ট্যুরিস্ট শূন্য Pahalgam, মাথায় হাত গাড়ি চালকদের

Pahalgam

কাশ্মীরের একটা অদ্ভুত নিয়ম রয়েছে। যে নিয়ম দেখলে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে সব ক’টি ট্যুরিস্ট স্পটের গাড়ি চালকদের রোজগারের কথা ভেবেই করা। এমনিতে আমরা যেখানে বেড়াতে যাই না কেন, সেখানে একটা গাড়ি ভাড়া করেই ঘুরি। কিন্তু কাশ্মীরে আপনি সেটা পারবেন না। আপনি যদি শ্রীনগর থেকে গাড়ি ভাড়া করে গুলমার্গ, শোনমার্গ, Pahalgam বা যে কোনও ট্যুরিস্ট স্পটে পৌঁছন তাহলে সেখানে গিয়ে এই গাড়িটি আপনাকে পার্কিংয়ে ছেড়ে দিতে হবে। এবার যে আপনি সেই জায়গাটি ঘুরবেন, সেটা আবার সেখানকার গাড়ি ভাড়া করে ঘুরতে হবে। ফেরার পথে আপনি যে গাড়িতে গিয়েছিলেন সেই গাড়ি ‌নিয়ে ফিরতে পারবেন। এই পরিস্থিতিতে একটা বিরাট রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে পহেলগাঁওয়ের গাড়ি চালকদের।

জুন ও জুলাই মাসে পর্যটকদের ভিড়ের কারণে পহেলগাঁওয়ের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে সাধারণত দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না – এখন তা খালি পড়ে আছে। বৈসরন ভ্যালিতে সন্ত্রাসী হামলার ৪৫ দিন পর, যেখানে ২৬ জনকে খুন করেছিল আতহ্কবাদীরা, সেখানে পর্যটকদের ভিড় প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে। এর ফলে শত শত স্থানীয় ক্যাব অপারেটর, ড্রাইভার গাইড এবং পনিওয়ালাদের আয় কমে গিয়েছে। অনেক ক্যাব অপারেটর এখন তাদের গাড়ি বিক্রি করার কথা ভাবছেন কারণ তারা লোনের মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না।


২২ এপ্রিল থেকে, খুব কম লোকই পহেলগাঁওয়ে গিয়েছেন।

গত চার দশক ধরে ক্যাব চালাচ্ছেন নাজির আহমেদ, তিনি এনডিটিভিকে বলেন, “যে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে প্রায় ৫০০ গাড়ি ছিল এবং ১,২০০ জনেরও বেশি মানুষ থাকত, তা এখন সম্পূর্ণরূপে জনমানবশূন্য। এখন আমরা অমরনাথ যাত্রার জন্য অপেক্ষা করছি।”

“আমরা প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হারাচ্ছি,” তিনি অভিযোগ করেন যে তারা সরকারের কাছ থেকে কোনও সহায়তা পাচ্ছেন না। “আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ বহন করা এমনকি খাবার কেনাও আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছে,” তিনি বলেন।

সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে চন্দনওয়াড়ির ফাঁকা জায়গা এবং আশেপাশের এলাকার পার্কগুলো খুলে দেওয়া হবে, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করবে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তেমন কিছুই হয়নি বলেই জানিয়েছেন স্থানীয়রা। যার ফলে রীতিমতো সমস্যার মধ্যে রয়েছেন ট্যুরিজমের সঙ্গে যুক্ত থাকা পহেলগাঁওয়ের স্থানীয় মানুষরা। স্থানীয়রা এও জানাচ্ছেন, যখন সন্ত্রাসের কবলে রীতিমতো খারাপ অবস্থা ছিল পুরো কাশ্মীরের তখনও পহেলগাঁও ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা সব বদলে দিয়েছে।

অমরনাথ যাত্রার জন্য রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে কয়েকদিনের মধ্যেই। এখন সেদিকেই তাকিয়ে পহেলগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা। মনে করা হচ্ছে এবার লক্ষ লক্ষ মানুষ অমরনাথ যাবেন যদি তারা আসে তবে অন্তত পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হবে। তবে অমরনাথ যাত্রার উপরও পহেলগাঁও আক্রমণের প্রভাব পড়বে কিনা সেটাও এখনও নিশ্চিত নন তারা।

“আমরা আগে প্রতিদিন ৩০০০ টাকা আয় করতাম কিন্তু এখন ভাবুন যে পরিস্থিতি এমন যে আমরা ইএমআই (তারা যে ক্যাব কিনেছিল তার জন্য) দিতে পারছি না। আমরা বলছি যে সরকারের উচিত গাড়িগুলো নিয়ে নেওয়া। আমাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই,” বলেন এক ক্যাব চালক।

গত তিন দশক ধরে পহেলগাঁওয়ের ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম নবী বলেন, “আমরা যানবাহন প্রস্তুত রেখেছি যাতে অমরনাথ যাত্রা শুরু হয়ে কমপক্ষে এক মাস ধরে চলতে থাকে, আমরা যাতে তাদের সার্ভিস দিয়ে টাকা রোজগার করতে পারি”।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: FacebookTwitterGoogle