বেড়াতে গিয়ে মানুষ কত রকমের বিপদেই না পড়ে। বিপদে না পড়া পর্যন্ত এটা ধারণা করাই মুশকিল যে এমনও সমস্যার সম্মুখিন হতে পারে। তা বলে এক্কেবারে গভীর জঙ্গলের মধ্যে ট্যুরিস্টদের ফেলে পালিয়ে যাবে গাইড! হ্যাঁ, এমনটাই ঘটেছে রাজস্থানের বিখ্যাত জঙ্গল রণথম্ভোরে (Ranthambore National Park)। ২০ জনেরও বেশি পর্যটকের একটি দলকে তাদের সাফারি গাইড রণথম্ভোর জাতীয় উদ্যানের গভীর জঙ্গলের মাঝে রেখে চলে যায়। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সেই গাইড না ফেরায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ট্যুরিস্টরা।
জানা গিয়েছে গাড়িটি মাঝ পথে বিকল হয়ে গেলে গাইড যাত্রীদের উদ্ধার করার বদলে, তাঁদের ফেলে পালিয়ে যায়। ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে মানুষ। শনিবার জোন ৬-এ ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি ঘিরে আপাতত সোশ্যাল মিডিয়া রীতিমতো উদ্বেগের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে জঙ্গলের মধ্যে ততক্ষণে অন্ধকার নেমে এসেছে। সেই গাড়িতে পুরুষ, মহিলা এবং শিশুরা ছিল, কেবল মোবাইল ফোনের টর্চের উপর নির্ভর করে। এই জঙ্গলে ৬০ টিরও বেশি বাঘ এবং আরও বেশ কয়েকটি বন্য প্রজাতির হিংস্র জন্তু রয়েছে। সম্প্রতি দিনের আলোতেই সাফারির উপর পশুদের হামলা করতে দেখা গিয়েছে। তার উপর তখন রীতিমতো গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছে জঙ্গল।
পর্যটকরা অভিযোগ করেছেন যে মুকেশ কুমার বৈরওয়া নামের ওই গাইড তাদের ছেড়ে পালিয়ে যায়, বলেছিলেন যে তিনি আরেকটি ক্যান্টার আনবেন, কিন্তু আর ফিরে আসেনি। পরিবর্তে, তিনি নিখোঁজ হওয়ার আগে দলের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
“আইসা ফাসায়া ভাইয়া আপনে। আপকা গাইড হ্যায় কাহান? (তুমি আমাদের সবাইকে বিপদে ফেলেছো। তোমার গাইড কোথায়?),” ভাইরাল ভিডিওতে একজন মহিলাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, যার পেছনে একটি শিশুর কান্নার শব্দ ভেসে আসছিল।
এর পর সেই সময় সেখান দিয়ে অন্য একটি সাফারির গাড়ি যাচ্ছিল, তাদের অনুরোধ করে শেষ পর্যন্ত সেই গাড়িতে লিফট নেন একজন ট্যুরিস্ট। সেই গাড়িতে জোন-৬ বন পোস্টে পৌঁছতে সক্ষম হন সাহায্যের জন্য। আশ্চর্যজনকভাবে, পোস্টের বন কর্মীরা সাহায্যের জন্য রীতিমতো গড়িমসি করেন বলেও অভিযোগ। বারবার অনুরোধ করার পর, টর্চলাইটের সাহায্যে আটকে পড়া দলটিকে উদ্ধার জন্য সঠিক হেডলাইট ছাড়াই আরেকটি ক্যান্টার পাঠানো হয়।
এক বিবৃতিতে, রণথম্ভোর ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপ-বন সংরক্ষক (পর্যটন) প্রমোদ কুমার ধাক্কাড় বলেছেন যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “প্রাপ্ত অভিযোগ অনুসারে, ১৬ অগস্ট জোন-৮-এ সন্ধ্যায় ভ্রমণের সময় ক্যান্টার গাড়ি RJ25PA2171 বিকল হয়ে যায়। নিয়ম অনুসারে গাইড মুকেশ কুমার বৈরওয়া গেটে উপস্থিত ছিলেন না, যার ফলে উদ্ধারে বিলম্ব হয়। তিনি পর্যটকদের জঙ্গলে ফেলে রেখে ফিরে আসেন। আরেকটি ক্যান্টার পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু অন্যান্য চালকদের অসহযোগিতার কারণে পর্যটকদের বের করে আনতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়।”
তদন্তের পর, গাইড মুকেশ কুমার বৈরওয়া, চালক কানহাইয়া (RJ25PA2171), শাহজাদ চৌধুরী (RJ25PA2230), এবং লিকায়েত আলি (RJ25PA2227)-কে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত টাইগার রিজার্ভে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবর
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google
