জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: প্রয়াত ধারাভাষ্যকার নবি কাপাডিয়া, বৃহস্পতিবার দীর্ঘ অসুস্থার পর মাত্র ৬৭ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। একটা দীর্ঘ সময় পুরো দেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা তাঁর গলার প্রেমে পড়েছিল। তাঁর ধারাভাষ্যের জাদুতে মজেছিল দেশ। মানুষের কাছে তাঁর গ্রহনযোগ্যতা কীভাবে যেন তৈরি হয়ে গিয়েছিল তাঁর ধারাভাষ্যের জাদুতে। ফুটবল, ক্রিকেট, অলিম্পিক, এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ—কোথায় না শোনা গিয়েছে নবি কাপাডিয়ার সেই চেনা গলা, চেনা ছন্দে ম্যাচ অ্যানালিসিস। যে কোনও সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি ছিলেন রত্ন। তাঁর ম্যাচ অ্যানালিসিসে সমৃদ্ধ হয়ে উঠত সংবাদ মাধ্যমের ক্রীড়া বিভাগ। আজ তিনি অতীত হয়ে গেলেন। কিন্তু থেকে গেল কত শত খেলার ময়দানে তাঁর গলা।
শেষটা ভাল হল না নবি কাপাডিয়ার। কেউ দেখার ছিল না। পরিবারে তেমন কেউ ছিলেন না কাছের মানুষ। এক বোন ছিলেন শুধু। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর পুরোপুরি একা হয়ে যান তিনি। গত একমাস ধরে ছিলেন ভেন্টিলেটরে। নার্ভের সমস্যায় ভুগছিলেন। ডাক্তারি ভাষায় যার নাম মোটোর নিউরোন ডিজিজ। যে রোগে স্পাইন ও ব্রেনের নার্ভ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। একটা সময় চিকিৎসা করাতে গিয়ে টাকার অভাবেও ভুগেছেন। কেউ কেউ পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর একার জীবনের শেষ হল নবি কাপাডিয়ার।
তাঁর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ছিল ৯টি ফিফা বিশ্বকাপ। গত দু’বছর ধরে একদমই সজ্জাশায়ী ছিলেন। সেই সময় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু তাঁর চিকিৎসার জন্য ৪ লাখ টাকা সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু যাঁর গলা একদিন শুনেছে গোটা দেশ, শেষ বেলায় তাঁর কথা শোনার জন্য আর কেউ ছিলেন না। এক সময় দেশের ফুটবলের স্বার্থেও কাজ করেছেন। নিজের ক্লাব তৈরি করেছিলেন, নাম অশোকা ক্লাব। নিজেও ফুটবল খেলতেন পেশাদার মঞ্চে। বিখ্যাত হয়েছিল তাঁর লেখা বই, ‘বেয়ারফুট টু বুটস, দি মেনি লাইভস অফ ইন্ডিয়ান ফুটবল’।
ধারাভাষ্য ছাড়াও পেশাগতভাবে তিনি ছিলেন একজন অধ্যাপকও। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে এসজিবিটি খালসা কলেজের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। কিন্তু পেনশনের ঝামেলায় তা আটকে গিয়েছিল। তাই শেষ জীবনে টাকার অভাব তাঁকে আরও সমস্যায় ফেলেছিল। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া ভারতীয় ক্রীড়া জগতে।
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)