একে তো কোভিড তার উপর দোসর ঘূর্ণিঝড়, কীভাবে সামলাবেন

একে তো কোভিড

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: একে তো কোভিড, যা নিয়ে নাস্তানাবুদ অবস্থা গোটা দেশের। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা আরও শোচনীয় কারণ অনেক পড়ে কোভিডের রাশ টানা হয়েছে। এই অবস্থায় দিল্লি, মহারাষ্ট্রের মতো চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্যও যখন ক্রমশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তখন লড়াই করতে হচ্ছে বাংলাকে। আক্রান্তের সংখ্যা একটু কমলেও মৃত্যু মিছিল চলছেই। তার মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বুধবারই স্থলভাগে আছড়ে পড়তে চলেছে এই ঝড়। তবে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে জানা যাচ্ছে ওড়িশার দিকেই প্রবল গতি নিয়ে পড়বে ইয়াস। যেটা মনে করা হয়েছিল বাংলা-ওড়িশার মাঝখানে পড়বে তেমনটা হচ্ছে না। তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি বাংলায়। কিন্তু ওড়িশায় পড়লেও বড় একটা ধাক্কা বাংলাকে দেবে ইয়াস।

এই পরিস্থিতিতে কিছু নিয়ম মেনে চললে শরীর সুস্থ থাকবে। সবার প্রথমে নিজের মন থেকে আতঙ্ককে মুছে ফেলতে হবে। যত নষ্টের গোড়া এই ভয়। সে কোভিড হোক বা ঝড়। আমরা আতঙ্কেই অর্ধেক অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই আতঙ্ককে ঝেড়ে ফেলে পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। চেষ্টা করবেন বেশ কয়েকদিনের খাবার সংরক্ষিত করে রাখতে। যাতে ঝড়, জলের মধ্যে বাইরে যেতে না হয়। খুব বেশি কিছু সংরক্ষণ না করতে পারলে ঘরে যা আছে, যেমন চাল, ডাল, ডিম দিয়েই চালিয়ে দিন ২-৩টে দিন।

এমনিতেই কোভিডের কারণে লকডাউন চলছে রাজ্যে। বাজার খোলা থাকছে সকাল ৭-১০টা। এই পরিস্থিতিতে সকলেই একবারে এক সপ্তাহের বাজার তো করেই রাখেন। চেষ্টা করুন বাজারের ব্যাগে একটু বেশি করে সবজি রাখতে। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। ধূর্ণিঝড়ের কারণে বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। কোথাও কোথাও জল জমে যায় এবং তা থেকে যায় অনেকদিন পর্যন্ত। আর সেটাই অনেক রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বন্যা কবলিত অঞ্চলে সব থেকে বেশি যে সমস্যাটা হয় তা হল পেটের সমস্যা। সে কারণে সব থেকে বেশি সচেতন হতে হবে পানীয় জলের ক্ষেত্রে। জল জমে অনেক সময়ই কল জলের তলায় চলে যায়। সেই পরিস্থিতি হতে পারে মনে করলে দু’দিনের পানীয় জল স্টোর করার ব্যবস্থা করুন। যাঁদের পাম্পের সঙ্গে অ্যাকোয়াগার্ড লাগানো তাঁরাও নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকবেন না। কারণ বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটাটা অনিবার্য। সেই পরিস্থিতিতে পাম্প চলবে না আর পাম্প না চললে আপনি জলও পাবেন না। তেমন হলে এই ক’টা দিন জল ফুটিয়ে খান।

এই ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতিতে তাই পানীয় জল ঘরে স্টোর করে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে এই কোভিড কালে এখন ভীষনভাবে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ছত্রাক ঘটিত রোগ। কালো, সাদা আবার হলুদ ছত্রাকের আক্রমণ শুরু হয়েছে এদেশে। তাতে মৃত্যুও হচ্ছে মানুষের। তাই এক সপ্তাহ ধরে চলা জলীয়বাষ্পযুক্ত আবহাওয়ায় যেন ঘর খুব বেশি স্যাঁতস্যাঁতে না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। ঘরের মধ্যে ভেজা জামা-কাপড় মেলে রাখবেন না। তেমন হলে কটা দিন জামা-কাপড় কাচবেন না। কারণ রোদ না থাকায় শুকোতে দেড়ি হবে। তাতে ঘরের পরিবেশ আরও খারাপ হবে।

বৃষ্টি হচ্ছে বলে স্নান না করে থাকবেন না। যদিও আবহাওয়ার পরিবর্তন তবুও নিয়ম করে স্নান করুন। চেষ্টা করুন একটু উষ্ণ জলে স্নান করতে। তাতে ঠান্ডাটা লেগে যাবে না। এই কদিন এসি চালাবেন না। ঘরের ভিতর জানলা-দরজা বন্ধ করলে সাময়িক একটু গরম লাগতে পারে কিন্তু এসি চালালে হিতে বিপরিত হতে পারে। আর কোভিড কালে ঠান্ডা লাগা থেকে দূরে থাকতে হবে। তাই এসির রিমোট দূরে সরিয়ে রাখুন।

ঝড়ের সময় চেষ্টা করবেন যতকম বিদ্যুতের ব্যবহার করা যায়। যেমন টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটরসহ যেসব ইলেকট্রনিক্স জিনিস বন্ধ করে রাখা যায় তা বন্ধ করে রাখুন। প্লাগ পয়েন্ট থেকে প্লাগ খুলে রাখুন। বাজ পড়লে সেটা টেনে নিয়ে আপনার জিনিসগুলো খারাপ হয়ে যেতে পারে। মনে করে যে সব জিনিস চার্জে চলে তা পুরো চার্জ দিয়ে রাখুন।যাতে বিদ্যুঠ না থাকলে কিছুক্ষণ কাজ চলে যায়। সব মোবাইলে পুরো চার্জ দিয়ে রাখুন। সঙ্গে পাওয়ার ব্যাঙ্ক, ইমার্জেন্সি লাইটসহ যা যা রয়েছে। হাতের কাছে রাখুন মোম, দেশলাই, কেরোসিনের ল্যাম্পসহ সেই সব জিনিস যা বিদ্যুৎ চলে গেলে কাজে লাগবে।

এই ছোট ছোট কিছু বিষয় মেনে চললে এই ঝড়-জলের রাত কেটে যাবে। বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া কোনও পশু, পাখিকে তাড়াবেন না। তাদের খাবার দিন, জল দিন। সবাই সবার পাশে থাকুন।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)