দেশিকা দিয়েছে বেঞ্চ। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা থাকলে নির্বাচন কমিশনের ফর্মে তা মোটা হরফে জানাতে হবে। যদি তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের টিকিটে ভোটে লড়েন, তবে ওই মামলার কথা দলকে অবশ্যই জানাতে হবে। মনোনয়ন পেশের পরে জনপ্রিয় সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে প্রার্থী সংক্রান্ত তথ্য অন্তত তিন বার প্রকাশ করতে হবে। প্রার্থীর পাশাপাশি দলকেও এই তথ্য প্রকাশের কাজ করতে হবে দলকেও।