জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ কি সংসদ হামলাতেও জড়িত?

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহজম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ এখন বিতর্কের কেন্দ্রে। সংসদ হামলার পাশাপাশি তিনি পুলওয়ামা হামলাতেও জড়িত ছিলেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

গত শনিবার তিন জঙ্গির সঙ্গে একই গাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ-কে। ওই অফিসারের সঙ্গে জঙ্গিদের সুসম্পর্ক থাকার বিষয়টি নতুন নয়। অতীতেও দেবেন্দ্রের বিরুদ্ধে এ রকমের অভিযোগ উঠেছে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, জঙ্গিদের নিরাপদে জম্মুতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য জন প্রতি ১২ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন ওই অফিসার।

যদিও দেবেন্দ্র দাবি করেছিলেন, ওই জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করাতে তিনি নিয়ে যাচ্ছিলেন। জঙ্গিরাও সে কথা অস্বীকার করেছে। পুলিশের একটি অংশের মতে, দেবেন্দ্র জঙ্গিদের চণ্ডীগড়ে নিরাপদ আশ্রয় জুটিয়ে দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেখান থেকে জঙ্গিদের দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে রাজধানীতে কোনও নাশকতা করার পরিকল্পনা ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।


আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন

দেবেন্দ্রের সঙ্গে ধৃত জঙ্গিদের মধ্যে রয়েছে নাভেদ বাবা। নাভেদ জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রাক্তন কর্মী। গত অগস্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে ১১ জন শ্রমিক হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল। তার পর থেকেই নাভেদকে পাকড়াও করতে উদ্যোগী হন গোয়েন্দারা। গত শুক্রবার নাভেদের মোবাইলে আড়ি পেতে তার জম্মু যাওয়ার কথা জানতে পারেন তাঁরা। নাভেদ, তার সঙ্গী আসিফ আহমেদকে জম্মু পৌঁছে দেওয়ার বরাত নিয়েছিলেন দেবেন্দ্র।

পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িচালকও জঙ্গি সংগঠনের কর্মী। নাভেদ-আসিফকে  শোপিয়ান থেকে গাড়িতে তুলে শ্রীনগরে সেনার ১৫ নম্বর কোরের সদর দফতরের কাছেই নিজের বাড়িতে আনেন দেবেন্দ্র। জঙ্গিরা দেবেন্দ্রের গাড়িতে উঠতেই গোয়েন্দারা ছায়ার মতো পিছনে লেগে যান। শুক্রবার রাতেও দেবেন্দ্রের বাড়ির চারপাশে কর্ডন করে রাখে সাদা পোশাকের পুলিশ। পরের দিন সকালে কুলগামে দেবেন্দ্রের গাড়ি আটকায় পুলিশ। অভিযানের নেতৃত্ব দেন ডিআইজি অতুল গয়াল। দেবেন্দ্র গাড়ি থাকা তিন জঙ্গিকে পুলিশের কর্মী বলে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেন। যদিও সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। গ্রেফতার হন সব আরোহীই।

২০০১ সালে সংসদ হামলার পর নাম উঠে এসেছিল ওই পুলিশ অফিসারের। ওই মামলায় অন্যতম দোষী আফজল গুরু সেই অভিযোগ এনেছিল। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি সংসদ হামলার পিছনে ওই পুলিশ অফিসারের প্রত্যক্ষ মদত ছিল?

সাধারণত জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের পদস্থ অফিসার বা উপত্যকায় রয়েছেন এমন আধাসেনা বা সেনার অফিসারেরা সর্বদাই নজরদারিতে থাকেন। সেই নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে দেবেন্দ্র জঙ্গিদের নিয়ে যাচ্ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে আধাসেনার কনভয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই ‘কাজ’-এও দেবেন্দ্রের কোনও ভূমিকা ছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)