জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: হিরো আইএসএল ২০২২-২৩-এর (ISL 2022-23 ATKMB vs CFC) শুরুটা একেবারেই ভাল হল না গতবারের সেমিফাইনালিস্ট এটিকে মোহনবাগানের। মঙ্গলবার ঘরের মাঠে চেন্নাইয়ন এফসি-র কাছে ১-২ হার দিয়ে এ বারের লিগ অভিযান শুরু করল তারা। প্রথমার্ধের গোলে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয়ার্ধে সেই ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি তারা। দ্বিতীয়ার্ধে প্রায় হতোদ্যম হয়ে পড়া এটিকে মোহনবাগানের দূর্বলতা কাজে লাগিয়ে ১৯ মিনিটের মধ্যে দু-দু’টি গোল করে জয় ছিনিয়ে নেয় চেন্নাইয়ন।
২৭ মিনিটে মনবীর সিংয়ের অনবদ্য গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর থেকেই এটিকে মোহনবাগানের গতি ও উদ্যমে ঘাটতি দেখা যায়। দ্বিতীয়ার্ধে যা আরও কমতে দেখা যায়। রক্ষণে বাড়তে থাকা ফাটল কাজে লাগিয়ে আক্রমণে উঠে আদায় করা পেনাল্টি থেকে ৬৪ মিনিটের মাথায় গোল করে সমতা আনেন ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড কুয়ামে কারিকারি। এর ১৯ মিনিট পরে তাঁরই ক্রস থেকে গোল করে দলকে জেতান বাংলা থেকে উঠে আসা ফরোয়ার্ড রহিম আলি।
চেন্নাইয়নের জার্সি গায়ে এ দিন বাংলার চারজন ফুটবলারকে দেখা যায়। গোলে অসাধারণ দক্ষতার প্রমাণ দেন অভিজ্ঞ তারকা দেবজিৎ মজুমদার। একাধিক অবধারিত গোল বাঁচিয়ে এ দিন তিনি দলের হার বাঁচান। রহিম আলি জয়সূচক গোল করেন। নারায়ণ দাস ও সৌরভ দাসও প্রতিপক্ষকে আটকানোর দায়িত্ব নিখুঁত ভাবে পালন করেন। সব মিলিয়ে বলা যায় চেন্নাইনের বঙ্গ ফুটবলাররাই এ দিন হারিয়ে দিল এটিকে মোহনবাগানকে।
১৫ মিনিটের মাথায় চেন্নাইয়ন গোলকিপারের মিসপাস থেকে বল পেয়ে মনবীর বক্সের মধ্যেই আশিককে পাস দিলে তিনি সোজা মাটিঘেঁষা শট নেন গোলে, যা সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকান দেবজিৎ। এর মধ্যে চেন্নাইনও নবম মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল এবং তা থেকে অনিরুদ্ধ থাপা সোজা গোলে শট নেন। কিন্তু তা ব্লক হয়ে যায়। মাঝামাঠের এ পার থেকে ব্যাকহিল করে হুগো বুমৌস বল বাড়ান মনবীরকে। তিনি হাফলাইনের ওপারে ডানদিকে পেট্রাটসকে বল দেন। শেষে গোলের পাসটা ডানদিক থেকে মনবীরকে দেন অস্ট্রেলিয়ানই। এবং বাঁ দিক দিয়ে ওঠা মনবীর বক্সে ঢুকে যখন গোলে কোণাকুনি শট নেন, তখন জিতেশ্বর সিং ছাড়া তাঁকে আটকানোর জায়গায় ছিলেন না প্রতিপক্ষের কোনও ডিফেন্ডারই (১-০)।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে এটিকে মোহনবাগান প্রতিপক্ষকে চাপে রাখা শুরু করলেও মিনিট দশেকের মধ্যে সাময়িক ভাবে খেলা বন্ধ হয়ে যায় স্টেডিয়ামের কিছু আলো নিভে যাওয়ায়। ফলে দুই দলের ফুটবলাররাই আরও কিছুটা বিশ্রাম পেয়ে যান এবং কোচেরাও আরও কৌশল তৈরির সুযোগ পেয়ে যান। এই ‘ব্রেক’ বেশি কাজে লাগে চেন্নাইনেরই। খেলা শুরুর পরই জনি কাউকো বক্সের বাইরে থেকে গোলে জোরালো শট নেন, যা ফের আটকে দেন দেবজিৎ মজুমদার। এর আগে যে আক্রমণে ওঠে এটিকে মোহনবাগান, তা নিষ্ফলা হয় গোলের সামনে ঠিকমতো লোক পৌঁছতে না পারায়। এই সমস্যা পুরো ৯০ মিনিটেই বারবার দেখা যায়।
৬২ মিনিটের মাথায় সে রকমই এক ফাঁকা জায়গা দিয়ে গোলের দিকে যাওয়ার সময় প্রথম আইএসএল ম্যাচ খেলা কুয়ামো কারাকারিকে শারীরিক ভাবে বাধা দেন গোলকিপার বিশাল কয়েথ। নির্দ্বিধায় পেনাল্টি দেন রেফারি এবং পরের মিনিটে তা থেকে সমতা আনেন কারিকারি (১-১)। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার সাত মিনিট আগে বক্সের ডানদিক থেকে কারিকারির অনবদ্য কাট ব্যাকে বল পেয়ে বক্সের ডানদিকে মাথা থেকে দ্বিতীয় পোস্টের নীচ দিয়ে গোলে বল ঢুকিয়ে দেন বঙ্গ-ফরোয়ার্ড রহিম আলি (১-২)। এই সময়ে বক্সে জনাচারেক ডিফেন্ডার থাকা সত্ত্বেও তাঁকে কেউ আটকাতে পারেননি। এই গোলের তিন মিনিট আগেই বক্সের লাইনের মধ্যে চেন্নাইনের সৌরভ দাসের হাতে বল লাগা সত্ত্বেও তা রেফারির চোখ এড়িয়ে যায়। শেষ চার মিনিট বাড়তি সময় পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি এটিকে মোহনবাগান।
এটিকে মোহনবাগান দল: বিশাল কয়েথ (গোল), প্রীতম কোটাল, ব্রেন্ডান হ্যামিল, শুভাশিস বোস, আশিস রাই (লিস্টন কোলাসো), দীপক টাঙরি (ফারদিন আলি মোল্লা), হুগো বুমৌস, জনি কাউকো (অধি), আশিক কুরুনিয়ান, মনবীর সিং, দিমিত্রিয়স পেট্রাটস (কার্ল ম্যাকহিউ)।
(লেখা ও ছবি আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে
জাস্ট দুনিয়ার সঙ্গে গোটা বিশ্বকে রাখুন নিজের পকেটে। Follow Us On: Facebook, Twitter, Google