জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বর্ষা মানেই নানা সমস্যা (Monsoon Health Issue)। যদিও বৃষ্টিপ্রেমী মানুষেরও অভাব নেই দুনিয়ায়। অনেকেই বৃষ্টি খুব ভালবাসেন। কিন্তু বর্ষা এলেই যে নানা রকমের সমস্যা তৈরি হয় তা থেকে মুক্তি পেতে চান সবাই। সমস্যা দেখা দিলে তো আর বর্ষাকালকে উপভোগ করা যাবে না। এই মুহূর্তে কলকাতায় সারাদিন দারুণ গরম আবার বিকেলের পর থেকে তিড়তিড়ে হাওয়া আর মাঝে মাঝেই ঝেপে বৃষ্টি। হয়তো অফিস থেকে বাড়ি ফিরছেন, বেরনোর সময় ঝকঝকে আকাশ আর রোদ দেখে বেরিয়েছিলেন তাই ছাতা নেই সঙ্গে। ভিজে সপসপে হয়ে বাড়ি ফিরলেন। পর দিন সকালে উঠে দেখলেন গলা ভাড়, নাক বন্ধ ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার বর্ষায় অনেকেরই হচ্ছে পেট খারাপের সমস্যা। কারও আবার চুল পড়ছে অনেক বেশি। সব মিলে নাজেহাল অবস্থা।
প্রাথমিকভাবে মাথায় রাখতে হবে বর্ষা মানেই একটা স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া। সব কিছুতেই একটা ভিজে ভিজে ভাব। এই অবস্থায় সব কিছু সবার আগে শুকনো রাখার চেষ্টা করতে হবে। শরীর থেকে চুল, জামাকাপড় থেকে বাড়ি। আসল সমস্যার উৎস এগুলোই। ঘেমে-নেয়ে অফিস ঢুকলেন আর সেই ভেজা জামাই এসির মধ্যে গায়ে শুকলো। এই অবস্থায়ে সর্দি, জ্বরের সমস্যা দেখা দেবে তা খুবই স্বাভাবিক। তাহলে উপায়?
সঙ্গে একটা বাড়তি পোষাক রাখতে পারেন। বিশেষ করে উপরের অংশের পোষাক। কারণ ঠান্ডাটা বুকে জমে যায়। বা অফিসের লকারেও রেখে দিতে পারেন। অফিস ঢুকে রুমালে গা মুছে সেই জামাটা পরে নিন। এটা একদমই অসম্ভব কোনও বিষয় নয়। এটা সম্ভব না হলে আরও একটা রাস্তা রয়েছে তা হল, ঘাম শরীরে সোজা এসির মধ্যে না ঢুকে পড়া। এই অবস্থায় এসি নেই কিন্তু ফ্যান রয়েছে এমন কোনও জায়গায় দাঁড়িয়ে নিজেকে একটু শুকিয়ে নিন। তাহলে এসির ঠান্ডাটা লেগে যাবে না। আরও একটা কারণে ঠান্ডা লেগে যায়, সেটা হল বৃষ্টিতে ভিজলে। কিন্তু সেটা তো আপনার হাতে নেই। যদি বৃষ্টি ভিজে অফিস ঢোকেন তাহলে জামা বদলে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু যদি বাড়ি ঢোকন তাহলে বৃষ্টির জল গায়ে শোকাবেন না। বরং পুরো স্নান করে নিন হালকা উষ্ণ জলে। দেখবেন ঠান্ডা লাগবে না।
এ তো গেল ঠান্ডা লাগার বিষয়। এবার আসি পেট খারাপের কথায়। বর্ষায় হজমের একটা সমস্যা দেখা দেয়। সে কারণে এই সময় চেষ্টা করতে হবে একটু হালকা খাবার খাওয়ার। বর্ষায় আমাদের দেশের যা আবহাওয়া তাতে বৃষ্টি হলেও প্রচুর আর্দ্রতা থাকে আর সে কারণেই ঘাম হয়। ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে যায়। সে কারণে জল অনেকটা বেশি পরিমাণে খেতে হবে। তবে বর্ষায় জল খুব সাবধানে খেতে হবে। যে খোলা জায়গার জল একদমই সঠিক নয়। বাড়ির জল ছাড়া বাইরে খেতে হলে দেখে নিন তারা কোনও পিউরিফায়ার ব্যবহার করছে কিনা না হলে কিনে মিনারেল ওয়াটার খান। এছাড়া কাটা ফল, বাইরের খাবার একদমই নয়। আর ঘন ঘন ওআরএস ওয়াটার খেতে হবে। পেটের কোনও সমস্যা না হলেও।
শরীরে বাইরে বর্ষায় সব থেকে বেশি সমস্যায় ভুগতে হয় চুল পড়া নিয়ে। সঙ্গে ত্বকেরও না সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত ঘাম হওয়ায় ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। যাঁদের তৈলাক্ত ত্বক তাঁদের মুখ সারাক্ষণই তেল তেল দেখায়। সব মিলে বড় সমস্যার বিষয়। বর্ষায় চুল রোজ ভিজিয়ে স্নান না করাই ভাল। মাথা ঘেমে গেলে ভাল মতো ফ্যানের তলায় শুকিয়ে নিতে হবে। ড্রায়ার ত কম ব্যবহার করবেন তত ভাল। কারণ ড্রায়ারের হিটে চুল ড্রাই হয়ে যায়। এই সময় যতবার শ্যাম্পু করবেন ততবার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। সপ্তাহে দু’দিন মাথায় তেল ম্যাসাজ করুন। চুল টাইট করে বেধে শোবেন না। তাতেই গোড়া নরম হয়ে যায়। ভেজা চুল শুকিয়ে তার পর চিরুনি ব্যবহার করুন।
ত্বক ভাল রাখতে সব সময়ই প্রচুর পরিমাণে জল খান। মুখের ত্বক সব সময় পরিষ্কার রাখুন কারণ যাঁরা বাইরে বেরোন তাদের সব থেকে বেশি ধুলো, ময়লা জমা হয় মুখের ত্বকেই কারণ সেই অংশটা পুরোটাই খোলা থাকে। প্রতিদিন ফেসওয়াশ ব্যবহার করলে ত্বক আবার রুক্ষ হয়ে যেতে পারে তাই সপ্তাহে একদিন বা দু’দিনই সেটা ব্যবহার করুন। বাকি দিনগুলোকে গোলাপজল বা দুধ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। তুলোয় নিয়ে মুখে ঘসলেই বুঝতে পারা যাবে কত ময়লা জমে রয়েছে। যাদের তৈলাঙ্ক ত্বক তাঁরাও গোলাপজল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে পারেন। সব মিলে বর্ষায় শরীর থেকে ত্বক এবং মন সবই বিষন্ন হয়ে পড়ে তা থেকে নিজেকেই নিজে উদ্ধার করতে হবে।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google