জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এ বারের হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছেন ভারতীয় ফুটবলাররা (IFA Felicitation)। গোল করা থেকে শুরু করে গোলে প্রত্যক্ষ সাহায্য করা, বেশি পাস ও শট— সব দিক থেকেই এ বার ভারতীয় ফুটবলাররা আগের সাত বারের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তবে একই সঙ্গে আরও একটা কথা স্বীকার করতেই হবে যে, ফুটবলের রাজ্য বাংলার ফুটবলাররাও পাল্লা দিয়ে নিজেদের আরও ভাল ভাবে মেলে ধরেছেন।
শুধু কলকাতার দুই ক্লাবেই নয়, অন্যান্য সব দলেই এ বার বঙ্গ ফুটবলারদের ছড়াছড়ি। সংখ্যায় তাঁরা পঁচিশেরও বেশি এবং অনেকেই সারা দেশের ফুটবলপ্রেমীদের নজর কেড়ে নিয়েছেন। যেমন কলকাতার দুই প্রধানের প্রীতম কোটাল, প্রবীর দাস, শুভাশিস বোস, কিয়ান নাসিরি, হীরা মন্ডল, মহম্মদ রফিক, চেন্নাইন এফসি-র রহিম আলি, জামশেদপুর এফসি-র প্রণয় হালদার, ঋত্বিক দাস, হায়দরাবাদ এফসি-র শৌভিক চক্রবর্তী— এঁরা প্রত্যেকেই যে যাঁর দলের নির্ভরযোগ্য সদস্য হয়ে উঠেছেন।
এ ছাড়াও একঝাঁক বঙ্গজাত ফুটবলার এ বার হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগের বিভিন্ন দলে ছিলেন। বৃহস্পতিবার কলকাতায় তাঁদেরই সন্মান জানাল বাংলার ফুটবল প্রশাসক সংস্থা ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএফএ। রাজ্যের যে ফুটবলাররা দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগে খেলেছেন, তাঁদের এ ভাবে সংবর্ধনা দিতে দেখা যায়নি আর কোনও ফুটবল প্রশাসক সংস্থাকে। এই ভূমিকায় দেশের প্রাচীনতম ফুটবল সংস্থা আইএফএ-কেই পথিকৃৎ হয়ে উঠতে দেখা গেল।
একই মঞ্চে ভারতের বিভিন্ন দলে খেলা বাংলার ২৯জন ফুটবলারকে ডেকে সংবর্ধনা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়াটাও সহজ কাজ নয়। সাতজন বিভিন্ন কারণে এই অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি। শুধু ফুটবলার নয়, হিরো আইএসএলে অংশ নেওয়া বাংলার ম্যাচ অফিসিয়াল ও সহকারী কোচেদেরও সে দিন এই মঞ্চে ডেকেছিল আইএফএ।
এই উদ্যোগে মুগ্ধ প্রত্যেক ফুটবলারই। এটিকে মোহনবাগানের অধিনায়ক প্রীতম কোটাল মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, “এই উদ্যোগটা এর আগে কেউ নেয়নি। এ জন্য আইএফএ-কে এবং এই সংস্থার সচিব জয়দীপদাকে (মুখোপাধ্যায়) অনেক ধন্যবাদ। আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে আইএসএলে বাংলার খেলোয়াড়ের সংখ্যা পঞ্চাশেরও বেশি হবে। দয়া করে বাংলার ফুটবলারদের ওপর ভরসা রাখুন ও তাদের পাশে থাকুন”।
এসসি ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, “এটা যেমন খেলোয়াড়দের জন্য ভাল, তেমনই আইএফএ-র জন্যও ভাল। আমাদের সব ফুটবলারদের পক্ষ থেকে আইএফএ-কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আমরা তাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। অফ সিজনে সব বাঙালি ফুটবলারদের সঙ্গে সবার দেখা হল, তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হল, এই অনুষ্ঠানটা বাংলার ফুটবলারদের উদ্দীপ্ত করবে। আইএফএ-র সঙ্গে ফুটবলারদের দূরত্ব এখন অনেক কমে গিয়েছে, যা বাংলার ফুটবলের পক্ষে খুবই ভাল”। ডার্বি অভিষেকে হ্যাটট্রিকের নায়ক, এটিকে মোহনবাগানের তরুণ স্ট্রাইকার কিয়ান নাসিরি এমন সংবর্ধনা পেয়ে মুগ্ধ। তিনি বলেন, “এত বড় বড় মানুষের মধ্যে থাকতে পেরে আমি খুবই খুশি। এমন একটা অনুষ্ঠানে থাকার সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের। সবাইকে এ জন্য ধন্যবাদ”।
এটিকে মোহনবাগানের আর এক তারকা শুভাশিস বোস বলেন, “এই প্রথম এমন একটা উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এবং আমাদের সন্মানিত করার জন্য আইএফএ-কে ধন্যবাদ। সাত মাস পরে সব ফুটবলারদের সঙ্গে দেখা হল, একসঙ্গে অনেকক্ষণ কাটালাম, খুবই ভাল লাগল”।
এ রকম এক অভিনব অনুষ্ঠান মূলত যাঁর উদ্যোগে, সেই আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের অনেক প্রতিকুলতা আছে। আর্থিক, পরিকাঠামোর দিক দিয়ে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবে আমাদের মানসিকতা অনড়। বাংলার ফুটবলে কিছু করে দেখানোর চেষ্টা আছে আমাদের। আইএসএলে যে ফুটবলাররা খেলেছে বা যে অফিসিয়াল, কোচেরা কাজ করেছেন, তারা সবাই যে আমাদের সদস্য হয়ে গেলেন, এটাই আমাদের কাছে বড় পাওনা। এ রাজ্যের উঠতি খেলোয়াড়দের অনেককেই আমরা সঠিক দিশা দেখাতে পারি না। এঁরা যদি সেই কাজে আমাদের সাহায্য করতে পারে, বাংলার ফুটবলে এর চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না”।
উল্লিখিত ফুটবলাররা ছাড়াও এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন, শেখ সাহিল, সুব্রত পাল, শুভাশিস রায়, শুভম সেন, শঙ্কর রায়, অঙ্কিত মুখার্জি, শুভ ঘোষ, রাহুল পাশোয়ান, দেবজিৎ মজুমদার, সার্থক গলুই, সঞ্জীবন ঘোষ ও জীতেন্দ্র সিং।
(তথ্য ও লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)