২৬/১১-র একযুগ, জঙ্গি হামলার সেই ক্ষত আজও তাজা দেশের ইতিহাসে

২৬/১১-র একযুগ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ২৬/১১-র একযুগ পেরিয়ে গেলেও সেই ক্ষত আজও তাজা দেশের মানুষের মনে। আর মুম্বই নগরী বুকে করে বয়ে নিয়ে চলেছে সেই রক্তাক্ত ইতিহাসের যন্ত্রণা। ২০০৮ সালের ঠিক এই দিনের এক রাত তছনছ করে দিয়েছিল দেশের বানিজ্য নগরীকে। ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস থেকে তাজ হোটেল ততক্ষণে দখল নিয়েছে জঙ্গিরা। তার পরের ৩৬ ঘণ্টা ছিল টানটান রোমহর্ষক সিনেমার প্রেক্ষাপটের মতো। যেন শেষ হলেই আবার সবাই জেগে উঠবে। মুছে যাবে রক্তের দাগ। মৃত মানুষগুলো বেঁচে উঠবে। কিন্তু সেটা সিনেমা ছিল না ছিল ভয়ঙ্কর সত্যি।

খবরটা এসেছিল রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ। প্রথম আক্রমণ মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসে। তখন ভর্তি রেল স্টেশন। জঙ্গিদের এলোপাথারি গুলি চলতে শুরু করে। এর সঙ্গে জুড়ে যায় আরও সাতটি জায়গা। তাজ হোটেল ঘিরে সেই গুলির লড়াই লাইভ দেখেছিল গোটা দেশ। ৩৬ ঘণ্টা ঘুমোয়নি ভারতবর্ষ।

সিএসটি-র পর তাজ হোটেল। তার পর এক এক করে ওবেরয় ট্রাইডেন্ট, লিওপোল্ড ক্যাফে, কামা হাসাপাতাল, নরিম্যান হাউস চলে যায় জঙ্গিদের দখলে। ততক্ষণে গোটা দেশ জেনে গিয়েছে কী ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার মুখোমুখি হয়েছে মুম্বই। এর আগে মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনে বিস্ফোরণের আতঙ্ককে তাজা করে ফিরে এসেছে এই জঙ্গি হামলা।

পরে জানা যায় পাকিস্তানের লস্কর-ই-তৈবা এই হামলার পরিকল্পনা চালিয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে। সেই হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের। আহত হয়েছিলেন ৩০৮ জন। যাঁরা বেঁচে থাকবেন এই ভয়ঙ্কর স্মৃতিকে সঙ্গে করেই।

ততক্ষণে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নেমে পড়েছে এনএসজির ২৯৫ জন মেরিন কমান্ডো। তার আগেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রুধে দাঁড়িয়েছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাদের সন্ত্রাসদমন স্কোয়াডের অফিসাররা নেমে পড়েছেন ময়দানে। জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝড়া হয়ে গিয়েছিলেন মুম্বই পুলিশের অ্যাসিস্টেন্ট সাব-ইনস্পেক্টর তুকারাম ওম্বলে, এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট বিজয় সালসকার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অশোক কামটে, সন্ত্রাস দমন শাখার প্রধান হেমন্ত কারকারে ও এনএসজির অফিসার সন্দীপ উন্নিকৃষ্ণন ।

বাকি সব জায়গা দ্রুত জঙ্গিমুক্ত করতে সক্ষম হলেও তাজ হোটেলে লড়াই চলে দীর্ঘক্ষণ। ২৯ নভেম্বর শেষ পর্যন্ত জঙ্গিমুক্ত হয় তাজ হোটেল। তার আগেই তাজ হোটেলের জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শহীদ হন উন্নিকৃষ্ণন।

এই জঙ্গিদের মধ্যে জীবিত ধরা পড়ে আজমল কাসব। ২০১২-র ২১ নভেম্বর তার ফাঁসি হয়।

(ইতিহাসের পাতা থেকে ফিরে দেখতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)