জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর অশ্বিনী কুমার কি আত্মহত্যা করেছেন? বুধবার সন্ধ্যায় হিমাচল প্রদেশের শিমলার ব্রকহর্স্টের বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধারের পর এ প্রশ্নেই উত্তাল গোটা দেশ। হিমাচল প্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় ৬৯ বছরের অশ্বিনী কুমারের বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে তাদের অনুমান, প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর অশ্বিনী কুমার আত্মহত্যাই করেছেন।
একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। সেখানে নাগাল্যান্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল অশ্বিনী কুমার লিখেছেন, ‘‘আমি আমার জীবন শেষ করছি। সবাই ভাল থেকো। আমার আত্মা এক নতুন পথে যাত্রা শুরু করছে।’’
হিমাচলপ্রদেশ পুলিশের ডিজি সঞ্জয় কুন্দ্রু জানিয়েছেন, এ দিন সান্ধ্য ভ্রমণেও বেরিয়েছিলেন অশ্বিনী। বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে চলে যান। স্ত্রী, ছেলেমেয়েরা বাড়িতেই ছিলেন। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও অশ্বিনীর কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে তাঁরা উপরে গিয়ে দেখেন, ঝুলন্ত অবস্থায় তিনি। এর পর পুলিশ এসে তাঁর দেহ উদ্ধার করে। তত ক্ষণে সব শেষ।
সিবিআই ডিরেক্টর থাকাকালীন কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থা একের পর এক বাঘা বাঘা মামলা সামলিয়েছে। গুজরাতে সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় অমিত শাহের বিরুদ্ধে চার্জশিট, ২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গার তদন্ত, আরুষি তলোয়ার খুনের তদন্ত ইত্যাদি। সিবিআই ডিরেক্টর হওয়ার আগে হিমাচল প্রদেশ ক্যাডারের আইপিএস অশ্বিনী রাজ্য পুলিশের ডিজি ছিলেন। ১৯৭৩ ব্যাচের ওই আইপিএস অফিসার ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ওই পদ সামলানোর পর ওই বছরেরই অগস্টে সিবিআইয়ের ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১০ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর পদেই ছিলেন।
২০১৩-য় নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনিই প্রথম সিবিআই ডিরেক্টর, যিনি রাজ্যপালের পদও সামলেছেন। কিছু দিন মণিপুরের রাজ্যপালও ছিলেন তিনি। রাজীব গাঁধী যখন প্রধানমন্ত্রী, তখন অশ্বিনী কুমার এসপিজি-তে কাজ করেছেন।
মনমোহন সরকার তাঁকে রাজ্যপালের পদে বসালেও বিজেপি তার প্রচণ্ড সমালোচনা করে। এৱ পর ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি কেন্দ্রে সরকার গঠন করে, তখন প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর অশ্বিনী কুমার রাজ্যপাল পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
কিন্তু অশ্বিনী কুমারের মতো এমন এক জন বলিষ্ঠ চরিত্রের মানুষ হঠাৎ আত্মহত্যা করলেন কেন? একাধিক হাই প্রোফাইল কেস সামলানো অশ্বিনী মানসিক ভাবে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ছিলেন বলেই তাঁর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। তাঁর মতো মানুষ আত্মহত্যা করতেই পারেন না, এমন কথাও তাঁরা বলেছেন। কোনও রকমের মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন না তিনি। তা হলে কেন আত্মহত্যা?
আদৌ তিনি আত্মহত্যা করেছেন? প্রশ্ন উঠছে। তবে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি হিমাচল প্রদেশের জয়রাম ঠাকুরের বিজেপি সরকার।
(দেশের সব খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন)
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)