প্রবল গরমে (Heat Wave) রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা গোটা দেশের। সেই তালিকায় অবশ্যই শীর্ষে থাকবে আমাদের বাংলা। যদি ভাবেন দক্ষিণবঙ্গের গরম থেকে রেহাই পেতে উত্তরবঙ্গে পাড়ি দেবেন, সেখানেও কিন্তু স্বস্তি নেই। একই অবস্থা দুই বঙ্গের। উত্তরও পুড়ছে প্রবল গরমে। একমাত্র পাহাড়ে গেলেই স্বস্তি ভাবছেন? সেখানেও পারদ চড়ছে তড়তড়িয়ে। তবে হ্যাঁ, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি বা কলকাতা, বর্ধমান, বাঁকুড়া বা মেদিনীপুরের মতো তো অবশ্যই নয়। তাই গরম গরম করে মাথার পারদ না চড়িয়ে নিজের শরীরকে কীভাবে ঠান্ডা রেখে সুস্থ রাখা যায় সেই দিকে নজর দেওয়া যাক। কারণ প্রকৃতির উপর কারও হাত নেই। যা বদলানো যাবে না তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই, বরং যেটা আমাদের হাতে রয়েছে সেটা করা যাক।
সবার আগে তো প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভাল। যাঁদের অফিস, চাকরি, ব্যবসার জন্য বাইরে যেতে হবে তাঁদের উপায় নেই। কিন্তু যদি উপায় থাকে তাহলে এই যাতায়াতের সময়টা বদলে নিন। যেমন রোদের তাপ চড়া হওয়ার আগেই বেরিয়ে ঢুকে পড়ুন অফিসে। আবার রোদ পড়ে গেলে বাড়ির পথে যান। সত্যি কথা বলতে কী অফিসগুলো এই গরমে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ব্যবস্থাও করতে পারে। কারণ ২০২০ সাল থেকে কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে ঘরে বসে কাজ কিন্তু এখন বহু যায়গায় নিয়ম হয়ে গিয়েছে। তাতে দু’পক্ষেরই সুবিধে।
যাঁদের রাস্তায় বেরিয়ে কাজ করতে হয় তাঁদের হল সব থেকে বেশি সমস্যা। সাংবাদিক, পুলিশ, ফেরিওয়ালা, বাস, ট্যাক্সি, রিক্সা চালক-সহ প্রচুর মানুষকে অনেকটা সময় রাস্তাতেই থাকতে হয়। তাঁরা অবশ্যই সম্ভব হলে ছাতা ব্যবহার করুন। আর তা যদি না হয়ে তাহলে মোটা কাপড় দিয়ে মাথা, নাখ, মুখ ঢেকে রাস্তায় বেরোন। আর অবশ্যই দেখবেন ঘাড়ে যেন রোদ না লাগে। সব থেকে ক্ষতি করে সেটাই। ঢেকে রাখবেন ঘাড়ও। মাঝে মাঝেই রুমাল বা কাপড় ভিজিয়ে ঘাড় , মাথা, মুখ ভাল করে মুখে নিন।
আর এই সবের মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জল পান প্রচুর পরিমাণে জাল পান করুন। রাস্তায় বেরলে ডাবের জল পান করুন। বাড়িতে মিছড়ি ভিজিয়ে রেখে সেই জল পান করুন প্রতিদিন। এটা শরীরকে ঠান্ডা রাখবে। একান্তই না হলে নুন-চিনির জল তো সবাই পান করতেই পারেন। সঙ্গে একটু লেবু যোগ করে নিন। রাস্তায় যখন বেরবেন এর মধ্যে কোনও একটা বোতলে করে সঙ্গে রাখুন। মাঝে মাঝেই খান। কারণ এই সময় প্রচন্ড ঘাম হচ্ছে। শরীর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে প্রচুর জল। সেটা না পুষিয়ে নিতে পারলে তার প্রভাব পড়বে শরীরে।
এই সবের পাশাপাশি প্রতিদিনের মেনুতে রাখুন হালকা খাওয়ার। যেমন ডাল, আলুসেদ্ধ, বিভিন্ন রকমের শাক, সবজি। তা বলে মাছ, মাংস, ডিম খাবেন না তেমনটা নয়। ডিম খাওয়াটা কমালে ভালো হয়। মাছ মাংসের ক্ষেত্রে রান্নাটা হালকা করে করতে হবে। যেমন চিকেন স্টু বা মাছের পাতলা ঝোল। তৈলাক্ত মাছ না খেয়ে ছোটমাছ বেশি রাখুন প্রতিদিনের খাবারে। প্রচু ডালের জল খান। টক দই খান। সঙ্গে কমিয়ে ফেলুন চা, কফি খাওয়া। প্রচুর পেট ভরে একদম খাবেন না। খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জল খাবেন না। কারণ এমনিতেই গরমে হজমের সমস্যা হয়, তার উপর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জল খেলে সেটাতেও হজমের সমস্যা হয়। তেমন হলে খাওয়ার আগে বেশি করে জল খেয়ে নিন।
হালকা রঙের জামা-কাপড় পরুন। হাত, পা ঢাকা পোশাকের সঙ্গে পা ঢাকা জুতো ব্যবহার করুন। বাইরে থেকে সরাসরি এসি-তে ঢুকে পড়বেন না। বা ঘাম গায়ে সরাসরি স্নান করতে যাবেন না। একটু ফ্যানের নিচে দাঁড়িয়ে নিজেকে ধাতস্ত করে নিন। এই মুহূর্তে কলকাতার তাপমাত্রা ৪০ ছুঁইছুঁই। শিলিগুড়ির অবস্থা একটু ভাল হলেও তা ৩৫-এর ঘরে ঘোরা ফেরা করছে। যখন উত্তরবঙ্গের বাকি জেলার তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৫-এর মধ্যে রয়েছে তখন দক্ষিণ বঙ্গের সব জেলারই তাপমাত্রা ৩৫-এর উপরে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে এই পরিস্থিতি চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google