জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: দলের খেলায় তিনি খুশি। তবে ডার্বি জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসতে চান না এটিকে মোহনবাগানের কেচ হুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferrando)। কারণ, এক সপ্তাহ পরই সামনে মুম্বই সিটি এফসি। এই ম্যাচের প্রস্তুতি সোমবারই শুরু করে দিতে চান সবুজ-মেরুন শিবিরের স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দো। শনিবার ডার্বি জয়ের পরে সাংবাদিকদের সামনে দলের প্রশংসা করেন ঠিকই। পাশাপাশি এও জানান, শনিবার ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে ২-০-য় হারালেও এখনও একাধিক জায়গায় উন্নতি করতে হবে তাঁর দলকে। সাধারণত দলের কোনও খেলোয়াড় সম্পর্কে আলাদা করে কথা বলেন না তিনি। তবে এ দিন দলের দুই খেলোয়াড়কে নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিলেন তিনি। আর কী কী বললেন শনিবার রাতে? সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে দেওয়া হল।
এই জয়ের পরেও কোন জায়গায় উন্নতি দরকার বলে মনে হচ্ছে আপনার?
ফাঁকা জায়গা খুঁজে বের করাটা ছিল আজকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ম্যাচের পরের দিকে প্রতিপক্ষের রাইট ও লেফট ব্যাকের পিছনে সেটা করতে সমর্থ হয় আমাদের ছেলেরা। ওঠানামায় আরও উন্নতি করতে হবে। এই মাঠ অনেক বড়। তাই ব্যাপারটা সোজা নয়। দলের ছেলেদের মানসিকতায় আরও পরিবর্তন আনা দরকার।
এই জয় কী ভাবে উদযাপন করতে চান?
আমরা পেশাদার। এই জয় নিয়ে তাই বেশি উচ্ছ্বাসের কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। আজকের দিনটা আমাদের সমর্থকদের জন্য খুবই ভাল। তবে আমাদের পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। তিন সপ্তাহ আগে যেমন আমরা সবচেয়ে খারাপ দল ছিলাম না, এখনও সবচেয়ে ভাল দল নই। মাথা ঠাণ্ডা রেখে এগোনোটা খুব জরুরি। রবিবার থেকে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি শুরু হবে।
ক্লিন শিট রেখে মাঠ ছাড়াটা কি বেশি তৃপ্তির?
আমি সব সময় তিন পয়েন্ট অর্জন করাকে বেশি গুরুত্ব দিই। ক্লিন শিট হল কি না, সেটা বড় কথা নয়। মরশুমের শেষে কত পয়েন্ট পেলাম, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, কটা ম্যাচে ক্লিন শিট হয়েছে, সেটা নয়। ক্লিন শিট ব্যক্তিগত পুরস্কার। আমার এবং দলের কাছে তিন পয়েন্টই বেশি জরুরি।
সারা ম্যাচে আপনার দল আধিপত্য বজায় রাখলেও কোথাও গিয়ে কি মনে হচ্ছে যে, ফাইনাল থার্ডে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে আপনার দলের ছেলেদের অসুবিধা হচ্ছে?
পেশাদার ফুটবলে জায়গা তৈরি করা এবং সঠিক সময়ে মুভ করা মোটেই সোজা নয়। কম জায়গায় ভাল খেলা মোটেই সোজা নয়। তবে আমি দলের খেলায় খুশি। প্রত্যেকেই আমাদের প্রক্রিয়া রপ্ত করা শিখছে। যত দিন যাবে, তত আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
আশিক কুরুনিয়ানের জায়গায় শুভাশিস বোসকে প্রথম এগারোয় রাখার কারণ কী?
কঠিন ম্যাচগুলোতে আমাদের অন্য ধরনের পরিকল্পনা নিতে হয়। প্রতিপক্ষ কী রকম, তার ওপর নির্ভর করে উইঙ্গার হিসেবে আশিক না মনবীর, কাকে খেলাব। প্রতি ম্যাচেই এই ব্যাপারটাতে বদল আসে। দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ই পেশাদার। প্রতি ম্যাচেই ওদের দরকার হয়। প্রত্যেকেই যে দলকে সাহায্য করতে তৈরি, এটা জেনে আমি খুশি। সময়ের উপযোগী সেরা খেলোয়াড় বাছাই করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
মনবীর সিংয়ের গোল পাওয়াটা তাঁর এবং দলের ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?
আমার কাছে সবচেয়ে জরুরি প্রতিদিন ও নিজের সেরাটা দিতে পারছে। অনুশীলনে ও নিজেকে সেরা খেলোয়াড় হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে। ও নিজের জায়গাটা খুব ভাল বোঝে, চাপটা নিতে পারে, অনেক কিছু আছে ওর মধ্যে। তবু কিছু জায়গায় ওকে এখনও কাজ করতে হবে। কারণ, ব্যাপারটা অত সোজা নয়। একজন নাম্বার নাইনের পক্ষে দুই সেন্টার ব্যাকের মধ্যে জায়গা তৈরি করা এবং নিজের জন্য জায়গা বানানো, সোজা নয় ব্যাপারটা। তবে আমি খুশি যে, মনবীর অনুশীলনে এসব নিয়ে কাজ করার জন্য তৈরি। গত মরশুমেও ও প্রচুর পরিশ্রম করেছিল ও পারফরম্যান্সও ভাল ছিল ওর। এখন আরও ভাল হয়েছে। আরও ভাল জায়গা তৈরি করতে পারছে, চাপের মুখে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে। কখন দৌড় শুরু করতে হবে, ও খুব ভাল করে জানে। আশা করি ও আরও উন্নতি করবে। কারণ, ওর মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
আশিস রাইকে নিয়ে কী বলবেন?
ওকে নিয়েও আমি খুশি। ও আমাদের স্টাইলটা বুঝতে পারছে। তবে চাপের মুখে ওকে আরও উন্নতি করতে হবে। দল যখন খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করে, তখন বা আক্রমণের সময় ওকে আরও নিখুঁত হতে হবে। তবে এই ছোটখাটো ব্যাপারগুলোতে উন্নতি করা সোজা নয়। অনুশীলনে এগুলো ঠিক করতে হবে আমাকে। ও আমার ধারণাটা বোঝার চেষ্টা করছে। সেটা ওর পক্ষে বা দলের অন্যদের পক্ষে বোঝা সোজা নয়। তবে ও যে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে, তাতে আমি খুশি। ছোটখাটো ব্যাপারগুলো ওকে শুধরে নিতে হবে। তবে আমার বিচারে রাই এখন ভারতের সেরা তিন রাইট ব্যাকদের একজন।
(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google