জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: দুর্দান্ত গোলে দলকে জেতানোর চেয়েও তাঁর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তাঁদের সমর্থকদের উল্লাস ও চিৎকার। শনিবারের কলকাতা ডার্বির নায়ক হুগো বুমৌস (Hugo Boumous) তাই তাঁর গোল উৎসর্গ করলেন সমর্থকদেরই। ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি নিজেই জানালেন এ কথা। শনিবার যুবভারতীতে ২-০ গোলে চিরশত্রু ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে হারায় এটিকে মোহনবাগান। যার মধ্যে একটি গোল বুমৌসের। কিন্তু একটি গোলই শুধু করেছেন তিনি, তা নয়। সারা মাঠ জুড়ে খেলে একাধিক আক্রমণে ও গোলের সুযোগ তৈরিতে সাহায্য করেন এই ফরাসি তারকা। ৬৬ মিনিটে তাঁরই গোলে এগিয়ে যায় এটিকে মোহনবাগান। তার দশ মিনিট পর মনবীর সিংয়ের গোলে জয় নিশ্চিত করে এটিকে মোহনবাগান।
এই জয় নিয়ে কী বলবেন?
অসাধারণ জয় পেলাম আজ। এই রাতটা উপভোগ করতে হবে। তার পরে বিশ্রাম নিয়ে ফের তরতাজা হয়ে উঠতে হবে। কোচ যে রকম বললেন, মানসিক ভাবে তরতাজা হয়ে উঠতে হবে। তার পরে আগামী সপ্তাহের শুরু থেকে ফের কাজ শুরু করতে হবে। এই জয়ে প্রচুর আত্মবিশ্বাস পেলাম। কারণ, আরও তিন পয়েন্ট অর্জন করলাম আমরা। তবে মুম্বই থেকে তিন পয়েন্ট আনতে গেলে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে।
আজকের গোলটি কাকে উৎসর্গ করতে চান?
সমর্থকদের উৎসর্গ করতে চাই আজকের গোলটা। ঘরের মাঠে আইএসএলের প্রথম ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা অসাধারণ। এখানকার পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। সমর্থকদের ধন্যবাদ এবং আবার ভরা গ্যালারিতে তাদের দেখতে চাই। শুধু ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে নয়, সব ম্যাচেই।
ডেভিড উইলিয়ামস, রয় কৃষ্ণাদের সঙ্গে খেলার সঙ্গে দিমিত্রিয়স পেট্রাটসের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতার ফারাক কোথায়?
রয় আর ডেভিড সম্পুর্ণ অন্য ধরনের চরিত্র। দিমি অনেকটা ডেভিডের মতোই। রয় বল কাড়ার জন্য ছটফট করে, যে কোনও ডুয়ালে যেতে রাজি ও। ডেভিডের মতো দিমির সঙ্গেও আমার বোঝাপড়াটা ভাল হচ্ছে। দিমির যথেষ্ট প্রতিভা আছে। ওকে তার প্রমাণ দিতে হবে। এই ধরনের ফুটবলারদের সঙ্গে খেলাটা দারুন ব্যাপার। কারণ, এদের সঙ্গে খেলা আমি উপভোগ করি। শুধু দিমি নয়, দলের অন্যদের সঙ্গেও।
মুম্বই সিটি এফসি-র হয়ে ও বিপক্ষে খেলেছেন আপনি। এই ম্যাচে আপনি কী রকম মানসিকতা নিয়ে নামেন?
ওদের হয়ে আমি একটাই মরশুম খেলেছি এবং সেই মরসুমে আমরা চ্যাম্পিয়নশিপ, লিগশিল্ড দুটোই জিতেছিলাম। তবে আমার কাছে এটা আর পাঁচটা ম্যাচের মতোই। মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি এবং খেলাটা উপভোগ করার চেষ্টা করি। জয় এবং তিন পয়েন্টই লক্ষ্য থাকে। আমরা এটিকে মোহনবাগান এবং আমরা জয়ী দল। আমরা ম্যাচ ও লিগ জিততে চাই, এটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এটা বলা অনেক সহজ। আসল কথা আমাদের একসঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং সাফল্য পেতে গেলে বেশি ভুল করলে চলবে না।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে গোল করার অনুভূতি কী রকম?
অসাধারণ অনুভূতি। ৬২ হাজার মানুষের সামনে আমি কখনও গোল করিনি। ঘরের মাঠে (দু’বছর পরে), এই অসাধারণ স্টেডিয়ামে এটাই আমাদের প্রথম ডার্বি। কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের ধন্যবাদ। তাঁরা আমাদের প্রচুর সমর্থন জুগিয়েছেন। আমাদের সাফল্যে তাঁদের অবদান অনেক। সবচেয়ে বড় কথা, এই ম্যাচ জিতে আমরা খুবই খুশি। এখানে গোল করতে পেরে আমি খুশি। দলের সাফল্যে অবদান রাখাটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমার কাছে গোল করা বা গোল করতে সাহায্য করাটাই সব নয়। দলকে সাহায্য করা ও দলের সাফল্যে অবদান রাখতে পারাটাই আমার কাছে বেশি জরুরি। কোনও পুরস্কারের দিকে ছুটতে চাই না। মাঠে পরিশ্রম করতে চাই এবং ভাল ফুটবল খেলতে ও উপভোগ করতে চাই। সতীর্থদের সাহায্য করতে চাই ও সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।
আপনি আজ যে দূরপাল্লার শটে গোল করলেন, সে রকম শট কি আপনি নিয়মিত অনুশীলন করেন, না সুযোগ পেয়ে একটা চেষ্টা করেন?
আমার সামনে আর কেউ ছিল না তখন। তাই সুযোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। গোলকিপার সেভ করতে পারেনি। এরকম আগেও অনেকবার হয়েছে। এই রকম সুযোগ আরও এলে, চেষ্টা তো করতেই হবে।
আপনারা আজ জোড়া গোল পেলেও কি মনে হয় প্রতিপক্ষের গোলের সামনে ফিনিশিং নিয়ে আপনাদের আরও কাজ করতে হবে, আরও উন্নতি দরকার?
কোচ তো বলেই দিয়েছেন, আরও উন্নতি করতে হবে আমাদের। অনেক গুলো দিকই আছে, যেগুলো নিয়ে এখনও কাজ করতে হবে আমাদের। এই লিগে কোনও দলকেই হালকা ভাবে নিলে চলে না। এমনকী যারা লিগ টেবলের একেবারে শেষ স্থানে থাকে, তাদেরও হালকা ভাবে নেওয়া উচিত না। তাই প্রতি ম্যাচেই আমাদের উন্নতি করতেই হবে। আমরা উন্নতি করছিও। বিশেষ করে আমাদের ভারতীয় ফুটবলাররা দারুন উন্নতি করছে। তারা এখন অনেকেই জাতীয় দলে খেলে। তাই যথেষ্ট উন্নতি করছে। গত বছরও আমরা যথেষ্ট ভাল খেলেছিলাম। কিন্তু অনেক সুযোগ হাতছাড়া হয় আমাদের। এগুলো ফুটবলেরই অঙ্গ। শট, ক্রস, ফাইনাল পাসে ভুল হয়েই থাকে। কিন্তু আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছি। আক্রমণ, রক্ষণে আমাদের এখনও হয়তো গলদ আছে। তা সত্ত্বেও গত ম্যাচে আমরা পাঁচ গোল করেছি। এই ম্যাচেও দুগোল করলাম। প্রথম ম্যাচের মতো যাতে আর না হয়, সেই চেষ্টা প্রতি ম্যাচেই করে যাচ্ছি আমরা।
(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google