সুজাত বুখারি আততায়ীর গুলিতে ঝাঁঝরা, সাংবাদিক খুনের নিন্দায় সরব দেশ-দুনিয়া

সুজাত বুখারিসুজাত বুখারি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সুজাত বুখারি (৫০) আততায়ীর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলেন। ‘রাইজিং কাশ্মীর’ সংবাদপত্রের সম্পাদক তথা খ্যাতনামা ওই সাংবাদিক খুনের ঘটনায় দেশ তো বটেই, নিন্দায় সরব হয়েছে গোটা দুনিয়া।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ শ্রীনগরের প্রেস কলোনিতে নিজের অফিসের সামনেই তিন অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী আচমকাই হামলা চালায় সুজাতের উপর। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাঁর শরীর। একা সুজাত বুখারি নন, ওই হামলার ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাঁর দুই ব্যাক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীও। আততায়ীদের গুলিতে জখম হয়েছেন এক জন সাধারণ নাগরিক।

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রধান এসপি বৈদ জানিয়েছেন, ইফতারের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অফিস থেকে এ দিন সাড়ে ৭টা নাগাদ বেরিয়েছিলেন সুজাত বুখারি। লালচকের প্রেস এনক্লেভ থেকে বেরিয়ে নিজের গাড়িতে উঠতে যাবেন সুজাত, ঠিক সেই সময় মোটরসাইকেলে আসা তিন আততায়ী খুব কাছ থেকে গুলি চালায় সুজাতের উপর। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তাঁর দুই নিরাপত্তারক্ষীও। আততায়ীরা বন্দুকের ম্যাগাজিন উজাড় করে ওই তিন জনকে খুন করে। তার পরেই ঘটনাস্থল থেকে তারা পালিয়ে যায়।

সতীত্ব প্রমাণের রীতি, শরীরের সঙ্গে মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে মেয়েরা!

এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে পুলিশ দেখতে পেয়েছে, একটি কালো রঙের মোটরবাইকে চেপে তিন দুষ্কৃতী ওই এলাকাতেই অপেক্ষা করছিল। চালকের মাথায় হেলমেট থাকলেও বাকি দুই আরোহীর মুখে স্রেফ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। সুজিত বুখার অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময়েই তারা গুলি চালায়। সঙ্গে সঙ্গেই সুজাত-সহ ওই তিন জনকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিন জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এই ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে তা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয়।

এসপি বৈদের দাবি, ইফতারের জন্য ওই সময়টায় সকলেরই বাড়ি ফেরার তাড়া থাকে। রাস্তায় তাই বেশ ভিড় ছিল। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে আততায়ীরা। সুজাতের মৃত্যুর খবর পেয়েই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ছুটে যান পুলিশ হাসপাতালে। সেখানে তিনি সুজাতের পরিবারের লোকজনদের সমবেদনা জানান। প্রায় কান্নায় ভেঙে পড়া মেহবুবা বলেন, ‘‘এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। এই তো ক’দিন আগেই আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।’’

উপত্যকায় শান্তি ফেরাতে বরাবরই উদ্যোগি ছিলেন বছর পঞ্চাশের সুজাত বুখারি। তাঁর কলমও সারা জীবন শান্তির কথাই বলে এসেছে। এ দিন সুজাতের মৃত্যুর পর সেই কথাই বলেছেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ। তিনি বলেন, ‘‘রমজানের মতো পবিত্র মাসে এটা খুবই অনভিপ্রেত একটি ঘটনা। সুজাত বুখারির খুন আর গণতন্ত্রকে হত্যা করা, একই ব্যাপার। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি।’’ নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘এটা একটা কাপুরুষচিত কাজ। সুজাত বুখারি এক জন নির্ভিক সাংবাদিক ছিলেন। উপত্যকার শান্তির ফিরিয়ে আনার মুখগুলোকে বন্ধ করতেই এই খুনের ঘটনা।’’

রমজান মাস বলে গোটা উপত্যকায় সংঘর্ষ বিরতি চলছে। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে আততায়ীরা। সুজাত বুখারির মৃত্যুতে গোটা উপত্যকা-সহ দেশ-দুনিয়া শোকে ভেঙে পড়েছে।